1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সন্তুষ্ট মার্কিন জোট

সমীর কুমার দে, ঢাকা২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ক্রেতাদের সমন্বয়ে গঠিত পোশাক কারখানা পরিদর্শন জোট ‘অ্যালায়েন্স’ গত এক বছর কারখানা পরিদর্শন করে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে৷ পোশাক খাতের উন্নয়নে সংস্থাটি এই কার্যক্রম চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/1DG9N
ছবি: DW/C. Meyer

অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে এই কথা জানানো হয়েছে৷ এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অ্যালায়েন্সের এক বছরের কার্যক্রমের পর্যালোচনা নিয়ে সম্প্রতি একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়৷ ঐ বৈঠকে অ্যালায়েন্সের প্রধান এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কংগ্রেস সদস্য অ্যালেন টসার বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাতের উন্নয়নে অ্যালায়েন্স গঠনের পটভূমি তুলে ধরেন৷ এসময় যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর জর্জ মিশেল, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশের শ্রমিক নেতাদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন৷

Rana Plaza Katastrophe
বিজিএমইএ'র হিসাবে রানা প্লাজা দুর্ঘটনা পরবর্তী সময়ে ২০৯টি কারখানা বন্ধ হয়েছেছবি: Reuters

বৈঠকে অ্যালেন টসার বিভিন্ন পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, গত এক বছরে এই জোটের কার্যক্রমে তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে৷ তাদের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, শতভাগ কারখানা (৫৮৭টি সবগুলো) ইতিমধ্যে পরিদর্শন সম্পন্ন হয়েছে৷ এর মধ্যে অর্ধেক কারখানার সংস্কার কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে৷

পরিদর্শনের সময় ঝুঁকি বিবেচনায় ১৪টি কারখানা আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ বন্ধ হওয়া কারখানার শ্রমিকদের বেতনের অর্ধেক অংশ অ্যালায়েন্স পরিশোধ করেছে৷

আগের কথা

রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহলের সমালোচনার প্রেক্ষিতে অ্যামেরিকাভিত্তিক ২৬টি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত হয় ‘অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার সেফটি' – সংক্ষেপে যেটা অ্যালায়েন্স নামে পরিচিত৷ জোট গঠিত হওয়ার এক বছরের মধ্যে জোটের সদস্যদের অর্ডার সরবরাহ করে এমন বাংলাদেশি কারখানা পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত হয়৷ সেই সঙ্গে ঝুঁকির মাত্রা বিবেচনায় ৫ বছরের জন্য কারখানা সংস্কারে একটি তহবিলও গঠন করা হয়৷

অ্যালায়েন্সের পাশাপাশি ‘অ্যাকর্ড' নামে ইউরোপভিত্তিক ক্রেতাদের সমন্বয়ে গঠিত আরেকটি জোটও কারখানা পরিদর্শন কার্যক্রম চলমান রেখেছে৷

অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য শুরুতেই প্রতিষ্ঠানগুলো ৫ কোটি মার্কিন ডলারের তহবিল গঠন করেছিল৷ এর বাইরে কারখানা ভবন সংস্কারে আরো ১০ কোটি ডলার স্বল্প সুদে ঋণ তহবিল এবং সম্প্রতি আরো কয়েকটি কোম্পানি মিলে আরো ২ কোটি ডলারের তহবিল গঠন করেছে৷ এই তহবিল থেকে আগামী ৫ বছর কারখানা ভবন সংস্কারে উদ্যোক্তাদের স্বল্প সুদে ঋণ দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে৷

আরও কারখানা বন্ধের আশঙ্কা

পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর তথ্য মতে, সাব-কন্ট্রাক্টিং করে এমন কারখানাগুলো ক্রমেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে৷ আসছে ঈদের পরও এমন অনেকগুলো কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ গত বছর রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর প্রায় ৪ শতাধিক ছোট গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে৷

তবে গার্মেন্টস কারখানা বন্ধের বিষয়ে কমপ্লায়েন্স ইস্যুর চেয়ে মালিকরা বাড়তি উৎপাদন খরচ এবং পোশাকের দাম বৃদ্ধি না হওয়ার কারণকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন৷ তাঁদের মতে, কমপ্লায়েন্স করতে যেমন খরচ বাড়ে, তেমনি বর্ধিত মজুরি প্রদান এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজার ধরতে গিয়ে টিকে থাকাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে৷ যে কারণে মালিকদের অনেকেই এদিকে নজর দিচ্ছে না৷ ফলে স্বল্প পুঁজি ও ছোট পরিসরে গড়ে উঠা কারখানাগুলো প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না৷

বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ'র এক হিসাবে দেখা গেছে, ২০১৩ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া বেশিরভাগ কারখানাই শেয়ারড ভবনে (গার্মেন্টস কারখানার পাশাপাশি অন্য কার্যক্রমও চলে এমন ভবন) এবং সাব-কন্ট্রাক্ট ভিত্তিতে কাজ করত৷ কিন্তু বন্ধ হওয়া এসব কারখানার শ্রমিকদের বেতনভাতাদি অপরিশোধিতই রয়ে যাচ্ছে৷

বিজিএমইএ'র হিসাবে রানা প্লাজা দুর্ঘটনা পরবর্তী সময়ে ২০৯টি কারখানা বন্ধ হয়েছে৷ এর বাইরে বিকেএমইএ'র সদস্যভুক্ত কারখানাগুলোর মধ্য থেকে আরো ১৯৩টি কারখানা বন্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের কর্মকর্তারা৷

শ্রমিক বিক্ষোভ

সম্প্রতি আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার সোনিয়া ফাইন নিট নামে একটি কারখানার শতাধিক শ্রমিক রাজধানীর বিজিএমইএ ভবনের সামনে পাওনা পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ করেন৷ কারখানার মালিক এনায়েত উদ্দিন মাহমুদ কায়সার ডয়চে ভেলেকে বলেন, আইন মেনেই ঐ কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে৷ শ্রমিক এবং ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা অন্যায্যভাবে পিস রেট বাড়ানোর দাবি করছিল৷ কারখানা চালু রাখার বিষয়ে তাদের বিন্দুমাত্র সহানুভূতি নেই৷ শেষ পর্যায়ে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, শ্রমিকরা সকালে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যাবে আর মাস শেষে তাদের বেতন দিতে হবে৷ এভাবে তো আর কারখানা চালু রাখা যায় না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য