বিএনপির পাঁচ নেতা কারাগারে
৯ নভেম্বর ২০১৩গ্রেপ্তারকৃত শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে হরতালে নাশকতার ষড়যন্ত্র এবং উস্কানির অভিযোগ আনা হয়েছে৷ তাদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে রবিবার থেকে ডাকা বিএনপির টানা তিন দিনের হরতাল বাড়িয়ে চার দিন করা হয়েছে৷ আর আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, সহিংসতাকারীরা যত বড় নেতাই হোন না কেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে৷
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতে গোয়েন্দা পুলিশ প্রথমে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, এম কে আনোয়ার এবং ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াকে আটক করে৷ এরপর গভীর রাতে আটক করা হয় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু এবং বিশেষ সহকারি শিমুল বিশ্বাসকে৷ এই পাঁচ জনকে রাজধানীর মতিঝিল থানার দু'টি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে৷ গোয়েন্দা বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, তাদের বিরুদ্ধে হারতালে গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নি সংযোগ এবং নাশকতার অভিযোগ আনা হয়েছে৷ গত পাঁচই নভেম্বর মামলা দু'টি দায়ের করা হয়৷
বিএনপির এই পাঁচ নেতাকে শনিবার বিকেলে আদালতে হাজির করে দুই মামলায় প্রত্যেকের ২০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানায় পুলিশ৷ আদালত জামিনের আবেদন নাকচ করে বৃহস্পতিবার রিমান্ড আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করে তাদের কারাগারে পঠিয়েছেন৷
শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গ্রেপ্তারের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারের পতনের শেষ সাইরেন বেজে উঠেছে৷ তিনি বলেন, ‘‘গ্রেফতার আর নির্যাতন চালিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবেনা৷'' তাই তিনি ৭২ ঘণ্টার হরতাল বাড়িয়ে ৮৪ ঘণ্টার কথা জানান৷ রিজভী অভিযোগ করেছেন সারা দেশেই ব্যাপক ধরপাকড় চালানো হচ্ছে৷ তিনি নিজেও পুলিশের হুমকির মুখে রয়েছেন৷
এদিকে, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম হানিফ বলেছেন, ‘‘সহিংসতাকারী হলে তিনি যত বড় নেতাই হোন না কেন তাকে আইনের আওতায় আনা হবে৷ যাদের নির্দেশে দেশের এবং সাধারণ মানুষের সম্পদের ক্ষতি হয়, সাধারণ মানুষের প্রাণ যায় তারা আইনের উর্ধ্বে থাকতে পারেন না৷
আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘‘বিএনপির পাঁচ নেতাকে আটক করতে সরকার বাধ্য হয়েছে৷ তারা দাবি আদায়ের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছেন৷ তাদের ডাকা অবৈধ হারতাল প্রতিরোধে সাধারণ মানুষকে নিয়ে আওয়ামী লীগ মাঠে থাকবে৷''
তবে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, ‘‘কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া বিরোধী দলের নেতাদের গ্রেফতার করা মানবাধিকারের লঙ্ঘন৷ বিরোধী দলের অনুসারী হলেই সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা যায়না৷''
সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে, বিএনপির পাঁচ নেতাকে গ্রেফতারের পর রাজধানীতে পুলিশের ব্যাপক তল্লাশী অভিযান চলছে৷ অভিযানের মুখে বিএনপির অধিকাংশ সিনিয়র নেতা আত্মগোপনে চলে গেছেন৷ তবে তাদের গ্রেফতারে প্রতিবাদে রাজধানীতে বাসে আগুন এবং নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জ ও কবির হাটে স্থানীয় বিএনপির ডাকে শনিবার হরতাল পালিত হয়েছে৷
সংবাদ মাধ্যমে পঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘‘যেকোন মূল্যে একতরফা নির্বাচন রুখে দেয়া হবে৷'' তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘সরকার একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে একদলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র করছে৷''