1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিমসটেকের সচিবালয় ঢাকায়

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাত দেশের জোট বিমসটেকের স্থায়ী সচিবালয় স্থাপন করা হয়েছে বাংলাদেশে৷ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার ঢাকার গুলশানে এই সচিবালয় উদ্বোধন করেন৷

https://p.dw.com/p/1DBjs
Sheikh Hasina
ফাইল ফটোছবি: Reuters

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘‘বিমসটেক সচিবালয় হবে বঙ্গোপসাগরের এ অঞ্চলের সাতটি দেশের গর্বিত অংশীদারত্বের এক গর্বিত প্রতিষ্ঠান৷'' উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বিমসটেকের কার্যক্রম পরিচালনায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন৷

প্রধানমন্ত্রী দারিদ্র্য বিমোচনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কৃষিতে সহযোগিতা, বিমসটেক মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল বিষয়ক কাঠামো চুক্তি কার্যকর এবং বিনিয়োগ সংরক্ষণ চুক্তি সম্পাদন, যোগাযোগ বৃদ্ধি, জ্বালানি নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান৷

তিনি বলেন, ‘‘বিমসটেক সচিবালয় স্থাপনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে৷''

প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত জোটের সবশেষ সম্মেলনে ঢাকায় স্থায়ী এই সচিবালয় স্থাপনের বিষয়ে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়৷ শ্রীলঙ্কাও সচিবালয় স্থাপনে আগ্রহী ছিল৷ কিন্তু জোটের প্রথম মহাসচিব শ্রীলঙ্কা থেকে করার ব্যাপারে সদস্য দেশগুলো একমত হয়৷ শ্রীলঙ্কার কূটনীতিক সুমিত নাকান্দালা এরইমধ্যে জোটের প্রথম মহাসচিব হিসেবে যোগ দিয়েছেন৷

বাংলাদেশে বিমসটেকের স্থায়ী সচিবালয় গড়তে বড় ধরনের সহযোগিতা দিয়েছে ভারত৷ মিয়ানমার সম্মেলনের আগেই মোট ব্যয়ের ৩২ শতাংশ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল৷

উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালের ৬ জুন ব্যাংকক ঘোষণার মধ্যে দিয়ে জন্ম নেয় বাংলাদশ-ভারত-শ্রীলঙ্কা-থাইল্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন৷ পরে মিয়ানমার, নেপাল ও ভুটান যোগ দিলে এ জোটের নাম হয় বিমসটেক৷ ফলে এর সদস্য সংখ্যা এখন সাত৷

বিমসটেক এখন উন্নয়ন এবং অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ১৪টি খাতের ওপর জোর দিচ্ছে৷ এই খাতগুলো হচ্ছে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, প্রযুক্তি, জ্বালানি, পরিবহন ও যোগাযোগ, পর্যটন, মত্‍স্য, কৃষি, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, জনস্বাস্থ্য, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ, দারিদ্র্য দূরীকরণ, সন্ত্রাসবাদ ও আঞ্চলিক অপরাধ দমন এবং জলবায়ু পরিবর্তন৷

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন, এই আঞ্চলিক জোট থেকে সুফল পেতে হলে মনোজগতে পরিবর্তন আনতে হবে৷ এই অঞ্চলে চীন এবং ভারতকে কেন্দ্র করে আঞ্চলিক সম্পর্ক নির্ণয় হয়৷

তিনি বলেন, ‘‘কেউ ভারতের কাছাকাছি হলে চীনের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে৷ আর চীনের কাছাকাছি হলে ভারতের সঙ্গে৷ এছাড়া অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে অশুল্ক বাধা প্রধান অন্তরায় হিসেবে কাজ করে৷''

অধ্যাপক ইমতিয়াজ জানান, এসব বাধা দূর করা গেলে বিমসটেক এই অঞ্চলে সুফল বয়ে আনতে পারে৷ আর এজন্য সংস্কৃতি, শিক্ষা এবং রাজনীতির ক্ষেত্রে সুসম্পর্ক আগে প্রয়োজন৷

বাংলাদেশে বিমসটেকের সচিবালয় হওয়া বাংলাদেশের জন্য ভাল, মনে করেন ইমতিয়াজ৷ তবে সেটা সার্কের সচিবালয়ের মত হলে কোন লাভ নেই৷ তিনি বলেন, ‘‘নেপালে সার্কের সচিবালয় হলেও সিদ্ধান্ত হয় সরকারগুলোর ইচ্ছায়৷ তাই সচিবালয়ের কোন করণীয় নেই৷''

তিনি বলেন, ‘‘বিমসটেক সচিবালয়কে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ বা ক্ষমতা দিতে হবে৷ তা না হলে এই সচিবালয়ের ভবন ছাড়া আর কোন গুরুত্বই থাকবে না৷''

উল্লেখ্য দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনের উদ্দেশে ২০০৪ সালে জোটের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার ব্যাপারে সম্মত হলেও সেই পরিকল্পনা আলোর মুখ দেখেনি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য