নিরাপদ খাদ্য মেলা: কালাই রুটি, কাঁঠালের আইসক্রিম ও অন্যান্য
কালাই রুটি খেয়েছেন কখনও? জানেন কি কাঁঠাল দিয়েও আইসক্রিম তৈরি হয়? বাংলাদেশে নিরাপাদ খাদ্য মেলায় ছিল এমন নানা খাবারের পসরা৷
নিরাপদ খাদ্যের ধারণা
৮ ফেব্রুয়ারি মেলার উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার৷ জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি খাদ্য শিল্পের উদ্যোক্তা তৈরি, জিআই পণ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের পণ্যের ব্র্যান্ডিং, পরিচ্ছন্নতা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রশিক্ষণসহ নাগরিকদের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই আয়োজন করে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ৷
খাবারের মান পরীক্ষা
বাংলাদেশে খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা সরকারি প্রতিষ্ঠানটি ভ্রাম্যমাণ টেস্টিং ল্যাবের ব্যবস্থা রেখেছিল মেলায়৷ দর্শনার্থীরা বিনা খরচে বিভিন্ন খাদ্যের মান যাচাই করে দেখার সুযোগ পেয়েছেন সেখানে৷
পাঁচ তারকা হোটেলের খাবার
মেলায় আন্তর্জাতিক ফুড চেইন থেকে শুরু করে দেশীয় পাঁচ তারকা হোটেলও অংশ নিয়েছে৷ নিজেদের সুস্বাদু খাবারের সঙ্গে তারা দর্শনার্থীদের পরিচিত করেছে৷
সতেজ সবজি
ঢাকার আগারগাঁওয়ে আয়োজিত এই মেলায় অংশ নিয়েছে সুপারমার্কেট চেইনগুলোও৷ বিক্রয় করা খাবারের মান নিয়ে দর্শকদের বিভিন্ন তথ্য জানিয়েছে তারা৷ একটি স্টলে এমন সতেজ শাকসবজির পসরা সাজানো ছিল৷ তবে বাজারের তুলনায় মেলায় এসব পণ্যের দাম ছিল বেশি৷
মিষ্টান্নের পসরা
নামকরা ও ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি গত কয়েক বছরে খাদ্য প্রস্তুতকারী বিভিন্ন ব্র্যান্ড মিষ্টির বাজারে যুক্ত হয়েছে৷ তেমনই একটি প্রতিষ্ঠানের স্টলে ছিল এমন মিষ্টান্নের পসরা৷
কালাই রুটি
মেলায় একটি স্টলে ছিল রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী কালাই রুটি ও হাঁসের মাংস৷ ৫০ টাকায় কালাই রুটি ও ২৫০ টাকায় হাঁসের মাংসের স্বাদ নেয়ার সুযোগ পেয়েছেন আগতরা৷
মাশরুমের খাবার
মাশরুম দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাদ্যপণ্য বিক্রি করেন জমজম মাশরুম ফুডের উদ্যোক্তা মরিয়ম আক্তার৷ তিনি বলেন, ‘‘২০০৩ সাল থেকে আমি এ ব্যবসা করছি৷ ভোক্তাদের কাছে নিরাপদ ও সুস্বাদু খাবার পৌঁছে দিতে মাশরুমের রোল, লাড্ডু, ফ্রাই, কেক, মুখপাকন পিঠা নিয়ে হাজির হয়েছি এ মেলায়৷’’
কাঁঠালের আইসক্রিম
কাঁঠালের আইসক্রিম খেয়েছেন কখনও? মেলায় এমন সব ব্যতিক্রমী খাবারও ছিল অনেক৷ ৮০ গ্রামের কাঁঠাল ও গাজরের আইসক্রিমের দাম ছিল ১২০ টাকা৷
বেড়ানো ও খাওয়া
ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে অনেকেই ঘুরতে এসেছেন মেলায়৷ দেখার পাশাপাশি চেখেও দেখেছেন তারা৷ স্টলগুলোর সামনে ছিল খাওয়া-দাওয়ার এমন ব্যবস্থা৷
মূল্য ছাড়
বিভিন্ন কোম্পানি তাদের খাবারের প্রচারের জন্য মূল্যছাড় দিয়েছিল মেলায়৷ তবে শেষ দিনে ছাড়ের হার ছিল বাকি দুইদিনের চেয়ে বেশি৷
রপ্তানি পণ্য
দেশে নিরাপদ খাদ্য নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও নিয়ম মেনে বিশ্বে ঠিকই শত কোটি ডলারের কৃষি পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ৷ এক্ষেত্রে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন স্টার্টআপও৷ যেমন ‘ফুড হাট’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তারা শাকসবজি, ফল, মশলা রপ্তানি করছে৷
সি-ফুড
মেলায় কক্সবাজারের একটি রেস্টুরেন্টে ছিল কাঁকড়া, গলদা চিংড়ি, রূপচাঁদাসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ৷
ভোক্তাদের ভাবনা
নিরাপদ খাদ্য মেলায় স্ত্রী-কন্যাসহ ঘুরতে এসেছেন প্রকৌশলী আবদুর রহমান৷ তিনি বলেন, ‘‘শুনেছি এখানকার প্রতিটি স্টলের খাবারের মান যাচাই করছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ৷ তবে এ মান যেন এখানেই সীমাবদ্ধ না থেকে মেলার বাইরেও বজায় থাকে৷ তাহলেই সাধারণ মানুষ এর উপকারিতা পাবে৷’’
উপচে পড়া ভিড়
৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া মেলার প্রথম দিনে তেমনে সাড়া দেখা না গেলেও, পরের দুইদিনে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল৷
প্রত্যাশা পূরণ
নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এই মেলার আয়োজন করা হয়, যার মাধ্যমে ছোট থেকে বড় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের খাদ্যের সম্ভারের সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন মানুষ৷ মেলার আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছে, দর্শনার্থীদের কাছ থেকে তারা ভালো সাড়া পেয়েছেন৷