ন্যাটো সম্মেলন
২১ মে ২০১২সোমবার ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে আলোচনার মূল বিষয় আফগানিস্তান থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে সেনা প্রত্যাহার৷ ৩০টি দেশের নেতারা শিকাগোয় মিলিত হয়েছেন এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে৷
সম্মেলন শুরু হওয়ার তিন সপ্তাহ আগে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এক আকস্মিক সফরে আফগানিস্তান যান৷ সেখানে প্রায় এক লক্ষ তিরিশ হাজার বিদেশি সেনা অবস্থান করছে, তাদের সঙ্গে দেখা করেন, কথা বলেন৷ কাবুলে প্রেসিডেন্ট কারজাই-এর সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ওবামা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা করেন৷
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির উপস্থিতি শেষ পর্যন্ত আশ্বাস্ত করেছে ন্যাটোর সদস্য দেশগুলিকে৷ পাকিস্তান ন্যাটো সেনাদের সরঞ্জাম এবং রসদ সরবরাহের পথ বন্ধ করে দিয়েছিল৷ শেষ পর্যন্ত তা আবার খুলে দেয়া হয়েছে৷
তবে ফ্রান্সের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ জানিয়েছেন, ফরাসি সেনারা নির্ধারিত সময়ের এক বছর আগেই দেশে ফিরে আসবে৷ এই ঘোষণায় কিছুটা চিন্তিত হয়ে পড়ে ন্যাটোর অন্যান্য সদস্যরা৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল জানান, ‘‘একসঙ্গে সব দেশ এগিয়ে গেছে এবং এক সঙ্গেই সব দেশে সরে আসবে৷'' জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, আফগানিস্তান থেকে বেরিয়ে আসার এক প্রতিযোগিতায় মেতেছে দেশগুলো৷
এ পর্যন্ত ন্যাটোর প্রায় তিন হাজার সেনা প্রাণ হারিয়েছে, তা নিয়েও সম্মেলনে আলোচনা করা হয়৷ এছাড়া হাজার হাজার আফগান নাগরিকের মারা যাওয়ার প্রসঙ্গও তোলা হয়৷ আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই জানিয়েছেন, আফগানিস্তান আর কোন দেশের বোঝা হয়ে থাকতে চায় না৷ আফগানিস্তানের সেনারা তাদের দেশের দায়িত্ব বুঝে নিয়ে চায়৷
সম্মেলনে বাজেট নিয়েও কথা হয়৷ প্রেসিডেন্ট ওবামা জানিয়েছেন, সেনা প্রত্যাহারের পরও প্রতি বছর আফগান সেনাদের পেছনে চার বিলিয়ন ডলার খরচ করা হবে৷ ন্যাটোর মহাসচিব আন্ডার্স ফগ রাসমুসেন জানান, ‘‘২০১৪ সালের শেষে আফগান সেনারা যখন পুরোপুরি দায়িত্ব বুঝে নিতে সক্ষম হবে, তখনই আমাদের মিশন শেষ হবে কিন্তু তাই বলে আমরা পুরোপুরি আফগানিস্তান থেকে বের হয়ে আসবো না৷''
ওয়াশিংটন ২০১০-২০১১ সালে প্রায় কুড়ি বিলিয়ন ডলারেরও বেশি খরচ করেছে৷ এর বড় একটি অংশ ব্যয় হয়েছে আফগান সেনা এবং পুলিশদের প্রশিক্ষণের পেছনে৷
তবে অনেক আফগান সেনা মনে করছে যে ২০১৪ সালে বিদেশি সেনাদের চলে যাওয়া ঠিক হবে না৷ কারণ তারা এখনো প্রস্তুত নয়৷ বিদেশি সেনাদের আরো কিছুদিন আফগানিস্তানে থাকা উচিত৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার (এপি, এএফপি, রয়টার্স)
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন