প্রকাশ্যে মলত্যাগ বন্ধ করতে পেরেছে বাংলাদেশ
২৩ জুলাই ২০১৬কিন্তু গত এক দশকে পরিস্থিতি বদলে গেছে৷ ঢাকার একটু বাইরে রশিদা বেগমের গ্রাম এবং আরো অনেক জায়গায় এখন আর মানুষকে জঙ্গলে যেতে হয়না প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে৷ টয়লেট নির্মাণে জোর প্রচারণা এবং প্রকাশ্যে মলত্যাগের কুফল সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশটির সরকার সফলতা পেয়েছে৷ ২০০৩ সালে যেখানে দেশটির ৪২ শতাংশ মানুষ প্রকাশ্যে মলত্যাগ করতো, বর্তমানে সেই হার কমে হয়েছে মাত্র এক শতাংশ৷
বর্মি গ্রামের বাসিন্দা বেগম বলেন, ‘‘একসময় পাশের বাগান বা জঙ্গলে গিয়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়াটা ছিল আমাদের অভ্যাস৷ এখন এটা একটা লজ্জার ব্যাপার৷ এমনকি আমাদের শিশুরাও এখন আর প্রকাশ্যে মলত্যাগ করে না৷ আর এটা আমাদের তাদেরকে বলেও দিতে হয়নি, তারা নিজেরাই শিখেছে৷''
স্যানিটেশনে বাংলাদেশের এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে বড় ধরনের অর্থায়ন৷ এক্ষেত্রে প্রচারণা বাড়াতে বেশ বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় করেছে সরকার৷ ফলে প্রতিবেশী দেশ ভারত যে কাজে এখনো সাফল্য পায়নি, বাংলাদেশ পেয়েছে৷
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক-এর আকরামুল ইসলাম এই বিষয়ে বলেন, ‘‘সরকার একটা বড় অঙ্গীকার করেছে৷ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বরাদ্দকৃত অর্থ একেবারে দরিদ্রদের কাছে, অর্থাৎ যাঁদের বাড়িতে কোনো শৌচাগার নেই, তাঁদের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে৷''
সরকারের প্রকৌশলীরাও গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদ এবং অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে মিলে সাধারণ মানুষকে বুঝিয়েছেন, বাড়িতে শৌচাগার থাকা কেন স্বাস্থ্য সুরক্ষার অন্যতম শর্ত৷
তবে শৌচাগার নিশ্চিত করা গলেও সমস্যা এখনো পুরোপুরি কাটেনি৷ ওয়াশিংটনভিত্তিক পানি, স্যানিটেশন এবং হাইজিন বিষয়ক সংস্থা পিএসআইয়ের পরামর্শক জন সাওয়ার জানান, মানুষ টয়লেট ব্যবহার করলেও মানববর্জ্য শেষ পর্যন্ত কোথায় ফেলা হচ্ছে, সেটাও দেখার বিষয়, কেননা, এসব বর্জ্য মাটির নীচে থাকা পানি দূষিত করলে কিংবা শিশুরা যে মাঠে খেলে বা যে মাঠে ফসল ফলানো হয়, সেখানে ফেলা হলে, তা ক্ষতিকরই থেকে যাবে৷
বিশেষ করে বাংলাদেশের শহরাঞ্চলের কথা উল্লেখ করে সাওয়ার আরো বলেন, ‘‘আমাদের অবশ্যই দেখতে হবে মানববর্জ্য কোথায় যাচ্ছে, সেগুলো কোন উপায়ে ধ্বংস বা পুনরায় ব্যবহার করা হচ্ছে৷''
এআই / এসিবি (এপি)