‘শিশুদের বিয়ের সুযোগ ধর্ষণের বৈধতা দিতে পারে’
২ মার্চ ২০১৭বিশ্বে যেসব দেশে বাল্যবিবাহের হার সবচেয়ে বেশি, তাদের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম৷ যদিও আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের কম বয়সি মেয়ে বা ২১ বছরের কম বয়সি ছেলের বিয়ে নিষিদ্ধ৷ তবে নতুন আইনে ধর্ষণের শিকার অপ্রাপ্তবয়স্কের সম্মান রক্ষায় ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দেয়ার যে বিধান রাখা হয়েছে, তা নারীর শরীর বা অধিকার রক্ষায় মোটেই সহায়ক নয় বলে মনে করছেন শিশু অধিকার বিষয়ক অ্যাক্টিভিস্টরা৷
‘‘আমরা উদ্বিগ্ন যে নতুন আইন যৌন নিগ্রহের বিস্তৃতি ঘটাতে পারে এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে যৌনমিলনে বৈধতা দিতে পারে৷ একইসঙ্গে ধর্ষণের শিকার অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের অভিভাবকরা ধর্ষককে ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে বিয়ে করতে বাধ্য করতে পারে,’’ বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ‘গার্লস নট ব্রাইড বাংলাদেশ’ নামে ৬৫০টি চ্যারিটির সম্মিলিত গ্লোবাল অ্যালায়েন্স৷
বাংলাদেশে ‘বিশেষ প্রেক্ষাপট’ বা ‘অপ্রাপ্তবয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থে’ আঠারো বছরের কম বয়সিদের বিয়ের সুযোগ রেখে অনুমোদন করা ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ বিল’ পাস হওয়ার দু’দিন পর বুধবার এই বিবৃতি প্রকাশ করেছে চ্যারিটিগুলো৷ শিশু অধিকার সংস্থাগুলো মনে করে যে, ‘বিশেষ প্রেক্ষাপট’ বা ‘অপ্রাপ্তবয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থ’ বলতে ঠিক কী বোঝানো হচ্ছে, তা আইনে উল্লেখ করা হয়নি, ফলে এটির ব্যাখ্যা বিভিন্নরকম হতে পারে, বা অপ্রাপ্তবয়স্কের সঙ্গে যৌনমিলনকে বৈধতা দিতে পারে৷
বাংলাদেশ সরকার অবশ্য মনে করছে না যে নতুন আইনের কারণে মেয়েদের যৌন হয়রানি আরো বাড়তে পারে৷ বরং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটের কথা বিবেচনা করে আইনে এই বিধানটি যোগ করা হয়েছে৷ ‘‘আদালতের অনুমতি ছাড়া কেউ বিয়ে করতে পারবেন না,’’ বলেও জানান তিনি৷
উল্লেখ্য, বিশ্বের যে দশটি দেশে সবচেয়ে বেশি বাল্যবিবাহ হয় তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম৷ ‘চাইল্ড নট ব্রাইডসের’ হিসেব অনুযায়ী, মুসলিমপ্রধান দেশটিতে ৫২ শতাংশ মেয়ের বয়স ১৮ পার হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায়৷
এআই/এসিবি (রয়টার্স)
প্রিয় পাঠক, এই বিষয়ে আপনার মন্তব্য জানাতে পারেন নীচে মন্তব্যের ঘরে...