1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিজ্ঞানে নোবেল : কল্পবিজ্ঞানকে বাড়াতে হবে কল্পনাশক্তি

১০ অক্টোবর ২০১১

পদার্থবিদ্যা, চিকিৎসা আর রসায়ন৷ নোবেল পুরস্কারের ঘোষণায় সর্বাগ্রে এই নামগুলি শোনা যায়৷ কারণটাও স্পষ্ট, বিজ্ঞানের অগ্রগতির পথ প্রশস্ত করে এই পুরস্কার৷

https://p.dw.com/p/12omz
ছবি: picture-alliance/dpa

পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং চিকিৎসা৷ এই তিন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর নোবেল পুরস্কারের ঘোষণায় দেখা গেল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, লুক্সেমবুর্গ, অস্ট্রেলিয়া আর ইজরায়েলের নাম৷ প্রথমে প্রাপকদের নামগুলো বলা যাক৷ তেসরা অক্টোবর শোনা গেল চিকিৎসা শাস্ত্রে যুগ্মভাবে নোবেল বিজয়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রুস বয়েটলার, লুক্সেমবুর্গের জুলস হফমান আর কানাডার ব়্যাল্ফ স্টাইনমানের নামগুলি৷ এরপর চৌঠা অক্টোবর শোনা গেল পদার্থবিদ্যায় নোবেলজয়ী দুই মার্কিন বিজ্ঞানী, সল পার্লমাটার এবং অ্যাডাম রিস-এর নাম, সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানী ব্রায়ান স্মিট৷ এই তিনজনেই এ বছরের পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল জিতেছেন৷ আর পাঁচ তারিখ বুধবার নোবেল কমিটি জানাল এ বছরের রসায়নে নোবেলজয়ী বিজ্ঞানীর নাম, যিনি ইসরায়েলের ড্যানিয়েল সেশ্টমান৷

চিকিৎসার নোবেল

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রুস বয়েটলার, লুক্সেমবুর্গের জুলস হফমান আর কানাডার ব়্যাল্ফ স্টাইনমান৷ এ বছরের নোবেল পুরস্কারের ঘোষণায় শুরুতে শোনা গেছে এই তিন পথিকৃতের নাম৷ চিকিৎসার ভবিষ্যত পন্থা নির্দেশ করেছেন তাঁরা সকলেই৷ বিশেষ করে মানবশরীরে ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতার বিশ্লেষণে তাঁরা যে গবেষণা করেছেন, ভবিষ্যতের চিকিৎসাক্ষেত্রে তা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ভূমিকা নেবে৷ এই তিন বিজ্ঞানীর মধ্যে কানাডার ব়্যাল্ফ স্টাইনমানের মৃত্যু হয় নোবেল পুরস্কার ঘোষণার মাত্র তিনদিন আগে৷ সচরাচর নোবেল কমিটির নিয়ম হল, কোন পুরস্কার প্রাপকের মৃত্যু হলে, তাঁকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়৷ কিন্তু কানাডার ব়্যাল্ফ স্টাইনমানের নাম যেহেতু নোবেল কমিটি বহু ভাবনাচিন্তা করে নির্বাচন করেছে, সেক্ষেত্রে তাঁর পুরস্কার বজায় থাকছে বলে জানিয়ে দেয় নোবেল কমিটি৷ প্রসঙ্গত, কানাডার ব়্যাল্ফ স্টাইনমান যে গবেষণাটি করছিলেন, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইমিউনিটির অন্যান্য দিকগুলি নিয়ে৷ কারণ, তিনি মানবশরীরের সেই কোষগুলি আবিস্কার করতে পেরেছিলেন, যারা ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধক কোষ৷ যাদের কাজ হল, বাইরে থেকে কোন সংক্রমণ মানবদেহে হামলা চালাতে চেষ্টা করলে, তাদেরকে চিহ্নিত করে এই বিশেষ ডাইড্রান্টিক সেল বা প্রতিরোধক কোষ, সেসব হামলাকারী জীবাণুদের ধ্বংস করতে পারে৷ স্টাইনমান চলে গেলেন ঠিকই, কিন্তু এই গবেষণা পরবর্তীতে বহু কাজে লাগবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে৷ জানিয়েছে নোবেল পুরস্কারের জুরিবোর্ড৷

Nobelpreisträger 2011 Physik FLASH-GALERIE
পদার্থবিদ্যায় নোবেলজয়ী সল পার্লমাটার (বামে), অ্যাডাম রিস এবং ব্রায়ান স্মিটছবি: picture alliance/dpa/DW-Montage

