ফিলিস্তিনি সমঝোতা: ভালোর মন্দ, না মন্দের ভালো?
২৮ এপ্রিল ২০১১কায়রোয় ফাতাহ'র আলোচনাকারী দলের প্রধান আজ্জম আল-আহমদ যা বলেছেন, তা হল এই যে, নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সরকার তৈরী করা হবে, যে সরকার প্রেসিডেন্ট এবং সংসদীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে৷ মাস আটেকের মধ্যে সেই নির্বাচন করা হবে এবং আরব লীগ এই সমঝোতা চুক্তির বাস্তবায়নের দেখাশোনা করবে৷
ফাতাহ-হামাসের নতুন বেরাদরি সম্পর্কে ইসরায়েল বলছে, এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি নিশ্চিত হবে না৷ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বিনিয়ামিন নেতানিয়াহু তো হুমকিই দিয়েছেন যে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে হয় ইসরায়েলের সাথে শান্তি, নয়তে হামাসের সাথে শান্তি বেছে নিতে হবে৷ উভয়ের সাথে শান্তি সম্ভব নয়৷
ফাতাহ এবং হামাস উভয়েই নেতানিয়াহু'র চরমপত্র প্রত্যাখ্যান করেছে৷ ফাতাহ'র আহমদ বলেছেন, ‘আবু মাজেন' - অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস - ‘বলেছেন আমরা হামাসকে চাই, হামাস ফিলিস্তিনের জাতীয় সত্তার অংশ'৷ হামাসের মুখপাত্র তাহের আল-নুনো বলেছেন, ফিলিস্তিনি সমঝোতার সঙ্গে ইসরায়েলের কোনো সম্পর্কে নেই, বরং ইসরায়েল তার বাধাই হয়ে এসেছে৷
ওদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও তো খুব গরজ দেখাচ্ছে না৷ হোয়াইট হাউস যথারীতি হামাসকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন' বলে অভিহিত করেছে এবং বলেছে, যে কোনো ফিলিস্তিনি সরকারকে হিংসা বর্জন করতে হবে৷ এক মার্কিন কর্মকর্তা যোগ করেছেন, এছাড়া অতীতের শান্তিচুক্তিগুলি মেনে চলতে হবে এবং ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে হবে৷ ওদিকে কায়রো থেকে হামাস প্রতিনিধিদের কাছ থেকে যা শোনা গেছে, তা'তে নতুন মধ্যকালীন ফিলিস্তিনি সরকারের ইসরায়েলের সাথে আলাপ-আলোচনারই কোনো অধিকার নেই৷
এখন প্রশ্ন হল, ফাতাহ এবং হামাসের এই হৃদয় পরিবর্তন ঘটল কি করে৷ যে আলোচনার ফলে এই সম্প্রীতি, সেটা মিশরে৷ হোসনি মুবারক যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন এবং হামাসের প্রতি বিশেষ ধৈর্য প্রদর্শন করেননি৷ মিশরের নতুন প্রশাসন সে তুলনায় হামাসের প্রতি অনেক বেশি ধৈর্যশীল৷ এছাড়া সিরিয়াতেও এখন গণ-অভ্যুত্থান চলেছে৷ হামাসের নেতৃত্বের একাংশের অবস্থান ঐ সিরিয়াতেই৷ কাজেই তার ফলেও হামাস পুরোপুরি গাজা স্ট্রিপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার শঙ্কায় রয়েছে৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম