1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফের রকেট হামলা বাগদাদের মার্কিন দূতাবাসে

২৭ জানুয়ারি ২০২০

রবিবার ফের রকেট হামলা হলো বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসে। তবে ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি। হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনো গোষ্ঠী।

https://p.dw.com/p/3WqzN
ছবি: Getty Images/AFP/A. Al-Rubaye

মাঝে কিছু দিন শান্ত ছিল পরিবেশ। রবিবার ফের রকেট হামলা হল বাগদাদে মার্কিন দূতাবাস লক্ষ্য করে। তবে ঘটনায় কারও মৃত্যু হয়নি বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। আক্রমণের নিন্দা করে বিবৃতি প্রকাশ করেছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদিল আব্দুল মাহদি।

ইরাকি প্রশাসন জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রবিবার বিকেলে বাগদাদের সুরক্ষিত গ্রিন জোনে পর পর তিনটি রকেট হামলা হয়। কিন্তু তাতে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এক ব্যক্তির সামান্য আহত হওয়ার কথা একই সঙ্গে জানানো হয়। তবে ইরাকি প্রশাসন তাদের বিবৃতিতে মার্কিন দূতাবাসের কথা উল্লেখ করেনি। পরে মার্কিন প্রশাসন জানায়, আক্রমণ হয়েছিল তাদের দূতাবাস লক্ষ্য করেই। কিন্তু তাতে দূতাবাসের কোনও ক্ষতি হয়নি।

মার্কিন পার্লামেন্টে পররাষ্ট্র নীতির প্রধান মাইকেল ম্যাককল বিবৃতি দিয়ে বলেন, 'অ্যামেরিকা পুরো বিষয়টির দিকে নজর রাখছে।'

মাইকেল জানিয়েছেন, ইরাকে অবস্থিত মার্কিন সেনা, কূটনীতিক এবং সাধারণ মানুষের সুরক্ষা বিষয়ে মার্কিন প্রশাসন গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। ইরাকে তাদের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, তার জন্য প্রশাসন সব রকম ব্যবস্থা করছে। ইরাক সরকারেরও বিষয়টির দিকে নজর রাখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রবিবার মার্কিন দূতাবাস লক্ষ্য করে তিনটি কাটিউশা রকেট ছোড়া হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আক্রমণের দায় স্বীকার করেনি কেউ। মার্কিন প্রশাসন ঘটনার জন্য সরাসরি ইরানকে দায়ী না করলেও, পরোক্ষে তেহরানকে ফের হুঁশিয়ার করেছে। বলা হয়েছে, ইরান সমর্থিত বেশ কিছু গোষ্ঠী লাগাতার বাগদাদে মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। অ্যামেরিকা এর প্রত্যুত্তর দেবে।

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদিল আব্দুল মাহদিও রবিবার একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, 'ইরাকের প্রশাসন ঘটনার তদন্ত করবে। অপরাধীদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা হবে। ইরাকে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিগুলিতে ফের যাতে এমন হামলার ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়েও লক্ষ্য রাখবে ইরাকি প্রশাসন।'

মাহদি বিবৃতি দিলেও ইরাকে মার্কিন সেনার উপস্থিতি নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, বিদেশি সেনার উপস্থিতির ফলে ইরাকের সার্বভৌমত্ব নষ্ট হচ্ছে। অবিলম্বে দেশ থেকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি সরিয়ে নিতে হবে। বস্তুত, কয়েক সপ্তাহ আগে ইরাকের পার্লামেন্টও একটি প্রস্তাব পাশ করেছিল। তাতে বলা হয়েছিল, দেশ থেকে সমস্ত বিদেশি সেনাকে সরিয়ে দিতে হবে। জার্মানি সহ বহু দেশ তার পরেই ইরাক থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে। প্রাথমিক ভাবে সৈন্য সরানোর কথা জানিয়েছিল অ্যামেরিকাও। কিন্তু পরে তারা ফের বিবৃতি প্রকাশ করে জানায়, ইরাক থেকে সৈন্য সরানোর কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তার পরেই বাগদাদের অদূরে মার্কিন সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালিয়েছিল ইরান প্রভাবিত একটি গোষ্ঠী। তারও আগে ইরান সরাসরি হামলা চালিয়েছিল মার্কিন সেনা ঘাঁটিতে। ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে অ্যামেরিকা দাবি করলেও ইরান জানিয়েছিল, রকেট হামলায় অন্তত ৮০ জন মার্কিন সেনা নিহত হয়েছেন।

কিছু দিন আগে বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসেও হামলা চালিয়েছিল ইরান সমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠী। ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি দূতাবাসের সামনে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যার উত্তরে অ্যামেরিকা বাগদাদে ড্রোন হামলা চালিয়ে হত্যা করেছিল ইরানের প্রভাবশালী জেনারেল কাসিম সোলেইমানিকে। তার পরেই মধ্য প্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে দুই দেশই পরিস্থিতি হালকা করার চেষ্টা করে। কিন্তু রবিবারের ঘটনার পর বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ফের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হল। অ্যামেরিকা যদি এর জবাব দেয়, তাহলে ফের আগুন ছড়ানোর সম্ভাবনা তৈরি হবে।

এসজি/জিএইচ (সিএনএন, রয়টার্স)