1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে সাত নম্বর দফা চালু

২১ ডিসেম্বর ২০১৭

ইউরোপীয় মূল্যবোধ ও আইনের শাসন লঙ্ঘনের অভিযোগে লিসবন চুক্তির সাত নম্বর সূত্র কার্যকর করা হচ্ছে৷ আপাতত সতর্কতামূলক হলেও, পরে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, এমনকি ইইউ-তে পোল্যান্ডের ভোটাধিকার স্থগিত রাখাও সম্ভব৷

https://p.dw.com/p/2pkk9
Brüssel EU Vizepräsident Frans Timmermans
ছবি: Imago/ZUMA Press/W. Dabkowski

কমিশন ইইউ-এর সদস্যদেশগুলিকে বলেছে যে, পোল্যান্ডে বিচারবিভাগীয় সংস্কারের ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সার্বজনীন মূল্যবোধ লঙ্ঘিত হওয়ার গুরুতর ঝুঁকি দেখা দিয়েছে৷

টুইটারে পোস্ট করা একটি বিবৃতিতে কমিশন বলেছে, ‘‘দু'বছর ধরে গঠনমূলক সংলাপের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, পোল্যান্ডে আইনের শাসন গুরুতরভাবে ব্যাহত হওয়ার একটি স্পষ্ট ঝুঁকি আছে৷''

‘‘পোল্যান্ডে বিভিন্ন বিচারবিভাগীয় সংস্কারের অর্থ, দেশের বিচার ব্যবস্থা এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ শাসক দলের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণে৷ বিচারবিভাগের স্বাধীনতা ছাড়া কার্যকরিভাবে ইইউ-এর আইন প্রয়োগ করা নিয়ে আন্তরিক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে,'' বলে কমিশন যোগ করে৷

পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আঞ্জ্রেই দুদা ইইউ-এর বক্তব্যকে অসত্য বলে প্রত্যাখ্যান করেন ও বলেন যে, কমিশনের সাত নম্বর দফা সক্রিয় করার প্রচেষ্টা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত৷

‘‘ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠানগুলির অনেক কর্মকর্তা পোল্যান্ড সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলে থাকেন – তাঁরা মিথ্যাভাষণ করছেন৷ ওরা যখন বলেন যে, পোল্যান্ডে কিছু কিছু পরিবর্তনের ফলে আইনের শাসন লঙ্ঘিত হতে পারে, তখন ওরা মিথ্যে কথা বলছেন, কেননা আমরা গণতান্ত্রিক মানের উন্নতি ঘটাচ্ছি,'' দুদা পোল্যান্ডের পোলস্যাট বোসরকারি টেলিভিশন সংস্থাকে বলেন৷

‘‘দুঃখজনকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের গতিবিধিতে প্রচুর পরিমাণ ভণ্ডামি রয়েছে, বলে আমার বিশ্বাস৷ বলতে আমার দুঃখ লাগছে, কিন্তু আমার তাই মত,'' দুদা যোগ করেন৷

১৩টি আইনে ১৩ বার লঙ্ঘন

পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিরস্কারমূলক পদক্ষেপ সূচিত করার সময় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রান্স টিমারমান্স বলেন যে, পোল্যান্ডের ক্ষমতাসীন আইন ও ন্যায় দল বা ‘পিস' গত দু'বছরে ১৩টি আইন পাস করে এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, যেখানে রাষ্ট্র বিচার বিভাগের ‘‘গঠন, ক্ষমতা, প্রশাসন ও কর্মপ্রক্রিয়ায় নিয়মিতভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে৷''

পোল্যান্ডেরসবচেয়ে বিতর্কিত সংস্কারগুলির মধ্যে একটি হলো, সরকার সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের নিয়োগে প্রেসিডেন্টকে অধিকতর ক্ষমতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন৷ নির্বাচনের ফলাফল নিশ্চিত করাও সুপ্রিম কোর্টের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে৷

এই সব বিচারবিভাগীয় পদক্ষেপ আইনের শাসনের ক্ষতি করছে, ইইউ প্রশাসন পোল্যান্ডকে এই মর্মে তিনবার সতর্ক করে দেওয়া সত্ত্বেও ওয়ারশ সেই সাবধানবাণী উপেক্ষা করেছে৷

ইইউ-এর সদস্যদেশগুলিকে এখন চার-পঞ্চমাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা কমিশনের সাত নম্বর দফা চালু করার সুপারিশ সমর্থন করে কিনা৷

‘পিস' নাছোড়বান্দা

পিস দলের মুখপাত্রী বেয়াটা মাজুরেক কমিশনের সাত নম্বর দফা সক্রিয় করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে এই বলে যে, ঐ সিদ্ধান্তের পিছনে ‘‘কোনো যুক্তি নেই'' এবং তা ‘‘শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত৷''

আইনমন্ত্রী জ্বিগনিয়েভ জিয়ব্র বলেছেন যে, পোলিশ সরকারকে ‘‘সংস্কার চালিয়ে যেতে হবে৷'' বিচারবিভাগীয় সংস্কারের অংশ হিসেবে জিয়ব্র মুখ্য সরকারি কৌঁসুলি হিসেবেও কাজ করছেন৷

বুধবার ইইউ-এর তিরস্কারের কয়েক ঘণ্টা পরেই দুদা আপত্তিকর বিচারবিভাগীয় সংস্কার সংক্রান্ত দু'টি বিলে স্বাক্ষর করে সেগুলিকে আইনে পরিণত করেন৷ প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিরোধী রাজনীতিকরা বলেন যে, সরকার ‘‘ইইউ-এর সঙ্গে যুদ্ধে নেমেছেন৷''

ইতিমধ্যে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী জল্ট সেমিয়েন কমিশনের সিদ্ধান্তের নিন্দা করে বলেছেন যে, বুদাপেস্ট সব ধরনের শৃঙ্খলামূলক পদক্ষেপে ভেটো প্রয়োগ করে পোল্যান্ডকে ‘‘রক্ষা'' করবে৷

পোল্যান্ডের জাতীয়তাবাদি-রক্ষণশীল সরকার বিচারবিভাগীয় সংস্কারের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বলেছেন যে, পোল্যান্ডের আদালতগুলির পরিবর্তন প্রয়োজন, কেননা তারা অকার্যকারী ও কমিউনিস্ট আমলের মনোবৃত্তিতে পরিপূর্ণ৷

জার্মানি সাত নম্বর দফা প্রয়োগের সপক্ষে

টিমারমান্সের ঘোষণার আগেই জার্মান সরকার বলেন যে, কমিশন যদি পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রক্রিয়া সূচিত করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে বার্লিন তা সমর্থন করবে৷

‘‘কমিশন ঐ সিদ্ধান্তে এলে, আমরা তা সমর্থন করব,'' জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের মুখপাত্র স্টেফান সাইবার্ট বুধবার সকালে সাংবাদিকদের বলেন৷ ইতিপূর্বে খবর ছিল যে, ফ্রান্সও কমিশনের পদক্ষেপকে সমর্থন করবে৷

এসি/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)