নির্বাচন পরবর্তী মিশ্র প্রতিক্রিয়া
৩১ ডিসেম্বর ২০০৮নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে নীল নকশার নির্বাচন দাবি করে মঙ্গলবার মধ্যরাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, যে নীলনকশার কথা আমরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছিলাম, এই নির্বাচনের ফলাফলে সেই নীল নকশা বাস্তবে পরিনত হতে দেখা গেল৷ পরাজিত নেতাদের তালিকায় এমন নেতৃবৃন্দ রয়েছেন, যারা বারবার বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসছিলেন৷
খালেদা জিয়া বলেন, একটি বিষয় লক্ষণীয় যে দুপুর ১২টার মধ্যে ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ ভোট পড়ে৷ তারপর বেশিরভাগ ভোটকেন্দ্রগুলো ভোটার শুন্য ছিল৷ কিন্তু গণনায় দেখা যায় যে, ঐ ভোটকেন্দ্রে প্রায় ৯০ শতাংশ ভোট গ্রহণ করা হয়৷
খালেদা জিয়া দাবি করেন, ভোট মহাজালিয়াতির এমন দৃষ্টান্ত অতিতে নেই৷ এই প্রহসনের নির্বাচন বিএনপির কাছে গ্রহণযোগ্য নয়৷
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ এস এম শাহাজাহান ডয়চে ভেলেকে বলেন, জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ না করলে বিজয় ধরে রাখা সম্ভব হয়না৷ তাই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোটকে জনগণের প্রত্যাশা পুরণ করতে হবে৷ নয়ত জনগণ এর জবাব দিতেও দেরি করবে না৷
একই ধরনের মন্তব্য করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান৷ তিনি বলেন, সবার মতামত নিয়ে সরকার পরিচালনা করতে হবে, শুনতে হবে জনগণের কথা এবং তাদের আশা-আকাঙ্খার বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে৷
ঢাকার দৈনিক আমাদের সময়-এর সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, ত্রিশ-বত্রিশ জনের একটা বিরোধী দল, তাদের পক্ষে সংসদীয় কমিটিগুলোতে একজন করে প্রতিনিধি দেয়াও দূরূহ হয়ে যাবে৷ এটা বিজয়ী দলের মধ্যে একধরণের ওদ্ধত্য নিয়ে আসে কিনা, আমাদের গণতান্ত্রিক চিন্তা চেতনায় নতুন কোন সংকট তৈরি করে কিনা সেটা এখন দেখা বিষয়৷
অবশ্য ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিআই নেতা আনিসুল হক বলেন, যিনি বিরোধী দলে থাকবেন, তিনি যেন এই মতামতকে খুবই খুশি মনে মেনে নেন৷ আর যারা সরকারে থাকবেন তাদের চারপাশে যেন খুব তারাতারি কাঁচের দেয়াল না উঠে যায়৷ মানুষের সঙ্গে যেন সম্পৃক্ততা থাকে এবং সবাইকে নিয়ে আইনের শাসন করেন- সেটিই আমাদের প্রত্যাশা৷
প্রসঙ্গত, ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ ব্যবধানে বিজয়ী হয় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট৷ বেসরকারী ফলাফলে ২৯৯ টি আসনের মধ্যে মহাজোট জিতেছে ২৬২ টি আসনে৷ চারদলীয় জোট পয়েছে ৩২ টি আসন এবং অন্যান্য দল ৫টি৷