পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠন ইস্যু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক
২৯ ডিসেম্বর ২০১০ভারতের দক্ষিণা রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশ খন্ডিত হবে না অখন্ড থাকবে সে সম্পর্কে রিপোর্ট পেশ করবেন সুপ্রিম কো্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিটি আগামী শুক্রবার৷ কমিটি পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্যের পক্ষে বা বিপক্ষে যে রায়ই দেন, বিষয়টি এতই স্পর্শকাতর যে তাতে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেবার আশঙ্কা ষোল আনা৷ সেক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেয়া যাবে প্রধানত তাই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ড: মনমোহন সিং আজ মন্ত্রীসভার এক বিশেষ বৈঠক ডাকেন৷ যোগ দেন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি. চিদাম্বরম, প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ.কে অ্যান্টনি ও আইনমন্ত্রী বিরাপ্পা মইলি৷ স্থির হয় রাজ্যে আরো নিরাপত্তা বাহিনী পাঠানো হবে শান্তি রক্ষায়৷
বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, রিপোর্টে এই বিতর্কিত ইস্যুর এক স্থায়ী সমাধানের সুপারিশ করা হয়েছে যাতে তেলেঙ্গানা এবং অন্ধ্র, দুই অঞ্চলের মানুষের মনে কোন ক্ষোভ না থাকে, সম্প্রীতি বজায় থাকে৷ এজন্য কমিটি গত এগারো মাস ধরে দুই অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ব্যাপক কথাবার্তা বলেছেন৷ শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার দায়িত্ব অনেকাংশে নির্ভর করছে রাজনীতিবিদ ও মিডিয়ার ওপর, বলেন বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণ৷
ভারত স্বাধীন হলে তেলেঙ্গানা ছিল তৎকালীন স্বাধীন হায়দ্রাবাদ সামন্ত রাজ্যের অন্তর্গত৷ ১৯৪৮'এ হায়দ্রাবাদ ভারতের অঙ্গীভূত হবার পর ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তেলেঙ্গানা ছিল পৃথক রাজ্য৷ তারপর ভাষা-ভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন করা হলে তেলেগুভাষী তেলেঙ্গানা নিয়ে গঠিত হয় অন্ধ্রপ্রদেশ৷ গত ষাট বছর ধরে ঝুলে আছে তেলেঙ্গানা ইস্যু৷ কারণ রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ঐকমত্যের অভাব৷ পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে বিভিন্ন দল ক্ষমতায় এসেছে, কিন্তু কোন দলই কথা রাখেনি৷ তা সে বিজেপি হোক বা কংগ্রেস হোক বা তেলেগু দেশম পার্টি হোক৷ এই ইস্যুতে ছাত্র বিক্ষোভ হয় বহুবার৷ ৬৯-এ ছাত্রদের ওপর পুলিশ গুলি চালালে নিহত হয় ৩৬৯ জন৷ আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে গ্রেপ্তার হয় হাজার হাজার ছাত্র৷
গত বছর মনমোহন সিং সরকারের জোটসঙ্গী তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি সরকার থেকে বেরিয়ে যায়৷ পরে তেলেঙ্গানা রাজ্যের দাবিতে তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির প্রধান কে.চন্দ্রশেখর রাও আমরণ অনশন শুরু করলে কেন্দ্রীয় সরকার পৃথক তেলেঙ্গানার দাবি নীতিগতভাবে মেনে নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির সহমতের কথা বলেন৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক