‘নির্বাচনকালীন সরকার' নিয়ে আলোচনা চায় বিএনপি
১৩ জানুয়ারি ২০১৮শনিবার ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি৷
এর আগে, শুক্রবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ সেখানে তিনি বরাবরের মতোই আলোচনার বিষয়টি নাকোচ করে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের কথা বলেছেন৷
তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে আলোচনার সব পথ রুদ্ধ করে দিয়েছেন৷ যদিও একদিন পর শনিবার তিনি আলোচনার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী যে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের কথা বলেছেন, সে বিষয়ে আলোচনা করতে সংলাপ ডাকতে পারেন৷
ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল বলেন, ‘‘আমরা মনে করি, সরকার যদি সাধারণ মানুষের কথা ভাবে তাহলে তাদের আলোচনার পথে আসতেই হবে৷ এর কোনো বিকল্প নেই৷''
যদি আওয়ামী লীগ আলোচনা না করে তাহলে বিএনপি কি করবে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমরা এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেইনি৷'' তবে একটি অন্তবর্তী সরকারের রূপরেখা দেয়ার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি৷
‘‘সময় হলেই আমরা রূপরেখা দেব৷ তবে আমরা মনে করি নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ নিতে পারে সরকার৷ আমরা সে আহ্বানই জানাই৷''
বর্তমান সরকারের এ মেয়াদের চার বছর পূর্তিতে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে শেখ হাসিনা একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ‘নির্বাচনকালীন সরকার' গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাতে সব দলের অংশগ্রহণের আশা প্রকাশ করেন৷
এদিকে, বিশ্লেষকদের মত, দুইদলের অনমনীয়তার কারণে সব দলের অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে কি-না তা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে৷
রাজনীতি বিশ্লেষক সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার মনে করেন, এবারো একটি একতরফা নির্বাচনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে৷
‘‘এবার প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে যে কথা বলেছেন, ২০০৬ সালেও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভাষণে খালেদা জিয়াও একই কথা বলেছিলেন৷ ২০১৩ সালেও শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে একই কথা বলেছিলেন৷ তাঁরা বলেছিলেন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে৷’’ ডয়চে ভেলেকে বলছিলেন তিনি৷
‘‘এতে দেখা গেছে, ২০০৭ সালে নির্বাচন হলো না, অন্য সরকার এলো৷ ২০১৪ সালেও একতরফা নির্বাচন হল, যা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়৷ এবারও প্রধানমন্ত্রী একই কথা বললেন৷ যার ফলে যদি একতরফা একটা নির্বাচন হয়ে যায়, তা আমাদের বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাবে৷''
একই ধরনের ভাবনা সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খানেরও৷
ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে অনেক কিছুই পরিষ্কার হয়নি৷ নির্বাচনকালীন এই পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দেয়া হবে কি না, না এই পার্লামেন্টই থাকবে তা পরিষ্কার নয়৷ তাই কেমন নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সে ব্যাপারে আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না৷''