1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

'বাঙালি নারীকে অসম্মান করেছেন বাদশাহ'

স্যমন্তক ঘোষ নতুন দিল্লি
৮ এপ্রিল ২০২০

'বড় লোকের বিটি লো' লোকগানের স্রষ্টা রতন কাহারকে অর্থ সাহায্য করলেন বাদশাহ। তবে বিতর্ক থামেনি। অভিযোগ, বাদশাহ অসম্মান করেছেন বাঙালি নারীর।

https://p.dw.com/p/3acRx
ছবি: picture-alliance/ZUMA/I. Abbas

'বড় লোকের বিটি' নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক অন্য মোড় নিল। পপ গায়ক বাদশাহ গানের স্রষ্টা রতন কাহারকে পাঁচ লাখ টাকা পাঠালেন। একই সঙ্গে কথা দিলেন, লকডাউনের পরে বীরভূমে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে আসবেন। ডয়চে ভেলেকে রতন কাহার জানিয়েছেন, ''আমি টাকা পেয়েছি। অভাবের সংসারে এই টাকা কাজে লাগবে। তবে টাকাই বড় কথা নয়। বাদশাহ আমায় যে সম্মান দেখিয়েছেন, এত বছরে কেউ তা দেখাননি। সে জন্যই আমি খুশি।'' তবে বাংলা ভাষা নিয়ে আন্দোলনরত একটি সংস্থার দাবি বাদশাহের গানে বাঙালি নারীকে অসম্মান করা হয়েছে। ফলে তাঁরা মামলাবন্ধ করবেন না।

বিতর্কের সূত্রপাত সপ্তাহ কয়েক আগে। পপ গায়ক বাদশাহ একটি নতুন ভিডিও বাজারে ছেড়েছেন। গানটি তাঁর নিজের। কিন্তু গানের ভিতর একাধিকবার বড় লোকের বিটি গানটি এবং তার সুর ব্যবহার করা হয়েছে। যা নিয়ে হইচই পড়ে যায় বাংলায়। অনেকেই অভিযোগ করেন, বাদশাহ সুর চুরি করেছেন। গানের স্রষ্টা রতন কাহারের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়নি। দেওয়া হয়নি অর্থ কিংবা সম্মান। পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করছে বাংলাপক্ষ নামের একটি সংগঠন। এই বিষয়টি নিয়ে তারাই প্রথম আন্দোলনে নামে। ডয়চে ভেলেকে সে সময়েই বাংলাপক্ষ জানিয়েছিল, বাদশাহের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রথমটি কপিরাইট সংক্রান্ত এবং দ্বিতীয়টি ভিডিও-তে বাঙালি মহিলাদের যে ভাবে পণ্য হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে, তা নিয়ে। সে সময় রতন কাহারও ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছিলেন, ১৯৭০ সালে লেখা তাঁর এই গানটি গেয়ে অনেকেই প্রসিদ্ধ হয়েছেন, কিন্তু তাঁকে কেউ প্রাপ্য সম্মান দেননি। বাদশাহের কাজেও তিনি দুঃখ পেয়েছেন।

ওই সময় বাদশাহকে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছিলেন, গানটি প্রচলিত বলেই জানতেন তিনি। রতন কাহারের কথা তিনি শোনেননি। কিন্তু বিষয়টি জানার পরে রতন কাহারকে সব রকম সাহায্য করতে তিনি প্রস্তুত। কথা রেখেছেন বাদশাহ। গত সোমবার সন্ধ্যায় রতন কাহারের অ্যাকাউন্টে পাঁচ লাখ টাকা পাঠিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, রতনবাবুর সঙ্গে ভিডিও কলে কথাও বলেছেন। বুধবার সকালে ডয়চে ভেলেকে রতনবাবু জানিয়েছেন, ''টাকা পেয়েছি। এই প্রথম কেউ আমাকে এ ভাবে সম্মান জানালেন। বাদশাহ আসবেন বলেছেন। এলে দু'জনে একসঙ্গে গান গাইবো।'' রতনবাবুর ছেলে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''মাছের দোকানে সামান্য কাজ করি। বাদশাহ বলেছেন, আমাকে এবং আমার বোনকেও সাহায্য করবেন। আমরা কৃতজ্ঞ।''

অদ্ভুত, মনোমুগ্ধকর নাচ ‘ঝুমুর’

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গানটি নিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল, আপাতত তার অবসান হওয়ার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল। তবে বাংলাপক্ষের প্রতিনিধি কৌশিক মাইতি ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, কপিরাইটের মামলা না হলেও বাঙালি নারীর পণ্যায়ন নিয়ে মামলাটি তাঁরা করবেন। দিল্লিতে জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের কাছে এ বিষয়ে একটি চিঠিও তাঁরা পাঠিয়েছেন। বাদশাহ যে ভাবে গানটি চিত্রায়িত করেছেন, তা নিয়ে তাঁদের আপত্তি আছে বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন বাংলাপক্ষের প্রতিনিধিরা। ফলে বিতর্ক একেবারে শেষ হয়ে গেল, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

ডয়চে ভেলের দিল্লি প্রতিনিধি স্যমন্তক ঘোষ
স্যমন্তক ঘোষ ডয়চে ভেলে, দিল্লি ব্যুরো