পর্যটন : চাই যত্ন, দূরদৃষ্টি ও যুগোপযোগী পর্যবেক্ষণ
৩১ মে ২০২৪বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, সর্বশেষ ২০২৩ সালে বাংলাদেশে বিদেশি পর্যটক এসেছে ৬ লাখ ৫৫ হাজার। আগের বছর যেটা ছিল ৫ লাখ ২৫ হাজার ৬৫৬ জন। ২০২১ সালে ছিল ১ লাখ ৩৫ হাজার ১৮৬ জন, ২০২০ সালে ১ লাখ ৮১ হাজার ৫১৮ জন, ২০১৯ সালে ৬ লাখ ২১ হাজার ১৩১ জন, ২০১৮ সালে ছিল ৫ লাখ ৫২ হাজার ৭৩০ জন। এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে ট্যুরিজম বোর্ডের উপ-পরিচালক মহিবুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, "আমরা আসলে প্রচারণার জায়গায় অনেক পিছিয়ে। যে সুযোগ সুবিধা আছে, তা দিয়েও আরও কিছু পর্যটক আনা সম্ভব। সেটার জন্য আসলে প্রচার-প্রচারণা প্রয়োজন।”
বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান বলেছেন, "বিদেশিদের আগ্রহ বাড়াতে প্রচারের দরকার আছে। নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। দেশে এসে কোনো পর্যটক নিরাপত্তাহীনতার শিকার হয়েছেন এমন খবর পাইনি। ট্যুরিস্ট পুলিশ আছে। সেবার মান আরও উন্নত করা দরকার।”
২০৪১ সালে লক্ষ্য ৫৫ লাখ ট্যুরিস্ট
এই অবস্থার মধ্যেও ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ৫৫ লাখ ট্যুরিস্ট আনার লক্ষ্যমাত্র নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন ও ট্যুরিজম বোর্ড। ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আবু তাহির মোহাম্মদ জাবের ডয়চে ভেলেকে বলেন, "বিদেশি পর্যটক যে বাড়ছে না, এটা ঠিক না। তবে আশানুরুপ বাড়ছে না, এটা সত্যি। এখন পর্যটনকে অগ্রাধিকারের জায়গায় নিতে হবে। পর্যটনের সঙ্গে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক রয়েছে। স্পটে যাওয়ার জন্য রাস্তা, যানবাহন, বিশ্রাম, বিনোদন, টয়লেট, খাবারের মান ও মূল্য, থাকার জায়গা- সব কিছু এর সঙ্গে যুক্ত। পর্যটনের উন্নয়নে সব কিছুকে অ্যাড্রেস করতে হবে। আপাতত আমরা ৫টি ট্যুরিজম স্পটকে আন্তর্জাতিক মানের করতে কাজ করছি। এছাড়া পর্যায়ক্রমে আরও কিছু স্পটকে উন্নত করা হয়।”
বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর কত মানুষ বিদেশে বেড়াতে যান তার হিসেব সরকারি কোনো দপ্তরে নেই। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছেও নেই। তবে অ্যাসোসিয়েশন অফ ট্রাভেল এজেন্ট অফ বাংলাদেশ (আটাব)-এর প্রেসিডেন্ট আবদুস সালাম আরেফ ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এমন কোনো পরিসংখ্যান আমাদের কাছেও নেই। তবে আমরা এয়ারলাইন্সের হিসাব ও স্থলবন্দরের হিসাব দিয়ে একটা ধারণা করি। আবার ট্যুরিজম অনেক ধরনের। স্থলবন্দর দিয়ে প্রতি বছর ভারতে যাচ্ছেন অন্তত ২০ লাখ মানুষ। এর বড় অংশ ট্যুরিজমে। আবার হজ্জও এক ধরনের ট্যুরিজম। সেটা ধরলে সাড়ে ৩ লাখ মানুষ প্রতি বছর হজ্জ করতে যাচ্ছেন। এর বাইরে পুরোপুরি বিনোদনের জন্য দেশের বাইরে যাচ্ছেন দেড় থেকে দুই লাখ মানুষ।”
ডলার সংকটের মধ্যে ব্যাংকগুলো তো কোনো ব্যক্তিকে ২০০ ডলারের বেশি দিচ্ছে না, তাহলে যারা বিদেশে বেড়াতে যাচ্ছেন তারা কিভাবে ডলার সংগ্রহ করছেন? এ বিষয়ে আবদুস সালাম আরেফ বলেন, "দেশে খোলা বাজারে ডলারের কোন সংকট নেই। আপনি যত ডলার প্রয়োজন তত ডলারই পাবেন। সেক্ষেত্রে ব্যাংক রেট হয়ত ১১৭ টাকা, আপনাকে ১২০-১২৫ টাকা দিয়ে কিনতে হবে। কিন্তু ডলারের কোন সংকট নেই।”
