প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬৪
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭২০১৬ সালের তথ্য নিয়ে জরিপটি করেছে তারা৷
‘বাংলাদেশ হেলথ ইনজুরি সার্ভে-২০১৬ (বিএইচআইএস)' শিরোনামে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়৷ প্রকল্পের পরিচালক ফারুক আহমেদ ভুইয়া ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা দুর্ঘটনায় এবং আঘাতে মৃত্যু নিয়ে এই জরিপ চালিয়েছি৷ তাতে দেখা যায়, প্রতি বছর বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ হাজার ১৬৬ জন নিহত হন৷ আর তাতে প্রতিদিন গড়ে নিহতের সংখ্যা ৬৪ জন৷''
২০১৬ সালের তথ্য নিয়ে করা জরিপে দেখা যায়, প্রতি বছর আত্মহত্যা কারেন ২৩ হাজার ৮৬৮ জন, পানিতে ডুবে মারা যায় ১৯ হাজার ২৪৭ জন, উচু স্থান থেকে পড়ে মারা যায় ১৫ হজার ৪৫ জন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৯ হাজার ২১০ জন এবং সরাসরি হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ৬ হাজার ৪৭৫ জন৷
এর আগে ২০০৩ সালে একটা জরিপ করা হয়েছিল৷ তাতে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু (১৮ বছরের নীচে) শিশু মারা যায় ৯ জন৷ কিন্তু এবারের জরিপে সেই সংখ্যা ১৪ জন৷
প্রতিদিন ১৪ টি শিশু সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলেও প্রাপ্ত বয়স্ক নিহত হন ৫০ জন৷ নিহতের হিসেবে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাপ্ত বয়স্ক নিহতের সংখ্যা সর্বোচ্চ৷
সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপঘাতে প্রতিদিন বাংলাদেশে ৩০০ মানুষ নিহত হন৷ পঙ্গু হন ৬৬০ জন৷
ফারুক আহমেদ ভুইয়া জানান, সড়ক দূর্ঘটনার চিত্রই সবচেয়ে ভয়াবহ, কারণ, ‘‘এতে নিহতের সংখ্যা বাড়ছে৷''
এর কারণ জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এর জন্য যে শুধু চালকদের বেপরোয়া ড্রাইভিংই দায়ী, তা নয়৷ এর পিছনে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, সড়ক, যাত্রী ও পথচারীদের অসচেতনতা অনেকাংশে দায়ী৷''
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোয়াজ্জেম হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, সড়ক দুর্ঘনায় প্রতি বছর বাংলাদেশের জিডিপি'র ২ শতাংশ ক্ষতি হয়৷ বাংলাদেশের জিডিপি ১৭ লাখ কোটি টাকা৷ তার ২ শতাংশের পরিমান ৩৪ হাজার কোটি টাকা৷ তবে এই ক্ষতি বাস্তবে আরো বেশি৷
তিনি আরো বলেন, ‘‘সড়ক দুর্ঘটনায় দীর্ঘ মেয়াদে যে আর্থিক ক্ষতি হয় তা আমরা এই হিসেবের মধ্যে ধরি না৷ একে বিনিয়োগে ভাটা পড়ে৷ আতঙ্কের কারণে পর্যটনসহ নানা শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে৷ বছরে ৩৪ হাজার কোটি টাকার ক্ষতির মধ্যে এর হিসাব নেই৷ আমরা এই ক্ষতির কথা বলছি আহত বা নিহত ব্যক্তির সম্ভাব্য আয়, চিকিৎসা খরচ ও সম্পদের ক্ষতি হিসাব করে৷''
অন্যদিকে বাংলাদেশে সাংবাদিকতা পেশায় নিযুক্তরা পেশাগত কারণেই সড়ক দূর্ঘটনার শিকার হন বেশি৷ কিন্তু তা নিয়ে আলাদা কোনো গবেষণা নেই৷ তাঁদের জন্য আলাদাভাবে কোনো চিকিৎসা বা ক্ষতিপুরণের ব্যবস্থাও নেই৷