সারমেয় প্রশিক্ষণে ভারতের সহযোগিতা
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭নিরাপত্তার কাজে, বিশেষত ভিভিআইপি-দের সুরক্ষার কাজে প্রশিক্ষিত কুকুরের চাহিদা ক্রমশই বাড়ছে৷ সীমান্ত পাহারার কাজেও সারমেয় সতর্কতার গুরুত্ব অপরিসীম৷ সেই কথা মাথায় রেখেই বাংলাদেশে নিজস্ব একটি সারমেয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলতে আগ্রহী বর্ডার গার্ডস্ বাংলাদেশ, বা বিজিবি৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে এই ব্যাপারে বিশেষ উৎসাহী৷ ফলে শিগগিরই বাংলাদেশের মাটিতে তৈরি হবে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ভারতের সহযোগিতায়৷ গত সপ্তাহে ভারতের এক প্রতিনিধিদল ঢাকায় গিয়েছিল৷ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর ডিরেক্টর জেনারেল কে কে শর্মা সেই দলে ছিলেন৷ সেই সফরেই বাংলাদেশি সীমান্তসেনার পক্ষ থেকে প্রস্তাবটি আসে এবং সাগ্রহে রাজি হন বিএসএফ কর্তা৷ সিদ্ধান্ত হয়, ভারতীয় সারমেয় প্রশিক্ষকরা বাংলাদেশ গিয়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি গড়ে তুলতে সাহায্য করবেন৷ নতুন এক সারমেয় বাহিনী গড়ে তোলার পাশাপাশি সারমেয়-প্রশিক্ষকদেরও তালিম দিয়ে আসবেন তাঁরা৷ দিল্লির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এই সহযোগিতা উদ্যোগকে দুই দেশের সম্পর্কের সাম্প্রতিক উন্নতির আরও এক নজির হিসেবেই দেখছে৷
সারমেয় প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে ভারতের সহযোগিতা অবশ্য এই প্রথম নয়৷ ২০১৫ সালে, বাংলাদেশের অনুরোধে, ২০টি সারমেয় শাবক এবং যাঁরা তাদের নিয়মিত দেখাশোনা করবেন, তালিম চালু রাখবেন, সেই বাংলাদেশি হ্যান্ডলারদের আলাদা প্রশিক্ষণ দিয়েছিল বিএসএফ৷ পর্যায়ক্রমে যে কুকুরদের বাংলাদেশে মূলত ভিআইপি নিরাপত্তার কাজে নিয়োগ করা হয়৷ এর পর ২০১৬ সালেও আরও ১৮টি কুকুর এবং হ্যান্ডলারদের তালিম দিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হয়৷ এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের গোয়ালিয়রের টেকানপুরে, জাতীয় সারমেয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ‘এনটিসিডি'-তে, যা বিএসএফ পরিচালনা করে৷ সারা ভারতেই বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর প্রয়োজনে প্রশিক্ষিত সারমেয় পাঠানো হয় এখান থেকে৷ ভিভিআইপি নিরাপত্তায় থাকা বিশেষ বাহিনী, সন্ত্রাস দমন বাহিনী, বিমানবন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনের নিরাপত্তায় থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং বিভিন্ন রাজ্যের পুলিসের কুকুরের জোগান যায় এই জাতীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে৷ বিস্ফোরক-সন্ধানী ‘স্নিফার ডগ' থেকে শুরু করে পাহারাদার কুকুর, মাদক-সন্ধানী কুকুর – সব ধরনের বিশেষজ্ঞ তালিম হয় এখানে৷ হ্যান্ডলারের বিশেষ তালিমও এখানেই হয়৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে খবর, এই কেন্দ্র থেকেই বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষকরা বাংলাদেশে যাবেন সারমেয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি গড়ে দিয়ে আসতে৷
সূত্রের খবর, এর আগে দু'দফায় যে ৩৮টি কুকুরকে তালিম দিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল, সবক'টিই ছিল ‘জার্মান শেফার্ড' গোত্রের, যা অ্যালসেশিয়ান নামেও পরিচিত৷ স্বভাব-সন্দিগ্ধ জার্মান শেফার্ড পাহারা দেওয়ার পাশাপাশি বিস্ফোরকের হদিস করতেও সমান দক্ষ৷ ২০১৬ সালে ৩০ হাজার টাকা করে একেকটি জার্মান শেফার্ডের বাচ্চা কেনা হয়েছিল, ছ'মাস প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর তাদেরকে কাজ করতে পাঠানো হয়েছিল বাংলাদেশে৷ এর আগে এনটিসিডি নেপাল এবং মরিশাসের পুলিস বাহিনীর জন্যও সারমেয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে৷