1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরীমনির মামলায় নাসির গ্রেপ্তার

১৪ জুন ২০২১

নায়িকা পরীমনির মামলায় ঢাকা বোট ক্লাবের বিনোদন সম্পাদক ও ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদসহ পাঁচ জনকে উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দুপুরে তাদের গ্রেপ্তারের আগে সাভার থানায় ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলা করেন পরীমনি।

https://p.dw.com/p/3ush3
Indien PK Schauspielerin Shamsunnahar Smriti
ছবি: bdnews24.com

পরীমনির সঙ্গে ওই ঘটনার স্থান সাভারের  বিরুলিয়া এলাকার ঢাকা বোট ক্লাব। ৮ জুন রাতে তিনি সেখানে গেলে হত্যা ও ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হন। রোববার প্রথমে তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে ঘটনার বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চান। রাতে তিনি তার গুলশানের বাসায় অভিযোগের বিস্তারিত বর্ণনা দিতে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি অভিযোগ করেন,  প্রধান অভিযুক্ত ব্যবসায়ী নাসির নিজেকে আইজিপি বেনজীর আহমেদের বন্ধু পরিচয় দেন। ঘটনার পর ভোররাতে তিনি বনানী  থানায় অভিযোগ করতে গেলেও থানা মামলা নেয়নি। পরে তিনি বেনজির আহমেদের কাছে বার বার অভিযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।  পুলিশ সদর দপ্তরের  এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা জানান," এধরনের কোনো অভিযোগ নিয়ে কেউ আইজিপি মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করেননি।'' বনানী থানার ওসি নূরে আযম মিয়া ডয়চে ভেলের কাছে ঘটনার পর পরীমনির অভিযোগ নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে তিনি দাবি করেন," পরীমনি তখন মদ্যপ ছিলেন। অসুস্থ ছিলেন আরকি। সে কারণে অভিযোগ না নিয়ে হাসপাতলে পাঠিয়ে দেই। অসুস্থ কারুর কাছ থেকে আমরা অভিযোগ নিতে পারি না।”

নূরে আযম মিয়া

পরীমনি অভিযোগ করেন, নাসির আহমেদ ওই রাতে তাকে বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করেন। তার মুখের ভেতরে মদের বোতল ঢুকিয়ে দেন৷ পরীমনি বলেন," ঘটনার পর সবাই শুধু ঘটনা জানতে চেয়েছে। কিন্তু কেউ পাশে দাঁড়ায়নি।”

বিরুলিয়ার সেই বোট ক্লাবের সভাপতি আইজিপি বেনজীর আহমেদ। আর নাসির ইউ মাহমুদ ওই ক্লাবের বিনোদন ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক।

পরীমনির সংবাদ সম্মেলনের পর পরই পুলিশ সক্রিয় হয়ে ওঠে। রাতেই তার বাসায় পুলিশ যায়। তার প্রাথমিক জবানবন্দি নেয়। তারপর ঘটনাস্থল ঠিক করে তাকে সাভার থানায় মামলা করার পরামর্শ দেয়।

সোমবার সকালে সাভার থানায় মামলা হওয়ার পর পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ওই ক্লাবে অভিযান চালিয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কিন্তু সেখানে নাসির ইউ আহমেদকে তারা পাননি। পরে গোয়েন্দারা উত্তরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে নাসিরসহ পাঁচ জনকে আটক করে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ ডয়চে ভেলেকে জানান, উত্তরার যে বাসা থেকে নাসির ইউ আহমেদ ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হয় ওই বাসাটি ডিজে পার্টির জন্য তিনি ব্যবহার করতেন। সেখান থেকে বিদেশি মদ, ইয়াবা ও অন্যান্য মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে  ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা মামলার পাশাপাশি মাদক আইনেও মামলা হবে।”

হারুন অর রশীদ

তিনি বলেন," নাসির ও তার সহযোগীদের কোনো রকম ছাড় দেয়া হবে না। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আর বোট ক্লাবে ফের অভিযান চালানো হবে।”

বোট ক্লাবের সদস্য আবাসন ব্যবসায়ী নাসির ইউ আহমেদ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য। তবে উত্তরার বাসায় পুলিশ প্রবেশের পর সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে তিনি দাবি করেন," তার বিরুদ্ধে অসত্য অভিযোগ করা হয়েছে। তারা ক্লাবের সদস্য না হয়ে ক্লাবে ঢুকে বিদেশি ড্রিংকস নিতে চাইলে আমি বাধা দিই।”

বোট ক্লাবটির  সদস্য হতে এককালীন ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হয়। পরিচালনা পর্যদে ব্যবসায়ী শিল্পপতিরা আছেন। এই ঘটনায় ঢাকা বোট ক্লাব একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ক্লাবের সদস্য বখতিয়ার আহমেদ দাবী করেন," এরকম টুক টাক ঘটনা ঘটেই থাকে। আমরা পাত্তা দেই না।”

এদিকে নাসির গ্রেপ্তার হওয়ার পর পরীমনি বিকেল পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমে কথা বলেনি। তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তার বাসার সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায় রাতে তিনি তার বাসায় সংবাদ সম্মেলন করতে পারেন।