‘পদ্মা সেতু গড়া কঠিন’
১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বৃহস্পতিবার বলেছেন, শর্ত পূরণ না হলে পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন হবে না৷ বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত প্রকল্পটি নিয়ে জটিলতা কাটাতে সরাসরি বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সংলাপের আবেদন জানানোর প্রেক্ষাপটে এমন মন্তব্য শোনা গেল৷ এই অবস্থায় এই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কী? বিষয়টির বিশ্লেষণ করেছেন সিঙ্গাপুরস্থ ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. স্বপন আদনান৷
অধ্যাপক আদনানের মতে, বাংলাদেশের সামনে সীমিত পথ খোলা আছে৷ বিশ্ব ব্যাংকের শর্ত সঠিকভাবে মেনে নেওয়ার একটা পথ ছিল৷ যে কোনো কারণেই হোক, বর্তমান সরকার সেটা করতে রাজি নয়৷ এবার প্রশ্ন হলো, বিশ্বব্যাংক কি এ বিষয়ে কোনো ছাড় দিতে পারে? বড় আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের পক্ষে প্রকাশ্যে এমন কিছু করা কঠিন৷ নিয়মকানুন উপেক্ষা করে গোপনে তারা কিছু করবে বলে মনে করেন না অধ্যাপক আদনান৷
এই অবস্থায় সরকারের একজন মন্ত্রী মালয়েশিয়া-ভারত কনসর্টিয়াম বা এ ধরনের যৌথ আন্তর্জাতিক উদ্যোগের সম্ভাবনার কথা বলেছেন বটে, কিন্তু এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজারে সুদের উচ্চ হার বড় সমস্যা হতে পারে৷ বিশ্ব ব্যাংকের সহজ শর্তে ঋণের তুলনায় সেই অর্থায়নের মূল্য হবে অনেক বেশি৷ এই পথে এগোলে দেশের উপর আরও বড় ঋণের বোঝা চাপবে৷
অধ্যাপক আদনান আরও মনে করেন, পুনর্নির্বাচনের আশায় সরকার হয়তো যে কোনো পথে এগিয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রতীকি সূচনা শুরু করার পথে চলতে পারে৷ তবে বাংলাদেশের মানুষ হয়তো এত বোকা না, যে তারা এই অবস্থায় প্রকল্পের বাস্তবায়নের সম্ভাবনায় বিশ্বাস করবে৷
বাংলাদেশের নিজের অর্থায়নে প্রকল্প নিয়ে অগ্রসর হওয়াটা একেবারে অসম্ভব নয়৷ তবে অর্থ সংগ্রহ করা সম্ভব হলেও প্রযুক্তি ও সংগঠনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অত্যন্ত দুর্বল৷ এত বড় মাপের প্রকল্প বাস্তবায়ন করার চ্যালেঞ্জ গ্রহণের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠানের নেই, বললেন অধ্যাপক ড. স্বপন আদনান৷
সাক্ষাৎকার: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম