পাকিস্তানে হাজারাদের বন্দি জীবন
পাকিস্তানের কোয়েটায় হাজারাদের বাস৷ শিয়া সম্প্রদায়ের হাজারারা প্রায়ই সুন্নি জঙ্গি গোষ্ঠীর হামলার শিকার হন৷ তাদের নিরাপত্তায় উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা বসতি স্থাপন করেছে সরকার৷
হাজারা কারা
লোককাহিনি মতে, ত্রয়োদশ শতকে আফগানিস্তান দখল করতে যাওয়া চেঙ্গিস খান ও তাঁর সৈন্যদের বংশধর হচ্ছেন হাজারারা৷ তাই তাঁদের চেহারা পাকিস্তানিদের চেয়ে আলাদা৷ মূলত আফগানিস্তানে হাজারাদের বাস৷ তবে সেখান থেকে অনেকে পাকিস্তানে চলে যান৷ বর্তমানে কোয়েটায় অন্তত ছয় লাখ হাজারা বাস করেন৷
হামলার শিকার
হাজারারা মূলত শিয়া সম্প্রদায়ের৷ অথচ তাঁরা থাকেন সুন্নিপ্রধান আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে৷ তাই কোয়েটার হাজারারা প্রায়ই সুন্নি জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট ও নিষিদ্ধ ঘোষিত লস্কর-ই-জঙভি গোষ্ঠীর হামলার শিকার হন৷
নিরাপত্তা ব্যবস্থা
হাজারাদের রক্ষায় কোয়েটায় সরকারি উদ্যোগে দুটি বসতি স্থাপন করা হয়েছে৷ হাজারা টাউন ও মারি আবাদ নামের এই দুটি বসতি উঁচু দেয়ালে ঘেরা৷ সেখানে আসা-যাওয়ার পথে চেকপয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে৷
বন্দি জীবন
কোয়েটার বেশিরভাগ হাজারা ঐ দুই বসতিতে বসবাস শুরু করায় নিরাপত্তা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে৷ তবে এমন জীবনযাপনকে অনেকে বন্দিদশার সঙ্গেও তুলনা করছেন৷ যেমন আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী সরদার সাহিল (ছবি)৷ তিনি বলছেন, ‘‘চেকপোস্টগুলো আমাদের নিরাপত্তার জন্য বসানো হলেও আমাদের অন্য সম্প্রদায়ের চেয়ে বিচ্ছিন্ন মনে হয়৷ এক-দেড় দশক ধরে আমরা এমন বন্দি অবস্থায় আছি৷’’
ব্যবসা স্থানান্তর
কোয়েটার পাইকারি বাজারে অনেক হাজারা ব্যবসায়ীর বড় দোকান ছিল৷ কিন্তু নিরাপত্তার খাতিরে তাঁদের অনেকে ব্যবসা গুটিয়ে হাজার টাউন কিংবা মারি আবাদে চলে গেছেন৷
স্বপ্ন
বন্দি অবস্থায় থেকেও অনেক হাজারা স্বপ্ন দেখে থাকেন এবং তা পূরণের চেষ্টা করছেন৷ এশিয়ান গেমস কারাতেতে স্বর্ণ পাওয়া হাজার অ্যাথলেট নারগিস হাজারা বলছেন, ‘‘আমাদের প্রত্যেকের হৃদয়ে একটা স্বপ্ন, একটা লক্ষ্য আছে৷ সেটা হচ্ছে সারা বিশ্বে, বিশেষ করে পাকিস্তানে হাজারাদের ভাবমূর্তিতে পরিবর্তন আনা৷’’