পুটিন জনসমর্থন হারাচ্ছেন, দাবি নাভালনির
৯ মার্চ ২০২২গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট পুটিন ইউক্রেন আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর থেকে রাশিয়া-জুড়ে ১৩ হাজার ৬৫০ জন যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই অবস্থায় রাশিয়ার মানুষকে যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে বললেন জেলবন্দি নেতা নাভালনি।
নাভালনি টুইট করে বলেছেন, ''রাশিয়ার মানুষ পুটিনের ইউক্রেন আক্রমণ সমর্থন করছে কি না, এই প্রশ্নের জবাবই একুশ শতকের ইতিহাসে রাশিয়ার অবস্থান ঠিক করে দেবে।''
'রক্তাক্ত অভিযান শেষ হোক'
নাভালনি মোট ১৪টি টুইট করেছেন। তাতে তিনি বলেছেন, ''পুটিন যেভাবে ইউক্রেনের সাধারণ মানুষকে মারছেন, জীবনধারণের পক্ষে অতি-প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো ধ্বংস করছেন, তা যদি রাশিয়ার মানুষ সমর্থন করেন, সেটা এক কথা। আর যদি রাশিয়ার মানুষ পুটিনের এই অভিযানের বিরোধিতা করেন, তাহলে কাহিনিটা পুরো বদলে যায়।''
নাভালনি লিখেছেন, ''জনমত এখন পুটিনের দিক থেকে সরে যাচ্ছে।'' তিনি তার সহযোগীদের করা একটি জনমত সমীক্ষার ফলাফল তুলে ধরে বলেছেন, ''পুটিন দ্রুত জনসমর্থন হারাচ্ছেন। রাশিয়া আগ্রাসনকারী, এই অভিমত আগের চেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে। আর যারা মনে করেন, রাশিয়া আসলে শান্তিপ্রতিষ্ঠার জন্য এই কাজ করছে, তাদের সংখ্যা কমে অর্ধেক হয়েছে।''
নাভালনির বক্তব্য, ''এই পরিবর্তনের বার্তাটা স্পষ্ট, মানুষ বুঝতে পারছেন এই বিরোধ উসকে দেয়ার জন্য কারা দায়ী। কেন যুদ্ধ করা হয়েছে, তার ফল কী হবে সেটাও মানুষ বুঝতে পারছেন।''
'ক্রেমলিন উদ্বিগ্ন'
নাভালনি টুইট করে দাবি করেছেন, ''রাশিয়ার মানুষের এই মনোভাব দেখে ক্রেমলিন উদ্বিগ্ন। যত তারা নার্ভাস হচ্ছে, ততই বেপরোয়া হয়ে যাচ্ছে।''
নাভালনি এখন জালিয়াতির অভিযোগে আড়াই বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। তিনি ও তার সহযোগীরা অবশ্য দাবি করেছেন, জালিয়াতির সব অভিযোগই মিথ্যা ও বানানো। নাভালনির দাবি, তাকে জেলে রাখার কারণ, তিনি যাতে পুটিন-বিরোধী বিক্ষোভ সংগঠিত করতে না পারেন, সেটা নিশ্চিত করা।
গত মাসেই রাশিয়ার কর্মকর্তারা নাভালনির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তিনি তার রাজনৈতিক সংগঠনের ৪৭ লাখ ডলার চুরি করেছে। যদি এই নতুন মামলাতেও তিনি দোষী প্রমাণিত হন, তাহলে তাকে আরো দশ বছর জেলে থাকতে হবে।
নাভালনি চান
নাভালনি চান, ''যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদ যেন না থামে, প্রতিবাদ যেন চলতেই থাকে। তিনি টুইট করে বলেছেন, যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদ এখন গতি পাচ্ছে। কোনো পরিস্থিতিতেই তা যেন না থামানো হয়। মানুষকে এই লড়াই নিয়ে সত্যিকারের তথ্য জানাতে হবে।''
গত সপ্তাহেই পুটিন যে আইনে সম্মতি দিয়েছেন, তা হলো, ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান নিয়ে 'মিথ্যা খবর' প্রকাশ করলে কারাদণ্ড হবে। এর প্রভাব স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের উপর পড়েছে। আর ডিডাব্লিউ সহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও সংবাদসংস্থাকে রাশিয়া ব্লক করে দিয়েছে। ফেসবুক ও টুইটারের উপরেও সেখানে কোপ পড়েছে। এর ফলে স্বাধীন সূত্র থেকে খবর পাওয়ার সুযোগ রাশিয়ার মানুষের কাছে বিশেষ থাকছে না।
জন সিল্ক/জিএইচ