অনেক বাংলাদেশির কাছে এখন পছন্দের গন্তব্য হয়ে উঠেছে মালদ্বীপ। দেশটির সরকারি তথ্য বলছে, ২০২১ সালে যেখানে মাত্র ৩ হাজার ৯২৩ বাংলাদেশি ভারত মহাসাগরের দ্বীপ দেশটিতে ভ্রমণে গিয়েছিলেন, সেখানে ২০২২ সালে একলাফে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৮০৭ জনে। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৩৩৬ বাংলাদেশি। বাংলাদেশ এখন মালদ্বীপের ১৫তম পর্যটক উৎস।
বাংলাদেশে এখন যে ডলার সংকট চলছে, সেখানে পর্যটন গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর হয়ে উঠতে পারে। জানতে চাইলে লেক্সাস হলিডেজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অজিত কুমার সাহা ডয়চে ভেলেক বলেন, "আমাদের তো ডলার আসার অল্প কয়েকটি মাধ্যম। এরমধ্যে প্রবাসী শ্রমিক এবং গার্মেন্টস সেক্টর উল্লেখযোগ্য। কিন্তু আমরা সরকারকে যেটা বোঝাতে ব্যর্থ হচ্ছি বা সরকারের নীতিনির্ধারক বুঝতে চাচ্ছেন না, সেটা হল, একজন পর্যটক যদি এক হাজার ডলার নিয়ে বাংলাদেশে আসনে, তিনি ৮০ ভাগ ডলারই আবাসন, ভ্রমনসহ এই ধরনের কাজে খরচ করেন। এর বাইরে ২০ ভাগ ডলার শপিংয়ে খরচ করেন। এই শপিংয়ে তিনি বাংলাদেশি পণ্যই কেনেন। ফলে তার এক হাজার ডলারের মধ্যে ৯৫ ভাগই দেশে থাকে। অন্যদিকে গার্মেন্টস থেকে অনেক বৈদেশিক মূদ্রা এলেও এখানে কিন্তু সুতা, বোতামসহ আনুসঙ্গিক সরঞ্জাম কিনতে বড় একটা অংশ আবার বিদেশে চলে যাচ্ছে। আমরা শুধু টেইলারিংয়ের টাকাটা দেশে রাখতে পারি। ফলে আমরা কেন পর্যটনকে গুরুত্ব দিচ্ছি না, নীতিনির্ধারক কেন গুরুত্ব দিচ্ছেন না সেটা আমরা বুঝতে পারছি না।”
ভোগান্তির সঙ্গে আছে নিরাপত্তার সংকটও
দেশে বর্তমানে মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের কাছাকাছি। এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে, ডলার সংকট, যা আমদানি ব্যয় বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতিকে উস্কে দিচ্ছে। জানা গেছে, দেশে বিদেশি পর্যটক আসার ক্ষেত্রে পদে পদে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। অথচ পার্শ্ববর্তী মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশের অর্থনীতি অনেকটাই পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। এর মধ্যে ‘দেউলিয়া' হয়ে পড়া শ্রীলঙ্কা পর্যটনের ওপর ভর দিয়ে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। পাহাড়, সমুদ্রসহ পর্যটকদের আকর্ষণ করার মতো সবই আছে বাংলাদেশে। তবে দেশের পর্যটন নিয়ে প্রচারের অভাব রয়েছে। এছাড়া বিদেশিরা আসতে পদে পদে ভোগান্তির শিকার হন। শুরুতেই তারা হোঁচট খান ভিসার অনুমতি পেতে। দীর্ঘ প্রক্রিয়া। অন অ্যারাইভাল ভিসা পাওয়াও কঠিন। বিমানবন্দরে হয়রানির শিকার হলেও এ খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধিকাংশপর্যটন স্পটে নিরাপত্তার ঘাটতি আছে। যাতায়াত খরচ, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও চড়া। ঢাকা থেকে একজন পর্যটকের কক্সবাজার ঘুরে আসার খরচ ক্ষেত্রবিশেষে কলকাতার চেয়েও বেশি। দেশের বেশিরভাগ পর্যটন স্পটে অতিরিক্ত খরচ নেওয়ার অভিযোগও আছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার দুর্বলতাও কাটেনি। দূরপাল্লার পথে নেই বিশ্রাম ও বিনোদনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। এসব দেখার জন্য একক কোনো কর্তৃপক্ষও নেই। প্রত্যেকটি ভিন্ন সংস্থার দায়িত্বে। দেশে পর্যটনবান্ধব নীতি গড়ে ওঠেনি এখনো।
