বাতিল গাড়িতে বসবাস
৯ নভেম্বর ২০১৩তবে জার্মানির বন শহরের একটি বেসক্যাম্প যে কাউকে তাক লাগিয়ে দেবে৷ গাড়ির পুরনো যন্ত্রাংশ দিয়ে সেখানে হোস্টেল রুম তৈরি করা হয়েছে৷ ১৫টি ক্যারাভ্যান এবং দু'টি রেলওয়ে স্লিপিং কার দিয়ে তৈরি হোস্টেলে ১৩০ জনের মতো অতিথি থাকতে পারেন৷
হোস্টেলের মালিক মিশায়েল শ্ল্যোসার পরিত্যক্ত কারাভ্যানের খোঁজে শুধু জার্মানি নয়, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড এবং রুমানিয়াও চষে বেড়িয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে আমরা ক্যারাভ্যানগুলো আমদানি করেছি এবং ভালো করে খুঁটিয়ে দেখেছি৷ এরপর এসবের সঙ্গে মানানসই থিম নিয়ে ভেবেছি৷ এ সব কোন দেশের, মহাদেশের বা যুগের – প্রথমে সেটা কাউকে বলিনি৷ আর এগুলো ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশ, মহাদেশ আর যুগ সম্পর্কে জানাতে চেয়েছি৷''
ক্যারাভ্যানগুলোর ভেতরকার ডিজাইনে পরিবর্তন এনেছেন মারিয়ন সয়েল৷ এই কাজে তিনি এক বছরের বেশি সময় নিয়েছেন, ব্যবহার করেছেন পুরাতন বিভিন্ন দ্রব্য৷ সয়েল বলেন, ‘‘ক্যারাভ্যানগুলোর মতো এগুলোর ভেতরের অংশ সাজানোর জিনিসও জোগাড় করেছি৷ নতুন করে ডিজাইন করাই ছিলো উদ্দেশ্য৷ প্রায় সব ফ্লি মার্কেট, সেকেন্ড-হ্যান্ড দোকান এমনকি সংবাদপত্রেও খুঁজেছি৷ এভাবেই প্রতিটি ক্যারাভানের ইতিহাসের সঙ্গে মানানসই জিনিসপত্র খুঁজে বের করেছি৷''
এভাবে প্রতিটি ক্যারাভ্যান এক একটি শৈল্পিক স্থাপনায় পরিণত হয়েছে, যেগুলোতে ‘খুঁজে পাওয়া' বিভিন্ন পণ্য পুনরায় ব্যবহার করা হয়েছে৷ গোটা বিংশ শতক জুড়ে মূল ধারার শিল্পক্ষেত্রে এগুলির বিকাশ ঘটেছে৷ হোস্টেলে ব্যবহৃত প্রতিটি দ্রব্যের পেছনের গল্প – অতিথি এবং দর্শনার্থীদের শুধু নির্দিষ্ট যুগ বা অঞ্চল সম্পর্কেই জানাচ্ছে না, ইতিহাসের স্বাদও দিচ্ছে৷
পুরনো ভবনের ব্যবহার এক ধরনের ‘আপসাইক্লিং'৷ সেটাও করেছেন হোস্টেল মালিক৷ এতে তাঁর বেশ বেশ সুবিধা হয়েছে৷ ভবনটি আগে একটি পারফিউম ফ্যাক্টরির গুদাম হওয়ায় তাতে তাপ-নিরোধক ইনসুলেশনের ব্যবস্থা ছিল৷ এবার নতুন এক জ্বালানি সাশ্রয়ী হিটিং সিস্টেম বসানোর ফলে শীতকালে ভেতরের তাপমাত্রা বিশ ডিগ্রির মতো থাকে৷ তার উপর ছাদ ১৪ মিটার উঁচু হওয়ায় গ্রীষ্মে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থারও প্রয়োজন হয়না৷
বনে এভাবে প্রায় ১,৬০০ বর্গমিটার এলাকায় হোস্টেলের মালিক নিজের মনের মতো করে বাসস্থান গড়েছেন, যা অনেককে মনে করিয়ে দেয় অতীতের কথা৷ আর সেখানে বসবাসে ভিন্নতার স্বাদ তো রয়েছেই৷