পাচার করা অর্থ ফেরত আনা প্রায় অসম্ভব
২০ জুন ২০২২অর্থ ফিরিয়ে আনা কতটা কঠিন, সে প্রসঙ্গে জার্মানির ইহুদিদের উদাহরণ দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, জার্মানিতে হিটলার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ইহুদিরা দেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করে৷ তখন তারা নিজেদের অর্থ ও সোনা সুইস ব্যাংকগুলোতে গচ্ছিত রাখে৷ কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সুইস ব্যাংকগুলো সেই অর্থ ফেরত দেয়নি৷ এর বহুকাল পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইহুদি লবির চাপে সুইস ব্যাংকগুলো সেই অর্থ ও সোনার খবর জানাতে বাধ্য হয়৷ বাংলাদেশ সরকারের তো সেই ক্ষমতা নেই, ফলে আমাদের পক্ষে সেই অর্থ ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয় বলেই মনে করেন পরিকল্পনামন্ত্রী৷
টাকা যাতে দেশ থেকে বেরোতে না পারে, সেই চেষ্টা করা উচিত বলে জানান মন্ত্রী ৷ তবে কেন এই সুযোগ দেওয়া হলো , সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নর জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, ‘‘চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনি’’ ৷ তবু আশা ছিল সরকারের, যদি তারা কিছুটা ধর্মের কথা শোনে৷’
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গতকাল ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও র্যাপিড আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন ৷ অনুষ্ঠানে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে উপস্থাপনা দেন র্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক মো. আবু ইউসুফ৷
কালোটাকা সাদা করা বা পাচার হওয়া টাকা ফেরত এলে তা সাধারণত আবাসন খাত ও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ হয়৷ কিন্তু এই প্রবণতার বিপদও আছে বলে মত দেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান
রাহমান৷ তিনি বলেন, এ কারণে বাজারে কৃত্রিম বুদ্বুদ তৈরি হয়৷ ২০০৭-০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যে কালোটাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ হয়েছিল, তার ফলে ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে ধস নামে ৷ সেই বাজার এখনো স্বাভাবিক হয়নি ৷
প্রথম আলোর অনলাইন প্রধান শওকত হোসেন অর্থমন্ত্রী অনেক ক্ষেত্রেই অসহায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, কিছু জায়গায় অর্থমন্ত্রীর পক্ষে ব্যয় হ্রাস করা একেবারেই সম্ভব নয়৷ এসব ব্যয় করার পর বাকি যা থাকে, তা দিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ব্যয় করতে হয়৷ কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, রাজস্ব আয় বাড়ছে না ৷ ব্যয়ের খাত আছে, কিন্তু আয়ের খাত কম ৷ সে জন্য তাঁর প্রস্তাব, সরকারি ব্যয় পর্যালোচনা কমিটি বা কমিশন গঠন করা হোক ৷
এনএস/কেএম (প্রথম আলো)