1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রাণিজগতের রেসিং কার

৬ অক্টোবর ২০১৪

যেমন সুন্দর, তেমন সাবলীল, তেমন তার ক্ষিপ্রতা৷ বিজ্ঞানীরা এবার এই মার্জার ফেরারি-র বনেট খুলে দেখেছেন, ইঞ্জিনটা কী ভাবে চলে৷ ও রকম আচমকা দৌড় দিতে তার বেশি পরিমাণ শক্তি খরচ হয় না তো?

https://p.dw.com/p/1DPgh
Bildergalerie Iranische Geparden
ছবি: Morteza Eslami Dehkordi

আসল কথা হল, আফ্রিকায় চিতাবাঘের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে কমে এসেছে এবং বিজ্ঞানীরা তার কারণ বোঝার চেষ্টা করছেন৷ সেই গবেষণার ফলাফল এবার প্রকাশিত হয়েছে ‘সায়েন্স' পত্রিকায়৷ গবেষকরা দু'সপ্তাহ ধরে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বটসোয়ানা-র দু'টি এলাকায় ১৯টি বন্য, মুক্ত চিতাবাঘের গতিবিধির উপর নজর রেখেছেন৷ তাঁরা চিতাবাঘগুলিকে আইসোটোপ-যুক্ত জলের ইনজেকশন দেওয়ার পর, পরে জন্তুগুলির মলমূত্র বিশ্লেষণ করে দেখেছেন৷

বিজ্ঞানীদের যা চমকে দেয়, তা হল এই যে, দৃশ্যত চিতাদের তাদের শিকার, অর্থাৎ গ্যাজেল কিংবা ইম্পালা জাতীয় হরিণদের পিছনে দৌড়তে গিয়ে অপেক্ষাকৃত কম শক্তি খরচ করতে হয়৷ অথচ স্তন্যপায়ী জীবদের মধ্যে বিশ্বের দ্রুততম প্রাণী হল এই চিতাবাঘ: শূন্য থেকে ঘণ্টায় ষাট মাইল স্পিডে পৌঁছতে তাদের লাগে মাত্র তিন সেকেন্ড – যা কিনা প্রায় একটা উঁচুদরের ফেরারি গাড়ির মতোই! অবশ্য চিতারা এই গতি বেশিক্ষণ বজায় রাখতে পারে না, তাই তাদের এক দৌড়েই শিকার ধরতে হয়, দম ফুরিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত৷

গবেষকদের সংগৃহীত তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে যে, চিতারা এ ভাবে শিকার ধরার জন্যই তৈরি৷ ও রকম দৌড়ের পর তাদের হাঁপ নিয়ে সুস্থ হতেও বেশি সময় লাগে না – অর্থাৎ তাদের জীবনধারার বিশেষ কোনো হেরফের হয় না৷ আরেকটি সাধারণ বিশ্বাস হল: যেহেতু সিংহ বা হায়েনার মতো জন্তুরা চিতাদের শিকার কেড়ে নেয়, সেহেতু চিতাদের শিকার ধরতে ও খাদ্য সংগ্রহ করতে বড় বেশি সময় ও শক্তি ব্যয় করতে হয়৷ বিজ্ঞানীদের তথ্য দেখাচ্ছে, এ বিশ্বাসও ভ্রান্ত৷

বস্তুত চিতাদের সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম হয় শিকারের খোঁজে হাঁটাহাঁটি করায় – কেননা মানুষের বসতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চিতাদের হ্যাবিট্যাট বা বাসস্থানের ক্ষতি হয়েছে; উন্মুক্ত তৃণভূমি কমে এসেছে, পড়েছে কাঁটাতারের বেড়া; বেড়েছে মানুষের শিকার, যা কিনা আবার চিতারও শিকার৷ কাজেই চিতাদের সব মিলিয়ে দিনে ত্রিশ কিলোমিটার হাঁটতে হচ্ছে: গ্রীষ্মের গরমে জল ছাড়া বালিয়াড়ির উপর দিয়ে মাইলের পর মাইলের হাঁটা চিতাবাঘের পক্ষেও সুখকর অভিজ্ঞতা নয়৷

একশো বছরের মধ্যে আফ্রিকায় চিতার সংখ্যা এক লাখ থেকে কমে দশ হাজারে দাঁড়ানোর পিছনে হয়তো একটাই ব্যাখ্যা আছে: সেটা হল মানুষ৷

এসি/এসবি (রয়টার্স)