পাহাড়ে জুম চাষ

বান্দরবানে জুমঘেরা পাহাড়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা একটি বসতি৷ তিন পার্বত্য জেলায় ৩৫ হাজারেরও বেশি জুমিয়া পরিবার এই জুম চাষের সঙ্গে জড়িত৷

খাগড়াছড়ির মহালছড়ির এক পাহাড়ের গাছপালা পোড়ানো হচ্ছে জুম চাষের জন্য৷ চাষ পদ্ধতি এক হলেও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কাছে জুম চাষ আলাদা নামে পরিচিত৷ জুম চাষকে চাকমা ভাষায় জুম, মারমা ভাষায় ইয়াঁ, ত্রিপুরা ভাষায় হুগ, ম্রো ভাষায় উঃঅ, খিয়াং ভাষায় লাই, বম ভাষায় লাও বলা হয়৷

খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে পাহাড়ের গায়ে জুম চাষ করছেন ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের মানুষ৷ ভারী বৃষ্টির পর পাহাড়ের মাটি খুঁড়ে রোপণ করা হয় বিভিন্ন ফসল৷ জুমের ফসলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো নানাজাতের ধান, কুমড়া, অড়হড়, শিম, শশা, করলা, ঢেঁড়শ, তিল, ভুট্টা, আদা, যব, তুলা, হলুদ, পাহাড়ি আলু, কচু, ইত্যাদি৷

বান্দরবানে জুম চাষের ফলে গাছপালা শূন্য পাহাড়৷

রাঙ্গামাটির নানিয়ারচরের পাহাড় থেকে জুমের ফসল তুলছেন চাকমা সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ৷ জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত জুমের ফসল কাটার মৌসুম৷

রাঙ্গামাটির সাজেকে পাহাড় থেকে জুমের ফসল নিয়ে ফিরছেন ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের এক বৃদ্ধ৷

রাঙ্গামাটির সাজেকের কংলাক পাহাড়ে জুমের চাল ঝাড়ছেন এক ত্রিপুরা নারী৷

জুম চাষে পাহাড়ের বন উজাড় হলেও অনেক পাহাড়েই নতুন নতুন বনাঞ্চল গড়ে তুলেছে বাংলাদেশের বন বিভাগ৷ রাঙ্গামাটির মানিকছড়ির এই বনাঞ্চল এরকমই একটি উদাহরণ৷

রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে কাপড় বুনছেন ত্রিপুরা নারীরা৷ পাহাড়ে বসবাসরত সব ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীই কাপড় বুননসহ নানান শৈল্পিক কাজে অভিজ্ঞ৷ এসব জনগোষ্ঠীকে আরো প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাঁদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা যেতে পারে৷

বান্দরবানের শৈলপ্রপাত এলাকায় নিজেদের তৈরি কাপড় ও হস্তশিল্প সামগ্রীর পসরা সাজিয়েছেন স্থানীয় বম সম্প্রদায়ের নারীরা৷ পাহাড়ে তৈরি এসব পণ্যের দেশে ও বিদেশে বেশ সমাদর রয়েছে৷ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ পেলে এইসব সম্প্রদায় তাদের কাজের বিস্তৃতি ঘটাতে সক্ষম হবেন৷

রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় পানি খেলায় ব্যস্ত মারমা তরুণীরা৷ এই পানি খেলা বা জলকেলি উৎসব মারমা সম্প্রদায়ের প্রধান উৎসব, যা পালন করা হয় নববর্ষে৷

বান্দরবানের রুমা উপজেলার বেথেলপাড়ায় ঐতিহ্যবাহী বাঁশ নৃত্য পরিবেশনে বম তরুণীরা৷