অ্যামেরিকার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হবেন কি?
১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ১১২টি দেশ সফর করে, প্রায় ১০ লক্ষ মাইল অতিক্রম করে রেকর্ড গড়েছেন হিলারি ক্লিন্টন৷ কিন্তু ক্ষমতা থেকে সরে গিয়েও মোটেই অবসরের কথা ভাবছেন না তিনি৷ এমনকি প্রাক্তন মন্ত্রী হিসেবে নিজের রেকর্ডই ভাঙতে পারেন তিনি৷ ২০১৩ সাল জুড়ে অ্যামেরিকা তথা গোটা বিশ্ব চষে বেড়াবেন লেকচার দিতে৷ তারপর লম্বা ছুটি৷ তারপর উন্নয়নের ক্ষেত্রে কাজ করবেন স্বামী ও প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের সঙ্গে৷ তাছাড়া ২০০৩ সালে তিনি ‘লিভিং হিস্ট্রি' নামে যে আত্মজীবনী লিখেছিলেন, তার পরবর্তী পর্ব লেখার কাজেও হাত দিতে চান৷ তারপর আসল সিদ্ধান্ত৷ ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবার প্রার্থী হতে চান কি না, হিলারি ক্লিন্টনকে তা স্থির করতে হবে৷ দেশে-বিদেশে তাঁকে ঘিরে প্রত্যাশা কম নয়৷ কেউ পারলে হিলারিই অ্যামেরিকার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হতে পারেন – এমন বিশ্বাস অ্যামেরিকার অনেক মানুষের মধ্যেই রয়েছে৷
তবে হিলারি ক্লিন্টনের স্বাস্থ্য নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা দেখা দিচ্ছে৷ পেটে ভাইরাস নিয়ে ইদানিং বেশ ভুগেছেন তিনি৷ এমনকি হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়েছিল৷ তারপর ডাক্তাররা তাঁর মস্তিষ্কে ‘ব্লাড ক্লট' বা জমাট রক্ত খুঁজে পান৷ ফলে আগামী কয়েক বছর তিনি কতটা সুস্থ থাকেন তার উপর নির্ভর করছে তিনি আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন কি না৷
আরেকটি ঘটনা তাঁর সফল কার্যকালের উপর কিছুটা কালো ছায়া ফেলেছে৷ গত বছর ১১ই সেপ্টেম্বর লিবিয়ার বেনগাজি শহরে হামলায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের হত্যা সম্পর্কে তদন্তের সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কিছু দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে৷ এমনকি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে হিলারি ক্লিন্টন দেশকে এ বিষয়ে ভুল তথ্য দিয়েছেন, এমন অভিযোগও উঠেছে৷ পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে, নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে সেটা করা হয়েছে, তা নিয়ে অবশ্য বিভ্রান্তি রয়েছে৷
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে হিলারি ক্লিন্টনকে কীভাবে মনে রাখবে অ্যামেরিকা তথা গোটা বিশ্ব৷ স্বামী বিল ক্লিন্টনের ছায়া থেকে তিনি নিজেকে দূরে রাখতে পেরেছেন৷ তাঁর আমলে অ্যামেরিকা ইরাক ও আফগানিস্তানে সামরিক তৎপরতা কমিয়ে দিয়েছে৷ কেউ বলছেন, আলাদা করে কোনো বিশেষ সাফল্যের জন্য ইতিহাস তাঁকে মনে রাখবে না বটে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে তাঁর উপস্থিতি বিশ্বের অনেক প্রান্তে ছাপ রেখেছে বৈকি৷ কঠিন পরিশ্রম করতে তিনি পিছপা হন নি কখনো৷ পেশিশক্তি নয়, অ্যামেরিকার ‘সফট পাওয়ার' দিয়েই বিদেশে দেশের স্বার্থ বজায় রাখার চেষ্টা করে গেছেন হিলারি ক্লিন্টন৷
এসবি/ডিজি (এএফপি, এপি)