বন্যা পেছনে ঠেলছে পাকিস্তানের অর্থনীতিকে
১০ আগস্ট ২০১০লাখ লাখ মানুষ চাইছে কী করে এখন বন্যার সঙ্গে যুদ্ধ করে বাঁচা যায়, কী করে শিশু আর নারীদের রক্ষা করা যায়, কী করে গবাদি পশুগুলোতে রাখা যায় নিরাপদে৷ গত আশি বছরেও পাকিস্তানের মানুষ দেখেনি এমন ভয়াবহ অবস্থা৷
উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে বন্যার ভয়াবহতা সুনামির চেয়েও কোন অংশে কম হবে না বলেই মনে করছে জাতিসংঘ৷ আর তাই বিশ্বসম্প্রদায়ের প্রতি দ্রুত পাকিস্তানকে ত্রাণ সহায়তা পাঠাতে আহ্বান তাদের৷ জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সমন্বয়ক এলিজাবেথ বায়ার্স বলছেন যে তারা মানবিক সহায়তার দিকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন৷ পাকিস্তানের জন্য ত্রাণ হিসাবে কত অর্থ বা সামগ্রীর প্রয়োজন, সেই হিসাব কষতে আজই নিউইয়র্কে বসছেন জাতিসংঘ কর্মকর্তারা৷ সেই হিসাব প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছন বায়ার্স৷
এই বন্যা কেবল যে জানমালেরই ক্ষতি করছে, তাই নয়; একই সঙ্গে দেশের অর্থনীতির লাগামকেও টেনে ধরেছে৷ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের এমনটাই মত৷ আইএমএফের ভাষ্য, এ বন্যার পরিণতিতে বাজেটে দেখা দেবে বড় ধরনের ঘাটতি৷ পাকিস্তান যাবে আরও পেছনে৷
ভয়াবহ বন্যায় এরই মধ্যে কমপক্ষে ১ হাজার ৬শ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে৷ সরকারি এক তথ্য অনুযায়ী, ৬ লাখ ৫০ হাজার বাড়িঘর হয়েছে ধ্বংস হয়েছে৷ ৫ লাখ ৬৭ হাজার হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে পানির নিচে, পানির তোড়ে ভেসে গেছে ১০ হাজারেরও বেশি গবাদি পশু৷ তবে সমস্যা বর্তমানে যেমনটা হচ্ছে, আসছে শীত মৌসুমে তা হবে আরও বেশি৷ বানের পানিতে বেশিরভাগ ফসল ভেসে যাওয়ার কারণে শীত মৌসুমে পাকিস্তানের জনগণের খাদ্য সাহায্যের প্রয়োজন হবে বলেই মত আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোর৷
পাকিস্তানের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের এক মুখ্যপাত্র জানিয়েছেন, দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে খারাপ আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার এবং ত্রাণ বিতরণের কাজে যতগুলো সরকারি হেলিকপ্টার ছিল তার সবকটাকেই ব্যবহার করা হচ্ছে৷ কিন্তু নানা প্রতিকূল প্রাকৃতিক সমস্যা জেঁকে ধরেছে খোদ উদ্ধারকারীদেরকেই৷ এর মধ্যে ভূমিধ্বস অন্যতম৷ ঠিক এই অবস্থায় বিদেশ সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে আসছেন প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি৷ বন্যার মধ্যে তার ইউরোপ সফর নিয়ে দেশে সমালোচনা উঠেছিলো৷ অন্যদিকে, বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বসবাসকারী প্রবাসী পাকিস্তানি নাগরিকরা নিজেরাই অর্থ সংগ্রহ করে দেশে বন্যায় আক্রান্তদের জন্য পাঠাতে শুরু করেছেন৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