1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পশ্চিমা সাহায্য নিশ্চিতে ইউক্রেনে দুর্নীতির বিরুদ্ধেও যুদ্ধ

২৩ ডিসেম্বর ২০২২

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধেও লড়াই শুরু করতে হয়েছে ইউক্রেন সরকারকে৷

https://p.dw.com/p/4LMsJ
দনেৎস্কে বিধ্বস্ত এলাকায় ইউক্রেনেরে পতাকা উড়ছে৷
রাশিয়া ছাড়াও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়ছে ইউক্রেনছবি: Metin Aktas /AA/picture alliance

তথাপি, দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাগুলো পুরোনো অনেক মামলার আবার তদন্ত শুরু করেছে৷ এর মধ্যে রয়েছে, সরকারি বিদ্যুৎ প্রকল্পে ভোক্তাদের অতিরিক্ত এক বিলিয়ন ডলার অর্থ বেশি প্রদান এবং সরকার নিয়ন্ত্রিত এক তেল কোম্পানি থেকে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার চুরির৷

ইউক্রেনকে কতিপয় প্রভাবশালী ধনী গোষ্ঠীর হাত থেকে বাঁচাতে এবং দেশটির ভঙ্গুর প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষার জন্য নতুন এই লড়াই শুরু করা হয়েছে৷

এরই মধ্যে পাঁচ মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নেয়ার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে আটকাদেশ দেয়া হয়েছে৷ ‘‘দুর্নীতির বিপক্ষে লড়াইয়ে প্রতি সপ্তাহে ছোট-বড় কয়েকটি অগ্রগতি হচ্ছে,’’ বলছিলেন ভাদিম ভলকো, যিনি দুর্নীতির বিরোধী সরকারি কর্তৃপক্ষের কাজ তদারকি করছেন৷

শুধুমাত্র নভেম্বর মাসে তারা ৪৪টি নতুন ফৌজদারি মামলার তদন্ত শুরু করেছে, দুর্নীতির সাথে জড়িত সন্দেহে ১৭ জনের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করেছে এবং ছয়টি অভিযোগ বিচারের জন্য আদালতে প্রেরণ করেছে৷

দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের সাথে জড়িত অর্ধডজন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নিয়েছে রয়টার্স, যারা বলছে বড় ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর উদ্দেশ হলো দেশের সম্পদ রক্ষা করা৷ রাশিয়ার আক্রমণের মাঝেই তারা এটাকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে৷

বিশেষায়িত দুর্নীতিবিরোধী প্রসিকিউটরের অফিস রয়টার্সকে জানিয়েছে, গত এক বছরে ৪২টি মামলায় কমপক্ষে ১০৯ টি অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং ২৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে৷

তারা জানান, দেশের পুনর্গঠন পশ্চিমা দেশগুলো যে বিলিয়ন ডলার পাঠাবে তা নিশ্চিত করতে এই অভিযান পরিচালনা করা দরকার৷ ভবিষ্যৎ পুনর্গঠনে আরও অনেক অর্থ সাহায্য লাগবে বলে ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছে পশ্চিমা দাতারা৷

ভবিষ্যতে ইউক্রেনকে বহিরাক্রমণ থেকে রক্ষা ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ পেতে আলোচনার সূত্রপাত করতে হলে দুর্নীতির রাশ টেনে ধরা অনস্বীকার্য বলে তারা মনে করেন৷

‘‘এই মুহূর্তে ইউক্রেনের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্ভাব্য অংশীদার হিসেবে উপস্থাপন করা,’’ মন্তব্য করেন দুর্নীতিবিরোধী নীতি সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির প্রথম উপ-প্রধান ইরোস্লাভ ইউরচিশাইন৷

অভিযানকে সমর্থন করে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এ মাসে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে ইউক্রেন সমান্তরালভাবে দুর্নীতি ও রাশিয়ার আগ্রাসন- উভয়ের বিরুদ্ধেই লড়াই করবে৷

‘‘যুদ্ধের মাঝেই দেশের সংস্কার চলবে,’’ সাম্প্রতিক এক বক্তব্যে বলেন জেলেনস্কি৷

রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অস্ত্র সাহায্য করছে৷ ইউক্রেনকে দুর্নীতিমুক্ত করার অভিযানেও যুক্তরাষ্ট্র জোর সমর্থন দিয়েছে৷

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘‘জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য আমরা ইউক্রেন সরকারের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত৷’’

এদিকে, এ মাসে ইইউ-এর কাছ থেকে ১৮ বিলিয়ন ইউরো ছাড়াও আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার পাবেন বলে আশা করছেন ইউক্রেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর৷

কিন্তু অনেকের আশঙ্কা, ইউক্রেনকে দুর্নীতি মুক্ত করা কঠিন হবে আর তাই অর্থ সাহায্য দুর্নীতিতে বেহাত হতে পারে৷ কেননা, দুর্নীতির সূচকে ইউক্রেনের অবস্থান ১৮০ দেশের মধ্যে ১২২ তম৷

দুর্নীতিবিরোধী অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ইউক্রেনের নির্বাহী পরিচালক আন্দ্রেই বোরোভিচ৷ তবে তিনি বলেন, প্রকৃত সাফল্য আসবে যখন দুর্নীতিবাজদের বিচারের আওতায় আনা হবে এবং দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ পুনরুদ্ধার করা যাবে৷

একেএ/এসিবি (রয়টার্স)