পদার্থবিদ্যার তিন বিজ্ঞানী

মহাবিশ্বের পরিধি কীভাবে বেড়ে চলেছে, তা নিয়েই গবেষণা করেছেন দুই মার্কিন বিজ্ঞানী সল পার্লমাটার এবং অ্যাডাম রিস৷ তাঁদের আরেক সহযোগী অস্ট্রেলিয়ার ব্রায়ান স্মিট৷ গবেষণার বিষয় ছিল ‘টাইপ ওয়ান এ সুপারনোভা'৷ এই তিন বিজ্ঞানীর মধ্যে তাঁদের নোবেল বিজয়ের অর্থ, ইউরোর হিসাবে যা ১.০৮ মিলিয়ন ইউরো, তা ভাগাভাগি হবে৷ ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার প্রফেসর সল পার্লমাটার পাবেন মোট অর্থের অর্ধেক৷ বাকি অর্থ পাবেন অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ব্রায়ান স্মিট এবং জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির স্পেস টেলিস্কোপ সায়েন্স ইন্সটিটিউটের প্রফেসর অ্যাডাম রিস৷ ১৯৮৮ সালে শুরু হয়েছিল সুপারনোভা কসমোলজি প্রজেক্ট৷ যে প্রকল্পের নেতৃত্ব দেন অধ্যাপক পার্লামাটার৷ তাঁর দুই নোবেল বিজয়ী সঙ্গী বিজ্ঞানী ব্রায়ান স্মিট এবং অধ্যাপক অ্যাডাম রিস, যাঁরা ১৯৯৪ সালে ‘হাই-জেড সুপারনোভা সার্চ টিম' এর সঙ্গে যোগ দেন, তাঁরা দু'জন পাবেন নোবেল পুরস্কারের অর্থের বাকি অর্ধাংশ৷ এই তিন বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানীর কর্মধারা নিয়ে কিছু বিশেষ সংযোজন করা যেতে পারে৷ আসলে মহাবিশ্বের প্রকৃত স্বরূপ, যাকিনা মানুষের কাছে সবসময়েই এক অসীম জিজ্ঞাসা, বৈজ্ঞানিক পন্থায় তার নির্দেশনা দিতে পেরেছেন এই তিন বিজ্ঞানী৷ মহাবিশ্বের আয়তন বিশাল হলেও, তার যে ব্যাপ্তি এবং প্রতিনিয়ত আরও দ্রুতগতিতে তার ছড়িয়ে পড়া, এ বিষয়ে তথ্য সরবরাহ করেছেন এঁরা৷ যেসব আবার মৌলিক তথ্য৷ সুতরাং, এই বিশ্বখ্যাত পুরস্কারের এঁরাই আসল হকদার৷ বিশেষজ্ঞরা সেরকমটাই বলছেন৷

Daniel Shechtman Nobelpreisträger Chemie 2011 Flash-Galerie
রসায়নে নোবেলজয়ী ডিনিয়েল সেশ্টমানছবি: picture alliance/dpa

রসায়নে ইসরায়েলের সেশ্টমান

রসায়নের জগতে মোজাইকের মত রাসায়নিক চেহারা কী হতে পারে? বিশেষ করে অণুর গঠনের মধ্য কী ঘটানো সম্ভব কোন পরিবর্তন? ইসরায়েলের এই প্রতিভাবান বিজ্ঞানী সেশ্টমান তেমনটাই করে দেখিয়েছেন৷ এবং বিস্মিত করেছেন সকলকে৷ নোবেল কমিটি জানিয়েছে, সেশ্টম্যান ‘কোয়াসিক্রিস্ট্যাল' আবিষ্কার ও তার রহস্য উদ্ঘাটন করেছেন৷ ‘কোয়াসিক্রিস্ট্যাল' বা  অণুর অসাধারণ বিন্যাস উদ্ভাবন করেছেন তিনি৷  যা দেখতে অত্যন্ত জটিল মনে হলেও এর মধ্যে রয়েছে সুনির্দিষ্ট নিয়মের এক কাঠামো৷ প্রকৃতিতে খনিজ পদার্থের মধ্যে ‘কোয়াসিক্রিস্ট্যাল' মিলেছে৷ এখন গবেষণাগারের মধ্যেও কৃত্রিমভাবে তৈরি করা সম্ভব হয়েছে এই ‘কোয়াসিক্রিস্ট্যাল'৷ বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, অণুর এমন অভিনব বাঁধনের কারণে কঠিন পদার্থ হিসেবে এর ব্যবহারিক দিক প্রচুর৷ রান্না করার জন্য অতিরিক্ত চাপ ও তাপ সহ্য করতে পারবে এমন ফ্রাইয়িং প্যান যেমন এ বস্তু দিয়ে তৈরি করা যাবে, তেমনই আবার ডিজেল এঞ্জিনের তৈরির জন্যও কাজে আসবে এই বিশেষ শক্তিশালী ক্রিস্টাল৷

বিজ্ঞান ক্রমশ সব অসম্ভবকেই সম্ভব করে তুলছে৷ কল্পবিজ্ঞান কাহিনীকে তাই আরও বাড়াতে হবে তার কল্পনা শক্তি৷

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য