ইউরোপীয় পুরস্কার পাচ্ছেন ম্যার্কেল
৩ সেপ্টেম্বর ২০২১চলতি মাসের শেষেই জার্মানিতে সাধারণ নির্বাচন৷ দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর পর ক্ষমতাকেন্দ্র থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ আগামী সরকার গঠিত হওয়া পর্যন্ত তিনি অবশ্য প্রথা অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করে যাবেন৷ এখন থেকেই তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের মূল্যায়ন শুরু হয়ে গেছে৷ তার আমলেই জার্মানিতে সামরিক বাহিনীতে তরুণদের বাধ্যতামূলক কার্যক্রম শেষ হয়েছে৷ পরমাণু ও জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানি পুরোপুরি ত্যাগ করে ভবিষ্যতে পরিবেশবান্ধব জ্বালানির পথে যাত্রাও শুরু হয়েছে৷ এছাড়া সমলিঙ্গের বিবাহ ও সদ্যোজাত সন্তানের দেখাশোনার জন্য পিতাদের জন্য ভাতা ও ছুটির মতো বেশ কিছু প্রগতিশীল সিদ্ধান্তও সমাজের উপর প্রভাব ফেলছে৷
তবে আন্তর্জাতিক আঙিনায় তার দৃঢ় অবস্থান গোটা বিশ্বে সমীহ আদায় করেছে৷ ইউরোপের সংকট সামলানো ও স্বার্থ রক্ষায় তার উদ্যোগ বার বার নজর কেড়েছে৷ বিশেষ করে ২০০৮ সালে বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকটের সময়ে তিনি জার্মানির মানুষের সঞ্চয় নিরাপদ হিসেবে ঘোষণা করে যথেষ্ট আস্থা অর্জন করেছিলেন৷ ঋণ সংকট থেকে ইউরোপীয় অভিন্ন মুদ্রা ইউরোকে রক্ষার ক্ষেত্রেও তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছিলেন৷ বাভেরিয়ার মুখ্যমন্ত্রী মার্কুস স্যোডার ম্যার্কলের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘‘আপনাকে কঠিন পরিস্থিতিতে দেশের হাল ধরতে হয়েছে৷ কোনো নির্বাচনি কর্মসূচিতে সেসব সংকট সামলানোর উল্লেখ ছিল না৷ রাতারাতি সেগুলি এসেছে৷ আপনাকে ভালোভাবে সেসব সামলাতে হয়েছে৷ আপনি ভালোভাবেই আমাদের দেশকে রক্ষা করেছেন৷’’
বিদায়ের আগেই ম্যার্কেল ইউরোপীয় সমন্বয় প্রক্রিয়ার প্রতি দীর্ঘ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে স্পেনের কার্লোস দ্য ফাইভ পুরস্কার পাচ্ছেন৷ পুরস্কারের প্রশস্তিপত্রে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ইউরোপের কৌশলগত অবস্থানের প্রতি তার সমর্থনেরও উল্লেখ থাকছে৷ স্পেনের পশ্চিমে কাসেরেস প্রদেশের ইউস্টে ফাউন্ডেশনের ইউরোপীয় ও ইবেরো-অ্যামেরিকান সোসাইটি ১৯৯৫ সাল থেকে ইউরোপীয় সমন্বয় প্রক্রিয়ায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে৷
সাহসি পদক্ষেপ নিতে গিয়ে ম্যার্কেলের মতো পোড়খাওয়া রাজনীতিককেও সমস্যায় পড়তে হয়েছে৷ ২০১৫ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের জের ধরে শরণার্থীদের ঢল নামার সময়ে ম্যার্কেল তাদের জার্মানিতে স্বাগত জানিয়েছেন৷ ‘আমরা পারবো’ স্লোগান মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রশংসা কুড়ালেও জার্মানি তথা ইউরোপে এত সংখ্যক শরণার্থী গ্রহণের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ দেখা গেছে৷ এবার আফগানিস্তান সংকটের সময়েও সেই মনোভাব দেখা যাচ্ছে৷ আফগানশরণার্থীদের তুরস্কেই আটকে রাখতে ইউরোপের তৎপরতা বাড়ছে৷
ম্যার্কেল নিজে অসমাপ্ত কাজের উল্লেখ করেছেন৷ তার আমলে জার্মানি ডিজিটাল প্রযুক্তি সব স্তরে ছড়িয়ে দিতে যথেষ্ট সাফল্য পায়নি৷ করোনা সংকটের সময়ে স্থানীয় স্বাস্থ্য দফতর ফ্যাক্স যন্ত্রের উপর নির্ভর করায় সেই দৈন্য আরো স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এপি)