বিতর্ক নিয়েই স্কুলে বাধ্যতামূলক মাস্ক
১৩ আগস্ট ২০২০১৫ বছর বয়েসি একাদশ শ্রেণির ছাত্র ক্রিস্টোফার নিয়াদির হাইস্কুলে প্রথমদিন৷ শিক্ষকেরা তাকে এখন থেকে আপনি করে বলবেন৷ দুই বছর পরে সে হাইস্কুল ফাইনাল পরীক্ষা দেবে৷ দুই বন্ধুসহ ক্রিস্টোফার এক ঝলমলে সুন্দর দিনে অনেক প্রত্যাশা নিয়ে বন-এ স্কুলের গেট দিয়ে ঢুকছে যাচ্ছে৷
ঠিক তার আগেই গেটের সামনে দাড়িয়ে সাদা মাস্কটি পরে নেয় ক্রিস্টোফার আর ওর বন্ধুরা৷ এই মাস্ক স্কুলে সারাদিনই ওদের সবাইকে পরে থাকতে হবে৷ করোনার বিস্তার রোধে জার্মানির নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যে প্রায় ২০ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য স্কুলের মাঠ, হলরুম এবং শ্রেণিকক্ষসহ পুরো স্কুল এলাকা জুড়েইমাস্ক পরা এখন বাধ্যতামূলক৷
ক্রিস্টোফার জানালো, ‘‘সারাদিন নাক মুখ ঢেকে রাখা খুবই বিরক্তিকর, আমি ঠিকমতো শ্বাস নিতে পারছি না৷ লেখাপড়া করা কঠিন, মনোযোগ দিতে পারছি না ৷’’ কমপক্ষে এ মাসের শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মাস্ক পরতে হবে ৷ ক্রিস্টোফার নিয়াদির মতো আরো অনেক শিক্ষার্থী আশা করছে যে অন্তত ক্লাস চলাকালীন সময়ে তারা মাস্ক খুলে রাখতে পারবে ৷
তবে স্কুলের আরেক শিক্ষার্থী ১৬ বছর বয়সি এমিলি গ্যারহার্ড বলছে , ‘‘আমি স্কুলে মাঠে মাস্ক পরে থাকতে পারি, কোনো অসুবিধা নেই ৷ মাস্ক পরে অন্যদের পেছনে হাসাহাসি করা যায়, কথা বলার সময় একে অপরকে দেখা যায়, ভালো লাগে৷ তবে দূরত্ব বজায় রাখা এবং স্কুলে ঢোকার আগে হাত দুটো ভালো করে জীবাণুমুক্ত করে নেয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৷’’
স্কুলের অধ্যক্ষ উরজুলা ড্রেসার বলেন, ‘‘সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে বিভিন্ন ক্লাসের জন্য আলাদা প্রবেশদ্বার, নিয়মিত শ্রেণিকক্ষের জানালা খোলা এবং অবশ্যই স্কুল ও মাঠে সামাজিক দূরত্ব বাজায় রাখার ব্যবস্থা নিয়েছি ৷’’ তিনি ডয়চে ভেলেকে আরো জানান, কর্তৃপক্ষের মাস্ক বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত মাত্র কয়েক দিন আগে তারা পেয়েছে৷ জার্মানির ১৬টি রাজ্যের মধ্যে শুধুমাত্র নর্থরাইন ওয়েস্টফালিয়া এই পদক্ষেপ নিয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি হতবাক হয়ে গেছি, আমি ভাবতেই পারিনা কি করে সরাক্ষণ মানুষের পক্ষে মাস্ক পরে থাকা সম্ভব৷ বাস বা ট্রেনে যাতায়াতে সময় ভেতরে মাস্ক পরলেও অন্তত স্টপেজে মাস্কটা অল্প সময়ের জন্য খুলতে সম্ভব কিন্তু স্কুলে সারাদিনই মাস্ক পরে থাকতে হবে৷’’ প্রচণ্ড গরমে মাস্ক শিক্ষার্থীদের জন্য কতটা কাজে আসবে তা বলা মুশকিল হলেও সংক্রমণের চেয়ে সুরক্ষা ভালো বলে মনে করেন অধ্যক্ষ৷
কেউ মাস্ক পরতে না চাইলে তার প্রতি কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এমনকি স্কুল থেকে বহিস্কার পর্যন্ত করা হবে বলে জানান রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী৷ যদিও করোনার বিধি নিষেধগুলো জার্মানির রাজ্য, শহর এবং স্কুলভেদে আলাদা৷
পেটার হিলে/এনএস/কেএম