ফরাসি নাগরিক আটক রহস্য
২৮ ডিসেম্বর ২০১৫মুসার আসল নাম পুয়েমো চঁচুয়্যাঁ৷ তাঁর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ না থাকায় বাংলাদেশের দণ্ডবিধির ৫৪ ধারায় আটক করা হয় তাঁকে৷ ডয়চে ভেলেকে এ কথা জানান টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওসি মো. আতাউর রহমান খান৷ তিনি জানান, আটক এই ফরাসি নাগরিক টেকনাফে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ফ্রান্স ভিত্তিক এনজিও বারাকা সিটি-র হয়ে কাজ করতেন৷ তবে আসল নামের পরিবর্তে মুসা ইবনে ইয়াকুব হিসেবেই নিজের পরিচয় দিতেন তিনি৷ আর এই নামেই তিনি ঐ এলাকায় পরিচিত ছিলেন৷
ওসি মো. আতাউর রহমান খান জানান, ‘‘গত ২২শে ডিসেম্বর মুসাকে আটক করা হয়৷ ক্যাম্প এলাকায় সন্দেহজনক আচরণ এবং কাজকর্মের জন্যই তাঁকে আইনের আওতায় নেয়া হয়েছে৷''
মুসার বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দষ্ট অভিযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে ওসি দাবি করেন, ‘‘ফরাসি এই নাগরিক টুরিস্ট ভিসায় বাংলাদেশে এসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নানা ধরণের তৎপরতা চালাচ্ছিলেন৷ এছাড়া তিনি মুসলিম না হয়েও মুসলিম পরিচয় এবং নাম ধারণ করেন৷''
কিন্তু মুসলমান নাম নেয়া কোনো অপরাধ নয়৷ তাই মুসা ঠিক কী ধরনের অপরাধ করেছেন জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘‘এ নিয়ে এখন তদন্ত হচ্ছে৷ তদন্তে অপরাধের ধরন জানা গেলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হবে৷ এখনও পর্যন্ত তিনি শুধুই একজন সন্দেহভাজন৷ আর এ কারণেই তাঁকে ৫৪ ধারায় আটক করে রাখা হয়েছে, এখনও রিমান্ডে নেয়া হয়নি৷''
ওদিকে আন্তর্জাতিক একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে যে, মুসাকে ৪০ জন কারাবন্দির সঙ্গে মানবেতর অবস্থায় রাখা হয়েছে৷ তাই মুসাকে আদালতে হাজির করা হলেই ঢাকার ফরাসি দূতাবাস তাঁকে প্রয়োজনীয় আইনগত সহায়তা দেবে৷
সংবাদমাধ্যমটি শামীম নামের একজন আইনজীবীকে উদ্ধৃত করে জানায় যে, মুসার বিরুদ্ধে মিথ্যা পরিচয় দেয়ার অভিযোগ আনা হতে পারে, যার সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের কারাদণ্ড৷ এছাড়া এই ফ্রান্স ভিত্তিক এনজিও বারাকা সিটি সালাফি মুসলিমদের অর্থায়নে পরিচালিত বলেও জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি৷ ফ্রান্সের পুলিশ এই বেসরকারি সাহায্য সংগঠনটির ফরাসি কার্যালয়ে একাধিকবার তল্লাশি চালিয়েছে এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে বলে খবর৷ অবশ্য সংগঠনটির বিরুদ্ধেও সন্ত্রাসী গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷
এদিকে এই ফরাসি নাগরিকের মুক্তির জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই৷ টুইটারে #FreeMoussa বা #ফ্রিমুসা নামে একটি হ্যাশট্যাগ চালু হয়েছে৷ গত ১৬ ঘণ্টায় ২০০০ বার হ্যাশট্যাগটি ব্যবহৃত হয়েছে৷ অন্যদিকে ফেসবুকে প্রায় এক লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারী মুসার মুক্তির জন্য একটি আবেদনে সই করেছেন৷