বিদেশে জমি কিনছে পাঞ্জাবের কৃষকরা
১৪ জানুয়ারি ২০১১পাঞ্জাবের রাজধানী চন্ডিগড়ের অদূরে প্রচুর জমিজমা রয়েছে পুনিত ভালার পরিবারের৷ বংশ পরম্পরায় তাঁরা এই জমির মালিক৷ কিন্তু সম্প্রতি, সেই জমিগুলো ভাগ বাটোয়ারা করার সিদ্ধান্ত নেন শিল্প উদ্যোক্তা ভালা৷ এর জন্য অবশ্য ভালার কোনো আফসোস নেই৷ ভালা বলেন, ‘‘এই জমি থেকে তেমন কিছু পাওয়া যায়না৷ তাই অনেকেই পরামর্শ দিলেন জমিগুলো বিক্রি করে দেওয়ার এবং এই টাকা বিভিন্ন ব্যবসায় এমনকি বিদেশে বিনিয়োগ করার৷ আমি তখন ভাবলাম, এটা একটা ভালো সুযোগ৷ আমরা আমাদের জমিগুলো বিক্রি করে দিয়ে ভালো কোনো ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে পারি৷''
কৃষিকাজ পাঞ্জাবের মানুষের প্রধান পেশা৷ এবং ঐ রাজ্যের অর্থনীতির মেরুদণ্ড৷ ভারতের বাজারের একটা বড় অংশ দখল করে আছে এখানকার কৃষিপণ্য৷ পাঞ্জাবের জমি এখন অনেক দামি৷ কেননা, যদি কোনো কৃষক পাঁচ থেকে ছয় একর জায়গা বিক্রি করেন তাহলে তিনি শত শত এমনকি হাজার হাজার একর জমি বিদেশে কিনতে পারেন৷ এর জন্যই বেশ কিছু সংখ্যক কৃষক তাঁদের নিজেদের প্রচেষ্টায় অস্ট্রেলিয়া এবং ক্যানাডায় চলে গেছেন৷ সেখানে গিয়ে চাষাবাদ শুরু করেছেন৷
খুশওয়ান্ত সিং৷ হোশিয়ারপুরের একজন কৃষক৷ তিনি এ বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করেন এইভাবে, ‘‘ঐ দেশগুলোর অভিবাসন নীতিতে সেখানে জমি কিনে সহজেই বসতি স্থাপন করা যায়৷ যেহেতু জমির দাম বেশি, সেহেতু লোকজন এখানে এক একর জায়গা বিক্রি করে বিদেশে একশ' একর জায়গা কিনতে পারেন৷ আমি মনে করি, প্রকৃতপক্ষে সব মানুষই চায় ভালোভাবে সম্মান নিয়ে জীবনযাপন করতে এবং সেটা যদি বিদেশের মাটিতে হয় - তাহলে আর ক্ষতি কি?''
অস্ট্রেলিয়া আয়তনে ভারতের তিনগুন৷ কিন্তু সেখানে মানুষ রয়েছে মাত্র ২২ মিলিয়ন, যা পাঞ্জাবের লোকসংখ্যার থেকেও কম৷ এছাড়া, অস্ট্রেলিয়ার কৃষিজ জমির প্রায় ৮৫ শতাংশ ব্যবহার করা হয়না৷ আর সেই কারণেই সরকার বিদেশিদের জমি কেনা এবং চাষাবাদ করার জন্য দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে৷
অন্যদিকে, পাঞ্জাবের অন্যতম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মেকানিক্যাল ফার্মিং'এর ওপরে বিশেষ একটি কোর্স চালু করেছে৷ যেখানে শেখানো হচ্ছে পশ্চিমে কীভাবে বিদেশি ফল ও শাকসবজি'র চাষাবাদ করা যায়, সেই সব বিষয়বস্তু৷
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