বিক্ষোভে মার খাচ্ছে পর্যটন
৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ঠান্ডা, শৈত্যপ্রবাহ উপেক্ষা করে দেশ জুড়ে এখনও চলছে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এবং এনআরসি-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ৷ পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৫ জনের৷ যার মধ্যে শুধু উত্তরপ্রদেশেই ১৯৷ উত্তপ্ত ভারতে আসতে ভয় পাচ্ছেন পর্যটকেরা৷ সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, ডিসেম্বরে শুধু তাজমহল আসাই বাতিল করেছেন প্রায় দুই লাখ পর্যটক৷ যার অধিকাংশই বিদেশি৷ তাজমহলের দায়িত্বপ্রাপ্ত আগ্রা পুলিশের আধিকারিক দীনেশ কুমার সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ''গত বছরের তুলনায় এ বছর ডিসেম্বরে পর্যটক কমেছে অন্তত ৬০ শতাংশ৷'' তিনি আরও জানিয়েছেন, বহু পর্যটক তাঁদের হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে পরিস্থিতি জানতে চাইছেন৷ আশ্বস্ত করা হলেও শেষ পর্যন্ত তাঁরা আসছেন না৷
অক্টোবর-নভেম্বর মাস থেকে মার্চ পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ বিদেশি পর্যটক আসেন ভারতে৷ ভারতীয় পর্যটকেরাও এ সময়ে বেড়াতে যান দেশের বিভিন্ন প্রান্তে৷ এর মধ্যে একটা বড় অংশের বিদেশি পর্যটক আসেন পৃথিবীর অন্যতম আশ্চর্য তাজমহল দেখতে৷ দিল্লি, আগ্রা, রাজস্থান এ সময় ভরে থাকে পর্যটকে৷ কিন্তু এ বছর সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ এবং পুলিশি অভিযানের ফলে ধস নেমেছে পর্যটন ব্যবসায়৷ দিল্লিতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অস্ট্রেলিয়ার পর্যটকের কথায়, ''আগ্রা যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল৷ তাজমহল আর ফতেপুর সিক্রি দেখতেই এত দূর এসেছিলাম৷ কিন্তু যে ভাবে সর্বত্র ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, ১৪৪ ধারা জারি করা হচ্ছে, তাতে যেতে ভয় পাচ্ছি৷ দিল্লি থেকেই ফিরে যাচ্ছি দেশে৷''
পর্যটন ব্যবসায়ী শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ''শুধু ডিসেম্বরেই ব্যবসায় ক্ষতি হয়েছে ৩০ শতাংশ৷ উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি তো বটেই কলকাতাতেও আসতে চাইছেন না বিদেশি পর্যটকেরা৷ দেশের পর্যটকেরাও শেষ মুহূর্তে বেড়ানো বাতিল করছেন৷ অথচ হোটেল, গাড়ি সমস্ত বুক করা হয়ে গিয়েছে৷ কী ভাবে সে টাকা ফেরত আসবে বুঝতে পারছি না৷''
বস্তুত, সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে দেশ জুড়ে প্রতিবাদ এবং তা ঘিরে হিংসাত্মক সংঘর্ষের পর অন্তত ১০টি দেশ নাগরিকদের জন্য পর্যটন অ্যাডভাইসারি জারি করেছে৷ যাতে বলা হয়েছে, সম্ভব হলে ভারতে বেড়াতে না যাওয়াই ভাল৷
পর্যটন মন্ত্রকের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি৷ তবে এ বছর পর্যটন যে গত বছরের চেয়ে কমেছে, সে কথা মেনে নিচ্ছেন অনেকেই৷