1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বড়দিন উৎসব নিয়ে ইউরোপে দুশ্চিন্তা

২৫ নভেম্বর ২০২০

করোনা ভাইরাসের টিকা প্রায় হাতের নাগালে চলে এলেও ডিসেম্বর মাসে ইউরোপে করোনা সংক্রমণের হার আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে৷ জার্মানিসহ একাধিক দেশ ছুটির সময় কড়াকড়ি শিথিল করার কথা ভাবছে৷

https://p.dw.com/p/3lmmG
সান্তার মুখে মাস্ক
ছবি: SvenSimon/picture alliance

ইউরোপীয় ইউনিয়ন করোনা ভাইরাসের একাধিক টিকা কেনা ও বিতরণের উদ্যোগ নিলেও এই মুহূর্তে তার সুফল পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই৷ শীতের মাসগুলিতে সংক্রমণ বেড়ে চলায় সদস্য দেশগুলি নানা রকম পদক্ষেপ নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেবার চেষ্টা করছে৷ আসন্ন বড়দিনের উৎসব উপলক্ষ্যে পারিবারিক সমাবেশ ‘সুপারস্প্রেডার ইভেন্ট’ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা বাড়ছে৷ প্রশাসনিক নিষাধাজ্ঞার মাধ্যমে ধর্মীয় ও সামাজিক ভাবাবেগে ‘আঘাত’ করা উচিত কিনা, সে বিষয়ে বিতর্ক চলছে৷

জার্মানির ১৬টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা সম্মিলিতভাবে কিছু পদক্ষেপ সম্পর্কে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন৷ বর্তমান ‘লকডাউন লাইট’-এর মেয়াদ ২০শে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বড়দিনের ছুটি ঘোষণা করে স্কুল বন্ধ করতে চান তাঁরা৷ তবে বড়দিন উৎসব উপলক্ষ্যে ২৩শে ডিসেম্বর থেকে সর্বোচ্চ ১০ জনের সমাবেশের অনুমতির প্রস্তাবও দিয়েছেন তাঁরা৷ এই সময়কালে ট্রেনের সংখ্যা বাড়িয়ে যাত্রীদের মধ্যে ব্যবধান বজায় রাখার উদ্যোগ নেওয়া হবে৷ স্কুলে মাস্ক পরার নিয়ম ও বর্ষবরণ উৎসবে আতসবাজি পোড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ তবে বার ও রেস্তোরাঁ আপাতত বন্ধই রাখা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ সেই লোকসান পূরণ করতে জার্মানির সরকারকে ডিসেম্বর মাসে প্রায় ১,৭০০ কোটি ইউরো ভরতুকি দিতে হবে৷ নভেম্বর মাসে সেই লক্ষ্যে ১৪ থেকে ১৫ হাজার কোটি ইউরো বরাদ্দ করা হয়েছিল৷

বুধবার চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে আলোচনার পর আগামী পদক্ষেপগুলি চূড়ান্ত করা হবে৷ ম্যার্কেল নিজে আরও কড়া পদক্ষেপের পক্ষে হলেও মুখ্যমন্ত্রীদের চাপে তিনি এতকাল কড়াকড়ি বাড়াতে পারেন নি৷ বিশেষ করে ক্রিসমাসের সময় সমাবেশের নিয়ম শিথিল করে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক বাড়ছে৷ সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য না হলে কোনো পদক্ষেপ কার্যকর হবে না বলে অনেক রাজনৈতিক নেতা মন্তব্য করেছেন৷ উল্লেখ্য, জার্মানির দৈনিক সংক্রমণের সর্বেশেষ হার ১৮,৫০০-রও বেশি৷


বড়দিনের সময় ব্রিটেনেও কড়াকড়ি শিথিল করা হচ্ছে৷ ফলে সর্বোচ্চ তিনটি পরিবারের সদস্যরা মিলিত হতে পারবেন৷ এমন ‘ক্রিসমাস বাবল’-এর আওতায় এমন তিনটি পরিবারকে অন্যান্য পরিবারের সঙ্গে মেলামেশা করতে দেওয়া হবে না৷

বড়দিনের উৎসবের পাশাপাশি পাহাড়ে স্কি করার প্রচলিত রীতির কারণেও করোনা সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে৷ ইটালির প্রধানমন্ত্রী জুসেপে কন্টে করোনা সংক্রমণের ‘তৃতীয় ঢেউ’ এড়াতে সে দেশে স্কি করার ছুটি বাতিল করার ঘোষণা করেছেন৷ তিনি ইউরোপীয় স্তরে এ ক্ষেত্রে সমন্বয়ের উদ্যোগ নিলেও অস্ট্রিয়া ইউরোপ জুড়ে স্কি-র উপর নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করছে৷ অথচ সে দেশের ইশিগ্ল নামের স্কি কেন্দ্রে চলতি বছরের শুরুতে করোনা ভাইরাসের অন্যতম প্রধান ‘হটস্পট’ দেখা গিয়েছিল৷ সেই উৎস থেকে জার্মানিসহ একাধিক দেশে সংক্রমণের হার বেড়ে গিয়েছিল৷

  

ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইেয়েন বলেছেন, করোনা ভাইরাসের টিকা ছাড়পত্র পেলে সব সদস্য দেশ একই সময়ে সেই টিকা হাতে পাবে৷ বুধবার মডার্না কোম্পানির সঙ্গে ইইউ কমিশন ১৬ কোটি পর্যন্ত টিকা কেনার চুক্তি স্বাক্ষর করতে চলেছে৷ এখনো পর্যন্ত ইউরোপের কোনো দেশে করোনা টিকা বাধ্যতামূলক করতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি৷ তবে প্রায় সব দেশই প্রথমে স্বাস্থ্যকর্মী ও উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন মানুষের জন্য টিকার ব্যবস্থা করছে৷ স্পেন বিনামূল্যে টিকা বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ তবে জানুয়ারি মাসের আগে প্রায় কোনো দেশেই বড় আকারে টিকা বিতরণের সম্ভাবনা নেই৷

এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)