প্রসঙ্গ: বিদেশে ‘বাংলাদেশি জঙ্গি'
২১ জানুয়ারি ২০১৬বাংলাদেশে যে ২৬ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৪ জনের বিরুদ্ধে ঢাকায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে৷ আর বাকি ১২ জনকে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়া হয়েছে৷ এই ১২ জনের বিরুদ্ধে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ মেলেনি বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েনদা বিভাগের উপ-কমিশনার মাশরুকুর রহমান৷ তিনি জানিয়েছেন, ‘‘যে ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তারা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসিম উদ্দিন রাহমানীর অনুসারী৷ তারা সিঙ্গাপুরের মোস্তফা মার্টের কাছে অ্যাঙ্গোলিয়া মসজিদে জড়ো হয়ে বাংলাদেশে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সদস্য, অর্থ সংগ্রহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতেন৷ মসজিদে প্রতি রবিবার সন্ধ্যায় তারা সমবেত হয়ে জিহাদি বক্তব্য, বয়ান শুনতেন ও জিহাদি ভিডিও দেখতেন৷''
ডিসেম্বরে তাদের ফেরত আসার কথা জানিয়ে ঐ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘‘১৪ জনকে রিমান্ডে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে৷''
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, ‘‘যাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে তাদেরও নজরদারিতে রাখা হয়েছে৷''
সিঙ্গাপুরে মোট ২৭ জন বাংলাদেশি নির্মাণ শ্রমিককে আটক করা হয়৷ তাদের মধ্যে একজন সেখানে আলাদা একটি মামলার আসামি হওয়ায়, তাকে ফেরত পাঠানো হয়নি৷
‘বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্ট্যাডিজ' বা বিআইপিএসএস-এর প্রধান মেজর জেনারেল এ এন এম মুনীরুজ্জামান (অব.) ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশের নাগরিকরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আছেন৷ কিন্তু তারা সেখানে কী করছেন, সেখানে তাদের তৎপরতা কী – সে সব তথ্য রাখছে না সরকার৷ রাখার কোনো ব্যবস্থাও নেই৷ মধ্যপ্রাচ্যসহ আরো অনেক দেশে বাংলাদেশিরা আছেন এবং তারা এ ধরনের জঙ্গি ঝুঁকির মধ্যে আছেন৷ তারা যে প্রভাবিত হচ্ছেন না, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না৷ এমনকি সিরিয়াও বাংলাদেশি নাগরিকরা রয়েছেন৷''
মুনীরুজ্জামানের কথায়, ‘‘বাংলাদেশকে বাস্তব অবস্থা বুঝতে হবে৷ কোনো তথ্য গোপন করে লাভ নেই৷ কারণ তাতে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে৷ সিংঙ্গাপুরের ঘটনাও আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছিল৷ কারা আটক হয়েছে আর কারা ছাড়া পেয়েছে, এই তথ্য গণমাধ্যম এবং দেশের মানুষকে জানানো উচিত ছিল৷ অবশ্য এক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে৷''
তিনি বলেন, ‘‘আমার জানা মতে, এর আগে মালয়েশিয়াতেও এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছে, যা আমরা জানতে পারিনি৷ এ রকম ঘটনা বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করবে৷ শুধু তাই নয়, যারা বাংলাদেশ থেকে প্রবাসে যাবেন, তারাও চাপের মুখে পড়বেন৷''
‘‘তাই বাংলাদেশের উচিত হবে স্বাধীনভাবে প্রবাসীদের ‘মনিটর' করা এবং বাস্তব অবস্থা জেনে ব্যবস্থা নেয়া৷ কোনো কিছু গোপন করা সমাধান নয়'', জানান মুনীরুজ্জামান৷
আপনারা কি এ এন এম মুনীরুজ্জামানের সঙ্গে একমত? মতামত জানান নীচের ঘরে৷