বার্লিন চায়, গ্রিস ইউরোজোনে থাকুক
৫ জানুয়ারি ২০১৫পত্রিকাটি সূচনায় শুধু জানিয়েছিল, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল নাকি এখন বিশ্বাস করেন যে, গ্রিস যদি ইউরোজোন এলাকা থেকে বিদায় নেয়, তাহলে ইউরো এলাকার তা সামলে নেওয়ার ক্ষমতা আছে৷
পত্রিকার রিপোর্টে ছিল, চ্যান্সেলর ও তাঁর অর্থমন্ত্রী ভোলফগাং শয়েবলে, উভয়েই বিশ্বাস করেন যে, ২০১২ সালে ইউরো এলাকার সংকট যখন চরমে, সে'যাবৎ ইউরোজোনে যে সব সংস্কার সাধিত হয়েছে, তা-তে গ্রিসের ইউরোজোন ত্যাগ সামাল দেওয়া সম্ভব৷
সেই সব সংস্কারের মধ্যে আছে ৫০০ বিলিয়ন ইউরো পুঁজির ইউরোপিয়ান স্টেবিলিটি মেকানিজম বা ইএসএম, বিপদগ্রস্ত ইউরো দেশগুলি যে তহবিল থেকে ঋণ পেতে পারে৷ ‘‘স্পিগেল''-এর রিপোর্ট বলছে, ইএসএম থাকার ফলে আয়ারল্যান্ড কিংবা পর্তুগালের মতো দেশ, যারা গ্রিসের মতোই সংকটকালীন সাহায্য পেয়েছে, তারা সহজে ইউরো এলাকা পরিত্যাগ করবে না৷
গ্রিসে নির্বাচন
ওদিকে গ্রিসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অচলাবস্থার পর আগামী ২৫শে জানুয়ারি নতুন সংসদীয় নির্বাচন ডাকা হয়েছে, যে নির্বাচনে মুখ্য সাফল্যের সম্ভাবনা উগ্র বামপন্থি সিরিজা দলের, যাদের তরুণ নেতা আলেক্সিস সিপ্রাস ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন যে, জিতলে পরে তিনি একাধিক আর্থিক সংস্কার প্রত্যাহার করবেন এবং গ্রিসের সরকারি ঋণের একাংশ বাতিল করার চেষ্টা করবেন৷
জার্মান এবং অপরাপর ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যমের মতে বার্লিন থেকে পরোক্ষভাবে গ্রিসের হবু নেতার উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে৷ কিন্তু তার একটা ফল হয়েছে এই যে, সোমবার ইউরো-র বিনিময়মূল্য গত ন'বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছায়: ১ ডলার ১৮ সেন্ট৷ ওদিকে গ্রিসের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইয়র্গস পাপান্দ্রেউ যে নির্বাচনের তিন সপ্তাহ আগে একটা নতুন দল গঠন করে ফেললেন, এ সবই কিন্তু গ্রিসকে ইউরোজোনে রাখার পরিকল্পনা বা প্রচেষ্টার অঙ্গ বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে৷
গাব্রিয়েলের ব্যাখ্যা
এবার জার্মানির উপ-চ্যান্সেলর, অর্থনীতি মন্ত্রী এবং সামাজিক গণতন্ত্রী দলের নেতা জিগমার গাব্রিয়েল স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, ‘‘জার্মান সরকার, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সেই সঙ্গে গ্রিক সরকারের লক্ষ্য হলো গ্রিসকে ইউরোজোনে রাখা৷ এছাড়া কোনো পরিকল্পনা নেই কিংবা ছিল না৷'' অপরদিকে ‘‘আমাদের ব্ল্যাকমেল করা চলবে না'' এবং ‘‘আমরা প্রত্যাশা করি যে, গ্রিক সরকার, যে-ই তার নেতা হন না কেন, ইইউ-এর সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিগুলি মেনে চলবে৷'' হ্যানোভার আলগেমাইনে সাইটুং পত্রিকার সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন গাব্রিয়েল৷
প্রসঙ্গত, ঋণ সংকটে গ্রিসের ‘‘বেইলআউট'' বা ত্রাণের জন্য সর্বসাকুল্যে ২৪০ বিলিয়ন ইউরো প্রদান করা হয়েছে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল, এই ‘‘ট্রোইকা'' বা ত্রয়ীর পক্ষ থেকে৷ ইউরোপের বৃহত্তম অর্থানীতি হিসেবে জার্মানি অবশ্যই এই ‘‘বেইলআউটে'' একটা বড় ভূমিকা রেখেছে৷
এসি/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)