তবে এখন নিরাপত্তার ঘাটতি নেই বলেই মনে করেন ট্যুরিস্ট পুলিশের বিশেষ পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, "২০১৩ সালে ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করার পর পরিস্থিতি এখন অনেকটাই বদলে গেছে। সাম্প্রতিককালে আপনি শুনবেন না কোনো ট্যুরিস্ট নিরাপত্তা সংকটে পড়েছে। তবে আমাদেরও জনবলের ঘাটতি আছে। আপাতত আমরা জেলা পুলিশের সহায়তা নিয়ে কাজ করছি। বর্তমানে ১০৪টি স্পটে কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। অনেকটাই আমরা কাভার করতে পেরেছি। ভবিষ্যতে এটা আরও বাড়বে।”
জিডিপিতে ট্যুরিজমের অবদান
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত থেকে সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসে বাংলাদেশে। এছাড়া এশিয়ার মধ্যে চীন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং জাপানের পর্যটকদের আকর্ষণের জায়গা বাংলাদেশ। এশিয়ার বাইরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, তুরস্ক এবং রাশিয়া থেকেও পর্যটক বাংলাদেশে ঘুরতে আসেন।
বাংলাদেশের মোট জিডিপির সাড়ে ৩ থেকে ৪ শতাংশ আসে পর্যটন খাত থেকে, যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় সবচেয়ে কম। দক্ষিণ এশিয়ার দেশ মালদ্বীপের পর্যটন খাত থেকে আসা আয় জিডিপির প্রায় ৩০ শতাংশ। এছাড়া শ্রীলঙ্কার সাড়ে ১২ শতাংশ, নেপালের ৬ শতাংশ, ভুটানের সাড়ে ৫ শতাংশ এবং ভারতের সাড়ে ৪ শতাংশের বেশি জিডিপির আয় আসে পর্যটন থেকে। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বাংলাদেশের পর্যটনের বড় একটি আয় আসে দেশের ভেতরে থাকা পর্যটক থেকে। বিদেশি পর্যটক থেকে বাংলাদেশ গড়ে আড়াই থেকে তিন হাজার কোটি টাকা প্রতিবছর আয় করে, যা একটি মজবুত পর্যটন খাতের জন্য অপ্রতুল।
জানতে চাইলে অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি শিবলুল আজম কোরেশী ডয়চে ভেলেকে বলেন, "পর্যটন একটি বহুমাতৃক সেক্টর। অর্থনৈতিক দিক থেকে এটি সম্ভাবনাময়। বিশ্বের বহু দেশ ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে এ খাতে। অনেক দেশের জিডিপিতে পর্যটন খাতের ১০ শতাংশ ভূমিকা থাকে। আর বাংলাদেশের জিডিপিতে এর ভূমিকা মাত্র ৩ শতাংশ। পর্যটনে কর্মসংস্থানের ভূমিকা বিরাট। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষও পর্যটনের মাধ্যমে উপকৃত হয়। কক্সবাজার, সাজেক, রেমাক্রি, টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সর্বত্রই এমনটা দেখা গেছে। এক কোটি পর্যটক দেশের ভেতর ও ৫০ লাখ মানুষ দেশের বাইরে ভ্রমণ করে। আমরা যেমন দেশের বাইরে যাই, আমাদের প্রত্যাশা দেশের বাইরে থেকেও মানুষ এখানে ভ্রমণ করতে পারবে। কিছু আমরা তো তাদের সেই ধরনের সুবিধা দিতে পারছি না।”
খরচ বেশি, বিনোদন কম
