প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষকদের তথ্য দেয়ার সহজ উপায়
৬ এপ্রিল ২০২২চার এলাকা একটি বামা গ্রাম৷ সেখানকার কৃষকরা তাদের ফোনে রেডিও অনুষ্ঠান শুনতে পারেন, যেখানে চারটি ভাষায় কৃষি সংক্রান্ত তথ্য পরিবেশন করা হয়৷ ‘ট্রান্সমিশন এয়া এ ট্যার' নামের ঐ অনুষ্ঠানে শ্রোতাদের কৃষিকাজ সংশ্লিষ্ট বাস্তব পরামর্শ দেয়া হয়৷
কৃষক আদিদজাতা কুলিবালি বলছেন, ‘‘রেডিও অনুষ্ঠানের কারণে সার কীভাবে ভালোভাবে প্রয়োগ করা যায় তা জানতে পেরেছি৷’’ আরেক কৃষক জাকারিয়া ঐদ্রাগো বলেন, ‘‘আমরা ‘পকেট এফএম' সম্পর্কে শুনেছি এবং কীভাবে কাজ করে জেনেছি৷ খুব ভালো উদ্যোগ৷ সবচেয়ে ভালো বিষয় হচ্ছে, মাত্র কয়েক ক্লিকের মাধ্যমে পুরনো অনুষ্ঠান শোনা যায়৷ এটা দারুণ একটা ফিচার৷’’
এর পেছনের প্রযুক্তিটা সাধারণ৷ পোর্টেবল রেডিও ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে কৃষকরা বিনামূল্যে অনুষ্ঠান শুনতে পারেন৷ এর জন্য ডাটা কিংবা সিম কার্ড প্রয়োজন হয় না৷ যেটা জরুরি, সেটা হচ্ছে ছয় কিলোমিটারের মধ্যে থাকা৷
প্রকল্পের অন্যতম পার্টনার রেডিও স্টেশন বামা পিলের অনুষ্ঠান ধানখেতের মধ্যে শোনা যায়৷ কিছু অনুষ্ঠান পরে অন-ডিমান্ডেও শোনা যায়৷ ফলে যারা সরাসরি শুনতে পারেন না কিংবা যাদের রেডিও নেই তারাও অনুষ্ঠান শুনতে পারেন৷ কৃষকেরা ছাড়াও কৃষি বিশেষজ্ঞরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন৷
রেডিও বামা পিলের মডারেটর কাইক কোনে বলেন, ‘‘গাছ লাগানোর আগে মাটি কীভাবে তৈরি করতে হবে সে বিষয়ে আমরা কথা বলি৷ এছাড়া খেত ও পানিপথের মধ্যে কতখানি দূরত্ব রাখতে হবে সে নিয়েও কথা হয়৷ কীটনাশকের ব্যবহার, মাটিতে এর প্রভাব এবং গাছের উপর তার নেতিবাচক প্রভাব নিয়েও আলোচনা করি আমরা৷’’
কৃষকরা কী বিষয়ে জানতে আগ্রহী, তা বুঝতে অনুষ্ঠানের প্রোডিউসাররা নিয়মিত কৃষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন৷ যেমন এই কৃষকেরা বীজ বা বেশি ফলন দেয় এমন সার সম্পর্কে জানতে আগ্রহী৷ মাটি কীভাবে রক্ষা করা যায় তাও তারা জানতে চান৷
প্রকল্পের প্রধান উসেনি বানসি বলেন, ‘‘যারা নতুন ও গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন সম্পর্কে জানতে পেরেছেন তারা আমাদের সেগুলো জানান৷ তারা বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখেন৷ প্রায়ই তারা আমাদের এমন মানুষদের নিয়ে অনুষ্ঠান করতে বলেন, যারা নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ৷ অর্থাৎ আমাদের অনুষ্ঠানের উপকরণের উপর বামার কৃষকদের ভালো প্রভাব আছে৷’’
প্রকল্পের যন্ত্রপাতি জার্মানির এক পার্টনারের কাছ থেকে এসেছে৷ জার্মানির উন্নয়ন সংস্থা জিআইজেড এতে অর্থায়ন করেছে৷ দরিদ্র মানুষ বাস করে এবং যেখানে রেডিও শোনা যায় না, এমন জায়গায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়৷ মিডিয়া ইন কোঅপারেশন অ্যাণ্ড ট্রানজিশন কর্মকর্তা জেরেমি উইলিয়াম বাতিওনো বলেন, ‘‘আমরা বন্দোকুই, বামা, ডিবুগু ও ক্যাসকেড অঞ্চলে পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি৷ এটা এত সফল হয়েছে যে, আগামী কয়েক সপ্তাহ ও মাসের মধ্যে আমরা পুরো বুর্কিনা ফাসোতে এটা চালু করতে চাই৷’’
ভবিষ্যতে ভিডিও ক্লিপও বানানো হবে - যেটা ইন্টারনেট ছাড়াই দেখা যাবে৷ সবজির রোগ ও কীভাবে এ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, সে বিষয়ে একটি অনুষ্ঠানের শ্যুটিং এখন চলছে৷ তবে যতই মাল্টি-মিডিয়ার ব্যবহার হোক না কেন, পকেট এফএম সবসময় কৃষকদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, এমন বিষয় নিয়ে কথা বলে যাবে৷
কুলিবালি, গেবহার্ট/জেডএইচ