1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নোবেল জয়ের এক বছর পরও কারাবন্দি লিউ

৮ অক্টোবর ২০১১

আট অক্টোবর৷ ২০১০ সালের এই দিনে শান্তিতে নোবেল জয় করেন লিউ শিয়াওবো৷ নরওয়ের নোবেল কমিটি যখন তাঁর নাম ঘোষণা করে, তখন শিয়াওবো কারাগারে ছিলেন৷ নোবেল জয়ের এক বছর পর এখনো তিনি কারাগারেই আছেন৷

https://p.dw.com/p/12nwi
ছবিতেও কারাবন্দি লিউ শিয়াওবোছবি: AP

এক বছর আগে মানবাধিকার কর্মী এবং লেখক লিউ শিয়াওবোকে নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদানের ঘোষণা আলোড়ন সৃষ্টি করে৷ নরওয়ে এবং চীনের মধ্যকার সম্পর্কে ফাটল সৃষ্টি করে এই ঘোষণা৷ কিন্তু এই নোবেল পুরস্কার থেকে শিয়াওবো, তাঁর পরিবার কিংবা চীনের পুরো সমাজ কী পেল? এক বছর পরও বলতে হচ্ছে, প্রাপ্তি খুব সামান্যই৷

চীনে গণতান্ত্রিক সংস্কার আন্দোলনের দাবিতে যাঁরা চার্টার-এইট ইশতেহার রচনা করেন, ৫৫ বছর বয়স্ক লিউ ছিলেন তাঁদেরই একজন৷ চীনের শাসকদের কাছে এটা এক অপরাধ৷ তাই, এগারো বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন লিউ, ২০০৯ সালের ডিসেম্বর থেকে৷ ২০১০ সালে কারাবন্দি লিউকে যখন নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদান করা হয়, তখন বেশ চটে যায় চীন৷ নোবেল কমিটির এই সিদ্ধান্তকে সেদেশ স্পষ্ট উস্কানি, চীনের আইনি ব্যবস্থাকে আক্রমণ এবং  চীনের মানুষের অনুভূতির প্রতি আঘাত হিসেবে গণ্য করে৷ তখন থেকে লিউ শিয়াওবোর বন্দিজীবনকে আরো কঠিন করে তোলা হয়৷

NO FLASH Norwegen China Friedensnobelpreis Verleihung an Liu Xiaobo in Oslo Thorbjörn Jagland
সশরীরে নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করতে পারেন নি লিউ শিয়াওবোছবি: AP

নোবেল জয়ের পর হাতেগোনা কয়েকবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পেয়েছেন লিউ শিয়াওবো৷ গত ১৮ সেপ্টেম্বর বাবার অন্ত্যোষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে অল্প সময়ের জন্য কারাগারের বাইরে আসার অনুমতি পান তিনি৷ লিউ'র ভাই লিউ শিয়াওশুয়ান ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি'কে টেলিফোনে বলেন, তাঁর জন্য প্যারোলে মুক্তির আবেদন করা হয়েছিল৷ তবে এব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি তনি৷ লিউ'র পুরো পরিবারই খুব সতর্কতার সঙ্গে অন্যদের যোগাযোগ করেন৷ নোবেল জয়ের ঘোষণার পরপরই তাঁর স্ত্রী, লিউ শিয়াকে গৃহবন্দি করে চীন৷ পুরো পরিবারের ভাগ্য সম্পর্কে এখনো খুব কম তথ্যই প্রকাশ পেয়েছে৷

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. ইয়াং জিয়ানলি ২০১০ সালের ডিসেম্বরে অসলোতে শান্তি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন৷ চীন সরকারের প্রতিবন্ধকতার কারণে লিউ শিয়াওবো কিংবা তাঁর স্ত্রী লিউ শিয়া, কেউই সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি৷ লিউ'র চেয়ারটি তাই খালি রেখেই অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়৷ ড. ইয়াং ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘লিউ'র পরিবার নিঃসন্দেহে প্রচণ্ড চাপের মুখে আছেন৷ সাত মাস আগে লিউ শিয়া ইন্টারনেটে সর্বশেষ একটি বার্তা প্রকাশ করেছিলেন৷ শিয়াওবো এবং তাঁর স্ত্রী যে ভোগান্তি সহ্য করছেন, সেটা আমাদের মত তাঁর বন্ধুদেরকে খুব কষ্ট দিচ্ছে''৷

Norwegen China Friedensnobelpreis Verleihung an Liu Xiaobo in Oslo Flash-Galerie
শিয়াওবোকে ছাড়াই নোবেল পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানছবি: AP

ইয়াং জিয়ানলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চীনের মানবাধিকার বিষয়ক একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছেন৷ নাম ‘সিটিজেন পাওয়ার'৷ চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কাছে দুটি অনুরোধ করেছেন ইয়াং৷ শিয়াওবোকে মুক্তি এবং তাঁর স্ত্রীকে গৃহবন্দিত্ব থেকে রেহাই দিতে চীনের উপর চাপ সৃষ্টি করতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি৷ ইয়াং উল্লেখ করেছেন, চীন হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র দেশ যে কিনা একজন শান্তিতে নোবেল জয়ীকে কারারুদ্ধ করে রেখেছে৷

বলাবাহুল্য, শিয়াওবোকে নোবেল প্রদান এবং পরবর্তীতে আরব বিপ্লবের পর থেকে ভিন্নমতাবলম্বীদের উপর দমনপীড়ন বাড়িয়ে দিয়েছে বেইজিং৷ চীনের অনেক মানবাধিকার কর্মী, বুদ্ধিজীবী দাবি করেছেন যে, বিভিন্নভাবে তাদের উপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে৷ অনেককে নির্মমভাবে প্রহার করা হয়েছে, অনেককে গুম করা হয়েছে৷ চীনের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী আই ওয়েওয়ে'কেও গ্রেপ্তার করেছিল সেদেশ৷ পরে অবশ্য তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান