বিএনপির নরম কর্মসূচি
১২ আগস্ট ২০১৪মঙ্গলবার দুপরে বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় বিরোধী জোটের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর৷ এই কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে ১৬ই আগস্ট ঢাকাসহ সারা দেশের জেলা এবং উপজেলায় কলো পতাকা মিছিল৷ সম্প্রচার নীতিমালার প্রতিবাদে ১৯শে আগস্ট রাজধানীর সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে প্রতিবাদ সমাবেশ৷ শুধু তাই নয়, ঐ দিন ঢাকার বাইরে সারা দেশে মহানগর ও জেলা পর্যায়ে প্রতিবাদ সমাবেশও অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে তারা৷
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ অন্যান্য দাবিতে ২১ থেকে ৩১শে আগস্ট ২০-দলীয় জোটের উদ্যোগে জেলা ও মহানগরে গণসংযোগ করবেন নেতারা৷
এছাড়া আগামী ১লা সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে৷ এ সব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ৩১শে আগস্ট আলোচনাসভা, ১লা সেপ্টেম্বর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন, জিয়ার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন ও বিকেলে প্রামাণ্য আলোকচিত্র প্রদর্শনী৷ আর ২রা সেপ্টেম্বর থাকছে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রা৷
কর্মসূচি ঘোষণার পর মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আমরা আশা করছি, জোটের কর্মসূচিতে সরকার কোনোভাবে বাধা দেবে না৷'' তিনি বলেন, ‘‘আমরা নির্দলীয় সরকারের অধীনে দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের পাশাপাশি জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে আন্দোলন করছি৷''
৫ই জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনের পর বিএনপি জোট নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগাম নির্বাচনের দাবি জানালেও সরকারের পক্ষ থেকে তা বরাবরই প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে৷ দাবির বিষয়ে সরকারের এই উপেক্ষার মধ্যেই বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া গত রোববার দলের স্থায়ী কমিটি এবং সোমবার রাতে জোট নেতাদের সঙ্গে বসে আন্দোলনের কর্মসূচি চূড়ান্ত করেন৷
সোমবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে জোটের বৈঠকের পর ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ নরম কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলন শুরু হবে৷ এবং পর্যায়ক্রমে সেই কর্মসূচি কঠোর হবে৷''
নরম কর্মসূচির প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বিএনপি চায় শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করতে৷ জনদুর্ভোগ বাড়ে এমন কোনো আন্দোলন করতে চান না তাঁরা৷ তবে সরকার যদি এ সব দাবির প্রতি শেষ পর্যন্ত অনমনীয় থাকে তাহলে ধীরে ধীরে আন্দোলন কঠোর করা হবে৷''
তিনি বলেন, ‘‘যেসব কর্মসূচি দেয়া হয়েছে তার মধ্য দিয়ে দেশের মানুষকে আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হবে৷ গণসংযোগের মাধ্যমে সরকার বিরোধী আন্দোলনে মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ানো হবে৷''
শামসুজ্জামান দুদুর দাবি, ‘‘দেশের মানুষ এই সরকারকে চায় না৷ তারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে আছে৷ তাই দেশের মানুষকে সম্পৃক্ত করেই আন্দোলনকে চূড়ান্ত পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়া হবে৷''
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপিকে পাঁচ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলছেন৷ তাঁদের কথা, এই মুহূর্তে কোনো ধরনের আন্দোলনে জনগণ সাড়া দেবে না৷