বার্লিন প্রাচীর পতনের ২০তম বছরে সংবর্ধিত কোল, গর্বাচভ ও বুশ
১ নভেম্বর ২০০৯বার্লিনে তাঁদেরকে সাদর অভ্যর্থনা জানিয়ে, জার্মানির বর্তমান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল জার্মানির পুনরেকত্রীকরণে ভূমিকা রাখার জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন৷ প্রাক্তন চ্যান্সেলর হেলমুট কোল বলেন, ‘‘জার্মান ইতিহাসে গর্ব করার জন্য তেমন কিছু নেই৷ তবে জার্মানির পুনরেকত্রীকরণ নিয়েই শুধুমাত্র গর্ব করা যায়৷ এমন একটি দিনে পুনরেত্রীকরণ নিয়ে আমি যে সত্যিই গর্বিত - একথা ছাড়া আমার আর কিছুই বলার নেই৷'' অনুষ্ঠানে জার্মান প্রেসিডেন্ট হর্স্ট কোয়েলার বলেন, ‘‘বিভিন্ন জাতির মধ্যে কিছু দেশপ্রেমিক জন্ম নেন যাঁরা অন্যের দেশকেও সম্মান করতে জানেন৷ এই তিনজনই সেধরনের অতীব মহান ব্যক্তিত্ব৷'' কোয়েলার বলেন, ‘‘তাঁদেরকে আমি জার্মান নাগরিকদের পক্ষ থেকে এবং এমনকি ইউরোপের সকল জাতির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই৷'' ইউরোপীয় নিরাপত্তা নীতির জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং রাশিয়ার মধ্যে নিবিড় আলোচনার জন্য এটা একটা মোক্ষম সময় বলে উল্লেখ করেন কোয়েলার৷
উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালের ৯ নভেম্বর পূর্ব জার্মানির নেতারা বার্লিন প্রাচীর খুলে দেন৷ এর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই জার্মানির কমিউনিস্ট শাসন মুখ থুবড়ে পড়ে৷ বছর না ঘুরতেই দুই জার্মানি মিলেমিশে গঠিত হয় একক রাষ্ট্র৷ তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের সমর্থন নিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর কোল কমিউনিস্ট পূর্ব জার্মানিকে অন্যান্য অংশের সাথে একীভূত করার জন্য গর্বাচভের সাথে সমঝোতা করেছিলেন৷ জার্মানির ইতিহাসের স্মরণীয় এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার কনরাড আডেনাওয়ার ফাউন্ডেশন আয়োজন করে এই তিন অগ্রনায়কের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান৷
বার্লিন থিয়েটার হলে অনুষ্ঠিত স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে মিলিত হন সাবেক তিন বিশ্ব নেতা৷ কনরাড আডেনাওয়ার ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ব্যার্নার্ড ফোগেল বলেন, ‘‘এই তিন ব্যক্তিত্ব দৃশ্যত অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলেন৷ আমরা সেজন্য মিখাইল গর্বাচভ, জর্জ বুশ এবং হেলমুট কোলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই৷'' তিনি বলেন, ‘‘সাবেক রুশ নেতারা কমিউনিজমের পতন ঠেকাতে যেখানে সাঁজোয়া যান পাঠাতেন, সেখানে গর্বাচভ সেগুলোকে থামিয়ে দিয়েছিলেন৷''
তিন নেতাই ঐতিহাসিক বার্লিন প্রাচীর পতনে সাধারণ মানুষের সমর্থন এবং সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি তাঁদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন৷ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রায় দুই হাজার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব৷ তাঁদের মধ্যে বিশেষ করে তৎকালীন পোলিশ প্রধানমন্ত্রী টাডয়েশ মাসোভিকি এবং হাঙ্গেরির সাবেক প্রধানমন্ত্রী মিক্লোস নেমেথ উল্লেখযোগ্য৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়