ন্যাটোয় যোগ দিতে ফিনল্যান্ডের আরো একধাপ
১৩ মে ২০২২ফিনল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার স্টাব সম্প্রতি ডিডাব্লিউকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, ফিনল্যান্ডের মানুষ ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার বিষয়ে কতটা উদগ্রীব। রাশিয়ার ভুল নীতির কারণেই এমনটা ঘটেছে বলে তিনি দাবি করেছেন। বস্তুত, বৃহস্পতিবারই ফিনল্যান্ডের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, ফিনল্যান্ড দ্রুত ন্যাটোয় যোগ দিতে চায়, তারা আর 'বিলম্ব' করতে চায় না। ফিনল্যান্ডের পার্লামেন্টও এবিষয়ে তাদের সবুজ সংকেত দিয়েছে। আগামী সপ্তাহে এবিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাশ হয়ে যাওয়ার কথা।
স্টাব দীর্ঘদিন ধরেই ফিনল্যান্ডের ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার পক্ষে। ডিডাব্লিউকে তিনি জানিয়েছেন, ফিনল্যান্ডের জনগণ ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার বিষয়ে এতটা প্রস্তুত ছিলেন না। তারা পশ্চিম এবং রাশিয়ার সঙ্গে ভারসাম্যের নীতি নিয়ে চলার পক্ষপাতী ছিলেন। সে কারণেই গোটা ঠান্ডা লড়াই পর্বে ফিনল্যান্ডে নিরপেক্ষ ভারসাম্যের নীতি নিয়ে চলেছিল। পরবর্তী সময়েও তারা সেই পথই অবলম্বন করতে চেয়েছিল। কিন্তু রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পরে সাধারণ মানুষের মানসিকতা বদলে যায়। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে ৫০ শতাংশ মানুষ ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার পক্ষে অভিমত দেন। এখন দেশের ৭৫ শতাংশ মানুষ ন্যাটোয় যোগ দিতে চান এবং চান ফিনল্যান্ড দ্রুত সেই পদক্ষেপ নিক।
রাশিয়ার সঙ্গে প্রায় ১৩০০ কিলোমিটারের সীমান্ত আছে ফিনল্যান্ডের। ফলে ফিনল্যান্ড ন্যাটোয় যোগ দিলে রাশিয়া তা মোটেই সহজভাবে নেবে না। এবিষয়ে তারা ইতিমধ্যেই বেশকিছু হুমকি দিয়ে রেখেছে। ফিনল্যান্ড ন্যাটোয় যোগ দিলে বাল্টিক অঞ্চলে পরমাণু অস্ত্র মজুত করা হবে বলেও রাশিয়া হুমকি দিয়েছিল। স্টাব বলেছেন, এটি একটি ভুয়া খবর। রাশিয়া আগেই কালিনিনগ্রাদে পরমাণু মিসাইল মজুত করে রেখেছে। ফলে নতুন করে তাদের হুমকির কোনো অর্থ নেই।
তার বক্তব্য, ফিনল্যান্ড ন্যাটোয় যোগ দিলে নর্ডিক অঞ্চলে এবং বাল্টিক অঞ্চলে ন্যাটোর শক্তি অনেকটা বৃদ্ধি পাবে। তাদের সেনা অত্যন্ত শক্তিশালী বলে দাবি করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। স্টাবের দাবি, রাশিয়ার আক্রমণের প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছে দেশের প্রশাসন এবং সেনা। সমুহ সাইবার হামলার জন্য ফিনল্যান্ড তৈরি।
রাশিয়ারপররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ফিনল্যান্ড ন্যাটোয় যোগ দিলে তারা সেনা অভিযান চালাতে বাধ্য হবেন। বস্তুত, ইউক্রেনের ক্ষেত্রেও তারা একই কথা বলেছিল। ফিনল্যান্ড এই হুমকিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না বলেই জানিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
ফিনল্যান্ডের পাশাপাশি সুইডেনও ন্যাটোয় যোগ দিতে চাইছে। এখন দেখার ন্যাটো এবিষয়ে শেষপর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয়। পশ্চিমা দেশগুলি নর্ডিক এবং বাল্টিক সীমান্তে শক্তিবৃদ্ধি করতে চায় বলেই কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, ডিডাব্লিউ)