1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রাণীরা যখন ফ্যাশনের প্রতীক

২১ জুন ২০১৮

সোশ্যাল মিডিয়া আর বিজ্ঞাপনের জগতে আজ যা ফ্যাশনেবল, কাল তা নাও থাকতে পারে৷ বিশেষ করে জীবজন্তুদের ক্ষেত্রে এ কথা প্রযোজ্য৷ প্যাঁচা থেকে কিংবদন্তির একশৃঙ্গ, আলপাকা থেকে স্লথ – ফ্যাশনের চাকা ঘুরেই চলে৷

https://p.dw.com/p/2zzTu
ছবি: privat

বড় বড় চোখ, তার ওপর ঝাঁকড়া চুল – এই প্রাণীর নাম আলপাকা! আসলে এক ধরনের উট৷ আপাতত সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে তাদের ভীষণ কদর৷ আলপাকা নাকি ২০১৮ সালের ‘ট্রেন্ড’ হতে চলেছে৷

ফ্যাশন, ট্রেন্ড আর ব্র্যান্ডিং বিশেষজ্ঞ টোমাস নয়েবনার বলেন, ‘‘আলপাকাদের দেখতে এমন যে, গোড়া থেকেই মানুষজনের তাদের ভালো লাগে৷ বড় বড়, গোল চোখ, বিটলেদের মতো চুল, কোনো পণ্যের বিজ্ঞাপনের জন্য আঁকার সময় একটু বাড়িয়ে নেওয়া যায়৷ এছাড়া আলপাকাদের আরো একটা বৈশিষ্ট্য হল, ওরা বেশ ত্যাঁদড়, কারো পরোয়া করে না৷ কাছে যাবার সময় লোকে ভাবে, ‘বাঃ, কী মিষ্টি দেখতে!' কিন্তু ঘটে ঠিক তার উলটো: হয় কামড়াতে আসে, নয়তো থুথু ছেটায়৷’’

আলপাকার ফ্যাশন

সোশ্যাল নেটওয়ার্কে আলপাকাকে বিশেষ করে কেক তৈরির ডেকরেশন হিসেবে পাওয়া যাবে, ডু-ইট-ইয়োরসেল্ফ পাতাগুলোয় আলপাকার ছড়াছড়ি৷ উলকি হিসেবেও আলপাকা খুব জনপ্রিয়৷ তবে যারা আরো এক ধাপ এগোতে চান, তারা নিজের বিয়ের জন্য আলপাকা ভাড়া করতে পারেন৷

কাজেই আলপাকা ধীরে ধীরে ট্রেন্ড হয়ে উঠছে৷ কিন্তু একটি জীব ট্রেন্ড হয় কেন ও কীভাবে? টোমাস নয়েবনার বলেন, ‘‘কোনো জীবজন্তু যে ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা বোঝা যায় এ থেকে যে, তাকে সোশ্যাল মিডিয়ার সর্বত্র দেখা যায়৷ বিজ্ঞাপন কোম্পানিগুলো তা দেখে জীবটিকে তাদের নানা পণ্যের মার্কেটিং-এর জন্য ব্যবহার করতে শুরু করে৷’’

ফ্যাশনেবল জীব

আলপাকার আগেও অনেক জীব ফ্যাশনেবল হয়েছে এবং বিদায় নিয়েছে৷ গত বছর যেমন ইউনিকর্ন বা একশৃঙ্গ যাবতীয় পণ্যের উপর ডেকরেশেন হিসেবে শোভা পাচ্ছিল৷ তার বছর দু'য়েক আগে ফ্যাশনেবল ছিল প্যাঁচা৷ ফ্লেমিঙ্গো পাখির বাজার যেমন আগেও ছিল, এখনও আছে৷

এ বছর যে আলপাকার চাহিদা বাড়ছে, তা ড্যুসেলডর্ফে আলপাকার স্টলটি দেখলেই বোঝা যায়৷ আগ্রহীরা এখানে আলপাকা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারেন৷ আলপাকাটিকে লাগাম পরিয়ে এক চক্কর হেঁটেও আসতে পারেন – তার মধ্যেই তারা আলপাকার ফ্যান হয়ে যাবেন৷ কেউ বলেন, ‘‘ওরা এতো মিষ্টি, এতো নরম, এতো ভালো৷ ওদের সাথে হাঁটতে যাওয়াটা খুব সহজ, খুব আরামের৷ ওদের দেখলেই সেটা বোঝা যায়৷’’ অনেকে মনে করেন, ‘‘আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় এতো বেশি আলপাকা দেখা যায় – আমার ওদের চিরকালই খুব মিষ্টি বলে মনে হয়৷ এছাড়া আলপাকাদের নাচ নিয়ে ভিডিওটা আছে, ওটা সত্যিই খুব মিষ্টি৷’’ কেউ বলেন, ‘‘আমার ওদের খুব রিল্যাক্সিং লাগে, কেননা ওদের সবসময়ে দেখা যায় না৷ এছাড়া ওদের কুকুর, বেড়াল কিংবা ইঁদুরের চেয়ে অন্যরকম দেখতে৷ বড় বড় চোখ আর দাঁত নিয়ে ওদের সবসময় এতো মিষ্টি আর সহজ-সরল লাগে!’’

আলপাকাদের আদি নিবাস দক্ষিণ অ্যামেরিকার আন্দেস পর্বতাঞ্চলে৷ ওদের এক আত্মীয় হল লামা, যদিও তারা আলপাকাদের চেয়ে বড় এবং ভারী৷ দু'টি জীবকেই ঐ এলাকার আদিম উপজাতিক বাসিন্দারা পোষ মানিয়েছে: লামাকে ব্যবহার করা হত মাল টানার জন্য; আলপাকা পালা হতো তার নরম পশমের জন্য৷

কাজেই আন্দেস পর্বতমালা থেকে ট্রেন্ড ফেয়ার – সর্বত্র আলপাকার অগ্রগতি৷ কিন্তু এই ট্রেন্ড কি বজায় থাকবে? নাকি ইতিমধ্যেই অন্য কোনো জীব ফ্যাশনেবল হতে শুরু করেছে – যেমন দক্ষিণ অ্যামেরিকার স্লথ নামের অতি শ্লথগতির প্রাণীটি?

অ্যালিস কোন/এসি