পাকিস্তানে নিষেধাজ্ঞার শঙ্কায় ইমরানের দল
২৪ মে ২০২৩পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানিয়েছেন যে, তার সরকার ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নিষিদ্ধ করার উপায় খুঁজছে৷
গত ৯ মে দুর্নীতির অভিযোগে ইমরানকে গ্রেপ্তারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সহিংসতার মাঝেই এই ঘোষণা দেয়া হলো৷ রাজনীতিতে আসা বিশ্বকাপজয়ী সাবেক ক্রিকেটারকে অবশ্য পরবর্তীতে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়৷
গণমাধ্যমকর্মীদের আসিফ বলেন, ‘‘পিটিআইকে নিষিদ্ধের বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে৷ পিটিআই রাষ্ট্রের মূল ভিত্তিতে আঘাত করেছে, যা আগে কখনো হয়নি৷ এটা সহ্য করা হবে না৷''
ইমরান খান পাকিস্তান সরকার এবং ক্ষমতাশালী সামরিক বাহিনীর সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন৷ দেশটির ইতিহাসে সামরিক বাহিনীর রাষ্ট্র শাসন কিংবা বেসামরিক সরকারের উপর প্রভাব বিস্তারের দীর্ঘ নজির রয়েছে৷
সামরিক স্থাপনায় হামলার অভিযোগে ইমরানের অনেক সমর্থককে বিতর্কিত সামরিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করার উদ্যোগ নিয়েছে সেনাবাহিনী৷ তার সাত হাজারের মতো সমর্থককে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে ডয়চে ভেলের প্রতিনিধি হারুন জানজুয়া জানান, নিষেধাজ্ঞা আরোপের মতো কঠোর সিদ্ধান্ত সম্ভবত নেবে না ইসলামাবাদ৷
তিনি বলেন, ‘‘দলটিকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত কাজে আসবে বলে আমার মনে হয় না কারণ, বিচার বিভাগ সেই সিদ্ধান্ত বদলে দিতে পারে৷''
এদিকে, ইমরান খানের দলের অনেক নেতা এবং সমর্থক ঝামেলা এড়াতে দল ছেড়ে যাচ্ছেন বলেও জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদপত্র ডন৷ দলটির মুখপাত্র শিরিন মাজারি টানা কয়েকদিন হয়রানির শিকার হওয়ার পর পদত্যাগ করেছেন৷
তিনি জানান যে, ১২ দিন ধরে গ্রেপ্তার, মুক্তি, অপহরণ এবং আবারো মুক্তির অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন তিনি৷
মাজারি খানের দলের অন্যতম সাহসী কণ্ঠ ছিলেন যিনি সেনা সমর্থিত কর্তৃপক্ষ এবং গত বছরের এপ্রিলে ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রীত্ব হারানোর পেছনে সেটির ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করে নানা সময়ে জোরালো বক্তব্য রেখেছিলেন৷
পিটিআই দাবি করেছে যে, দলটির অনেক সদস্য জামিনে মুক্ত হওয়ার পর আবারো গ্রেপ্তার হয়েছেন৷
পুলিশ লাহোরে ইমরানের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর চেষ্টা করছে৷ তবে সত্তর বছর বয়সি সাবেক এই ক্রিকেটার পুলিশের দেয়া শর্ত মানছেন না৷ তার বাসভবন ঘিরে পুলিশ এবং পিটিআই সমর্থকদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে৷
ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে সংঘাতে এ পর্যন্ত অন্তত ১০ জন প্রাণ হারিয়েছেন৷ তবে তিনি জামিনে মুক্ত হওয়ার পর সংঘাত কমেছে৷ বর্তমানে তিনি নিজের বাসভবনে রয়েছেন৷ তার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির মামলা চলছে৷
প্রতিবেদন: রিচার্ড কনর/এআই