‘নাস্তিকদের' লেখা বাতিলের দাবি
৫ মে ২০১৬তারা প্রয়াত লেখক হুমায়ূন আজাদের একটি কবিতাকে ‘ইসলামবিরোধী' বলে সেটাও পাঠ্যপুস্তক থেকে সরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে৷ শুধু তাই নয়, তাদের দাবি পূরণ না হলে দাবি আদায়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার কথাও বলেছে তারা৷
ইসলামি ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এখনকার শিক্ষানীতিও বাতিল করতে হবে৷''
তাঁর দাবি, ‘‘পাঠ্যপুস্তক থেকে ইসলামি ভাবধারার মুসলিম লেখকদের প্রবন্ধ ও গল্প-কবিতা বাদ দিয়ে নাস্তিক্যবাদী , ব্রাহ্মণবাদী, বিধর্মী ভাবাদর্শের রচনা, গল্প ও কবিতা সংযোজন করা হয়েছে৷''
তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্য বইয়ে হুমায়ূন আজাদের লেখা ‘বই' নামের একটি কবিতা সংযোজন করা হয়, যা পবিত্র কোরআন ও ইসলামবিরোধী বলে পরিচিত৷ এটা বাদ দিতে হবে৷''
তাঁর কথায়, ‘‘উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে যৌনশিক্ষা অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে৷ পাঠ্যপুস্তক থেকে এই যৌনশিক্ষা বাদ দিতে হবে৷ আমাদের সমাজ এবং ধর্মের সঙ্গে পাঠ্যপুস্তকে এই ধরনের শিক্ষার ব্যবস্থা রাখা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়৷''
আব্দুল লতিফ নেজামী কতগুলো প্রবন্ধ, কবিতা ও গল্পের নাম বলে বলেন, ‘‘পাঠ্য বইয়ে জাতীয় আদর্শিক চেতনা, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য শিক্ষানীতির প্রতিফলন ঘটেনি৷ বরং ধর্মীয় চিন্তা-চেতনা বিবর্জিত সেক্যুলার ও সমাজতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনা সৃষ্টির পাঁয়তারা প্রকট করে তোলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে৷''
এর আগে বুধবার সকালে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে লতিফ নেজামী পাঠ্য বইয়ে ভারতের পর্যটন ‘স্পট' পালামৌয়ের ভ্রমণকাহিনি বাতিলের দাবি জানান৷ তিনি নবম-দশম শ্রেণিতে বাউলদের নিয়ে লেখা ‘সময় গেলে সাধন হবে না' নামক বইটিকে ‘বাউলদের যৌনাচারের' বই বলে অভিহিত করেন৷ এছাড়া তিনি পাঠ্য বই থেকে রামায়নের সংক্ষিপ্ত কাহিনি বাদ দেয়ারও দাবি জানান৷
বাংলাদেশের ধর্মীয় পটভূমিকে স্মরণে রেখে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার সিলেবাস প্রণয়নের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘জোর করে বিপরীতমুখী শিক্ষানীতি ও আইন চাপিয়ে দেয়া হলে তা টিকবে না৷''
লতিফ নেজামী ডয়চে ভেলের অন্য একটি প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘আমাদের দাবির সঙ্গে দেশের সব ইসলামি দল একমত৷ আশাকরি সরকারও একমত হবে৷ নয়ত আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে বাধ্য করা হবে৷'' প্রসঙ্গত হেফাজতে ইসলাম এবং জামায়াতে ইসলামীও একই ধরনের কথা বলে শিক্ষানীতি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে৷
এদিকে শিক্ষানীতি অনুযায়ী, নতুন এই পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের সময় জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র চন্দ৷ তিনি চারমাস হলো অবসরে গেছেন৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘শিক্ষানীতির আলোকে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করা হয়েছে৷ এটা একক কোনো কাজ নয়৷ আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, গৌরব – সব দিক খেয়াল রেখেই পাঠ্য বই প্রণয়ন করা হয়েছে৷ এর বেশি কিছু আমি বলতে পারব না৷''
এ বিষয়ে জানতে পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিয়া এনামুল হক সিদ্দিকীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি৷
আপনাদের কী মনে হয়? পাঠ্যপুস্তক থেকে এ ধরনের লেখা, গল্প বাদ দেয়া উচিত? জানান আমাদের, লিখুন নীচের ঘরে৷