নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশের অনেক রেকর্ডের জয়
মুমিনুল, লিটন, জয় আর শান্তর দুর্দান্ত ব্যাটিং, মিরাজের অলরাউন্ড পারফর্ম্যান্স এবং ইবাদত, শরিফুল ও তাসকিনের বোলিংয়ে নিউজিল্যান্ডে সত্যিই অনেক রেকর্ডের এক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ৷ ছবিঘরে সেই জয়ের বিস্তারিত...
শুরুতে শরিফুল
মাউন্ট মঙ্গানুইতে নিউজিল্যান্ড শিবিরে প্রথম কাঁপনটা ধরিয়েছিলেন শরিফুল ইসলাম৷ ক্যারিয়ারের মাত্র দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নেমে ৬৯ রানে ৩ উইকেট নেন প্রথম ইনিংসে৷ বাঁ হাতি এই পেসারের দুর্দান্ত বোলিং ছাড়া প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ডকে ৩২৮ রানে গুটিয়ে দেয়া কঠিন হতো৷
মিরাজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স
প্রথম থেকে ম্যাচের শেষ দিন পর্যন্ত যখনই প্রয়োজন কিছু-না-কিছু অবদান রেখেছেন ডান হাতি এই অফ স্পিনার৷ দুই ইনিংস মিলিয়ে (৮৬/৩, ৪৩/১) চার উইকেট এবং ব্যাট হাতে প্রথম ইনিংসে তার ৪৭ রান বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়ে নিঃসন্দেহে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে৷
জয়ের ব্যাটে প্রথম হাসি
তবে বাংলাদেশ প্রথমে বড় স্বপ্নের আস্থা পেয়েছিল প্রথম ইনিংসে সাদমান ইসলাম আর মাহমুদুল হাসান জয়ের উদ্বোধনী জুটিতে৷ সাদমান ২২ রান করে আউট হওয়ায় ৪৩ রানে ভাঙে তাদের জুটি৷ তবে মাত্র দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা জয় আউট হন প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির আশা জাগানো ৭৮ রান করে৷
শান্তর ব্যাটে ভরসা
প্রথম ইনিংসে জয়-শান্তর ১০৪ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটির অবদানের কথাও ভুললে চলবে না৷ শতাধিক রানের জুটিতে শান্তর অবদান ৬৪ রানের৷
অধিনায়কোচিত মুমিনুল
পঞ্চপাণ্ডবের চারজনই্ নেই দলে৷ প্রতিপক্ষ টেস্ট ক্রিকেটের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ড৷ মুশফিকুরের পর দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুমিনুলের কাছে তাই প্রত্যাশা ছিল বেশি৷ মাউন্ট মঙ্গানুইতে হতাশ করেননি মুমিনুল৷ শুধু ব্যাট নয়, বলও কথা বলেছে তার হাতে৷ প্রথম ইনিংসে তার অফ স্পিনে বোকা হয়েছিলেন দুই কিউই ব্যাটসম্যান৷ তারপর ব্যাট হাতে তার ৮৮ রানের ইনিংস কিন্তু পুরো ম্যাচেই বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ৷
লিটনের প্রত্যাশা পূরণ
উইকেটকিপা ব্যাটসম্যানের ভূমিকাটা প্রত্যাশিতভাবেই পালন করেছেন লিটন কুমার দাস৷ দুই ইনিংস মিলিয়ে তার মোট ক্যাচ চারটি৷ একমাত্র সুযোগে তার ব্যাট থেকেও এসেছে চোখ জুড়ানো ৮৬ রান৷
ইবাদতে হতাশার ইতি
টেস্টে সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তান আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছেও দেশের মাটিতে হেরেছে বাংলাদেশ৷ এমন ব্যর্থতা ভোলাতে দরকার ছিল বড় কোনো জয়ের৷ সেই জয়টা যে শেষ পর্যন্ত ইবাদত হোসেনই এনে দিয়েছেন সে বিষয়ে দ্বিমতের সুযোগ খুব কম৷ ক্যারিয়ারের প্রথম ১০ টেস্টে ৮১.৫৪ গড়ে মাত্র ১১ উইকেট ছিল যার ঝুলিতে, দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৯ রানে ৬ উইকেট নেয়া ঝড়ের সুবাদে সেই ইবাদতই মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের ম্যান অব দ্য ম্যাচ৷
তাসকিন, দ্য আনসাং হিরো
দুই ইনিংসেই চমৎকার বোলিং করেছেন তাসকিন আহমেদ৷ প্রথম ইনিংসে ৭৭ রান দিয়ে কোনো উইকেট না পেলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ইবাদত-ঝড়ের ফাঁকেও ৩৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে তিনিই বাংলাদেশের দ্বিতীয় সফলতম বোলার৷ বোলিংয়ের সুযোগ না পাওয়া ইয়াসির আলি রাব্বির ব্যাট থেকে পাওয়া ২৬ রানও বাংলাদেশকে প্রথম ইনিংসে ১৩০ রানের লিড পেতে খুব সহায়তা করেছে৷
অনেক রেকর্ডের জয়
নিউজিল্যান্ডে এর আগে তিন ফর্ম্যাটে ৪৩টি ম্যাচের একটাতেও জিততে পারেনি বাংলাদেশ৷ অন্যদিকে দেশের মাটিতে ২০১৭ সাল থেকে টানা আট সিরিজ জিতেছে কিউইরা৷ শেষ ১৭ টেস্টের একটাতেও হারেনি৷ বাংলাদেশের কাছে হারের ফলে সেই অহঙ্কারগুলো আপাতত শুধুই সুখস্মৃতি৷অন্যদিকে দেশের বাইরে এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ টেস্ট জয়৷ প্রথম বারের মতো রাঙ্কিংয়ের সেরা পাঁচের কোনো দলকে তাদের মাটিতে হারানোকে ইতিহাসের সেরা সাফল্য বলছেন অনেকেই৷