পোশাক কারখানার দুর্দিন
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ জানিয়েছে, বন্ধ হওয়া কারখানার মধ্যে ২০ শতাংশ হচ্ছে শিফট হওয়া, ৪০ শতাংশ ‘শেয়ার্ড বিল্ডিং' কারখানা৷ বাকী কারখানাগুলো সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করা কারখানা৷ এর মধ্যে ভালো মানের কারখানা ৫ শতাংশেরও কম৷
সর্বশেষ ১ সেপ্টেম্বর মিরপুরে ‘ইমাকুলেট প্রাইভেট লিমিডেট' নামের গার্মেন্টসটি বন্ধ করে দেয় মালিকপক্ষ৷ এর কয়েকদিন আগে একই মালিকের আরো একটি কারখানাও বন্ধ হয়ে যায়৷
বিজিএমইএ জানায়, গত ঈদের আগে বন্ধ হয়েছে ২০টি পোশাক কারখানা৷ যা বিজিএমইএ জানেনা বা বিজিএমইএকে জানানো হয়নি৷ তাই বাস্তবে বন্ধ হওয়া পোশাক কারখানার সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে৷ তবে ঢাকায় বন্ধ করে গাজীপুর-আশুলিয়ায় একই নামে আবার কারখানা চালু করছেন অধিকাংশ মালিক৷
কারখানা বন্ধের পাশাপাশি নতুন কারখানা করার হারও কমছে৷ ২০১৪ সালে ৮০টি, ২০১৩ সালে হয়েছে ১৪০টি আর ২০১২ সালে ২০০টি কারখানা নতুন করে স্থাপন করা হয়েছে৷ বর্তমানে বিজিএমইএ সদস্যভুক্ত সাড়ে তিন হাজার কারখানা চালু রয়েছে৷ যদিও বিজিএমইএর সদস্য কারখানার সংখ্যা পাঁচ হাজার ৭৫১টি৷
কারখানা বন্ধ হওয়া প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, ‘‘কারখানা বন্ধ হওয়ার অনেকগুলো কারণ আছে৷ এক নম্বর কারণ হচ্ছে রানা প্লাজা ধসের প্রভাবে ক্রয় আদেশ কমে যাওয়া৷''
এছাড়া ‘অ্যাকর্ড অ্যালায়েন্সের' কারখানা পরিদর্শন, শেয়ার্ড বিল্ডিং কারখানা থাকার কারণে ক্রেতারা অর্ডার না দেওয়া, ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির কারণে মালিকরা কারখানা চালাতে না পারা এসব কারণেও কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি৷
শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, ‘‘আমাদের হিসেবে রানা প্লাজা ধসের পর থেকে ২১৮টি গার্মেন্ট কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে৷ যেসব কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে সেগুলোর বেশিরভাগই ছোট ও মাঝারি আকারের এবং প্রত্যেক কারখানায় ৩০০-৮০০ শ্রমিক কাজ করতেন৷''
তিনি জানান, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে গার্মেন্ট রপ্তানি ১.৬ শতাংশ কমে গেছে৷তবে এ সময় নিটওয়্যার রপ্তানি বেড়েছে ৫ শতাংশ৷ যদিও গত অথবছরের একই সময়ে এ খাতে রপ্তানি বেড়েছিল ১২ শতাংশ৷
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে রানা প্লাজা ধসে ১,১৩৮ জন মারা যাওয়ার পর থেকে ইউরোপ ও আমেরিকার ২০০ ক্রেতার পক্ষ থেকে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স নামের দুটো প্রতিষ্ঠান প্রায় ১,৭০০ গার্মেন্ট পরিদর্শন করেছে৷ এর মধ্যে অ্যাকর্ড ১,১০০ এবং অ্যালায়েন্স ৬০০ কারাখানা পরিদর্শন করে৷ তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে অনেক গার্মেন্ট ব্যাপক সংস্কার করতে বাধ্য হয়৷