সম্প্রদি এয়ারলাইনসগুলোর টিকিটের মূল্য বেড়েছে অর্ধেকের বেশি। সব মিলিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিদেশ ভ্রমণ বাবদ আগের অর্থবছরের তুলনায় ৮০ শতাংশের বেশি ব্যয় বেড়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিদেশ ভ্রমণ খাতে বাংলাদেশের ব্যয় ছিল ৮ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে তা ১৫ হাজার ৯৩১ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘ব্যালেন্স অব পেমেন্ট’ বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গত অর্থবছরে বিদেশ থেকে পণ্য ও যাত্রী পরিবহণ ব্যয় কিছুটা কমেছে।
বিদেশি পর্যটকরা বাংলাদেশকে বেশি পছন্দ না করার কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের মহাব্যবস্থাপক সৃজন কুমার বড়ুয়া ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশকে কেন তারা পছন্দ করবে? আমরা কী তাদের চাহিদা পূরণ করতে পারছি? পারছি না। শুধু ট্যুরিস্ট স্পট থাকলেই হবে না, এর বাইরে নানা ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থা থাকা জরুরি। সন্ধ্যার পর আমরা তো তাদের বিনোদনের ব্যবস্থা করতে পারছি না, ফলে বিদেশিরা এখানে আসতে উদ্বুর্দ্ধ হচ্ছেন না। তবে হ্যাঁ, সরকার পর্যটন খাতকে বিকোশিত করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। বিদেশিদের জন্য বিশেষ ট্যুরিজম এলাকা তৈরি করছে। সেখানে হয়ত সব ধরনের ব্যবস্থাই থাকবে। তখন আমরা বিদেশিদের আকৃষ্ট করতে পারবো। এর জন্য সময় প্রয়োজন।”
বিদেশিদের পর্যবেক্ষণ
অতি সম্প্রতি জাপান থেকে বাংলাদেশে ঘুরতে আসা একটি ট্যুরিস্ট দলের গাইড হিসেবে কাজ করেছেন তালেবুল ইসলাম। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘অনেক জায়গায় গিয়ে তারা খুশি হয়েছেন। আবার বিরক্তিও প্রকাশ করেছেন। ওরা সবচেয়ে বেশি বিরক্ত হয়েছে পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত মানুষের জটলায়। কক্সবাজারে গিয়ে সাগরে নেমেছে তো সেখানে অন্তত ৫০ জন বাংলাদেশি তাদের ঘিরে ধরে ভিডিও করছিল। পাশাপাশি সন্ধ্যার পর তারা খুবই বিরক্তিকর সময় কাটিয়েছে। কক্সবাজারের মতো জায়গায় কোন নাইট ক্লাব না থাকায় তারা হতাশ হয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রে পানীয় সংগ্রহ করতে গিয়ে তারা হিমশিম খেয়েছেন। ফলে সবকিছু মিলিয়ে তারা যে খুব ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে বাংলাদেশ থেকে গেছেন সেটা আমার মনে হয়নি।”
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের টুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষক আইরিন হাসান তার এক প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন, "পর্যটন কাঠামোর দিক থেকে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৯তম। এশিয়ার মধ্যে শুধু পাকিস্তান ছাড়া বাকি সব দেশ থেকেই পিছিয়ে আছি আমরা। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সত্ত্বেও এখনো রয়েছে অনেক দুর্বলতা। দীর্ঘ যানজটের পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। নেই পর্যাপ্ত হোটেলের সুব্যবস্থা। পর্যটনকেন্দ্রগুলো অবহেলিত। এগুলোর সুপরিকল্পিত আধুনিকায়ন ও শুল্কমুক্ত বিপণির অভাবও এ ক্ষেত্রে বড় বাঁধা।”