পুলিশ কেন টার্গেট হচ্ছে
৪ নভেম্বর ২০১৫
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া চেকপোস্টে সকাল আটটার কিছু আগে দু'টি মোটরসাইকেল থামিয়ে তল্লাশি করতে গেলে সঙ্গে সঙ্গে দুই মোটরসাইকেলে থাকা ছয় জন নেমে তাদের ব্যাগে থাকা চাপাতি দিয়ে পাঁচ পুলিশ সদস্যকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায় ৷ তাদের মধ্যে শিল্প পুলিশের কনস্টেবল মুকুল হোসেন ঘটনাস্থলেই নিহত হন৷
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পুলিশ কনস্টেবল পিনাকুজ্জামান বলেন, ‘‘আমাদের সবার হাতেই অস্ত্র ছিল, কিন্তু আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়৷ প্রতিরোধেরও সুযোগ পাইনি৷''
ঘটনার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, ‘‘এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড৷ আগে যারা পুলিশ হত্যা করেছে এটা তাদেরই কাজ৷ তারা পুলিশের মনোবল ভেঙে দিয়ে দেশে অস্বাভাবিক পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে৷''
মানবাধিকার নেতা এবং আইন ও সালিশ (আসক) কেন্দ্রের পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা নিশ্চিত যে পুলিশের ওপর এই হামলা পরিকল্পিত৷ যারা হামলা করছে তারা পুলিশের মেরুদণ্ড ভেঙে দুর্বল করে দিতে চাইছে৷''
তাদের উদ্দেশ্য কী হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘তারা দেশে একটা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়৷ এটা দিয়ে কাদের লাভ হবে বা কারা এর নেপথ্যে আছে তা এখনো নিশ্চিত করে বলা মুশকিল৷ তবে আমি মনে করি ব্লগার হত্যা, বিদেশি হত্যা এবং পুলিশ হত্যা আলাদাভাবে দেখার কোন সুযোগ নেই৷ এগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়৷''
তিনি বলেন, ‘‘এরা প্রমাণ করতে চাইছে সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও তারা পরোয়া করেনা৷ হত্যা করতে পিছপা হয়না৷ আর এটা দিয়ে তারা চূড়ান্তভাবে ভয়ের পরিবেশ করতে চাইছে৷ এটা সরকার যত হালকাভাবে নেবে তত পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাবে৷''
নূর খান বলেন, ‘‘দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে কোনো কোনো পক্ষের যেমন রাজনৈতিক লাভ আছে, তেমনি বিদেশি কোনো কোনো শক্তি লাভবান হবে৷ আর এটা থামাতে হলে সরকারকে রাজনৈতিক সমাধানের দিকে যেতে হবে৷ দেশে যে গণতন্ত্রহীনতা এবং রাজনীতিতে বিচ্ছিন্নতা চলছে তা দূর করতে হবে৷''
পাঠক, দুর্বৃত্তরা পুলিশকে কুপিয়ে মেরে বাংলাদেশে কী পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়? নীচে আপনার মতামত লিখুন৷