নাগর্নো-কারাবাখ: যুদ্ধে নিহত অন্তত পাঁচ হাজার
২৩ অক্টোবর ২০২০আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়া দুইটি দেশের সঙ্গেই প্রতিদিন যোগাযোগ রাখছেন তিনি। দিনে একাধিকবার ফোনে কথা হচ্ছে দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে। বৃহস্পতিবার একটি টেলিভিশন বিবৃতিতে এ কথা জানান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন। তাঁর বক্তব্য, এই যুদ্ধে কোনো পক্ষকেই সমর্থন করছেন না তিনি। যুদ্ধ যাতে দ্রুত থামে তার জন্য সবরকম প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। এ দিনের বিবৃতিতে পুটিন অ্যামেরিকাকেও রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা আলোচনায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শুক্রবারই অ্যামেরিকার সচিব মাইক পম্পেও-র সঙ্গে আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক হওয়ার কথা। বৃহস্পতিবার তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
নাগর্নো-কারাবাখের স্বাধীন প্রশাসন যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতির একটি হিসেব দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৮৭৪ জন সেনা এবং ৩৭ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে শুধুমাত্র নাগর্নো-কারাবাখে। আজারবাইজান জানিয়েছে, সেখানে ৬১ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে সেনা মৃত্যুর কোনো সংখ্যা জানানো হয়নি। আর্মেনিয়া কিছু দিন আগে জানিয়েছিল, যুদ্ধে হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পুটিন জানিয়েছেন, তাঁর কাছে যা খবর, তাতে অন্তত পাঁচ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। কারণ দুই দেশই যুদ্ধবিরতি মানতে চাইছে না।
বস্তুত, বৃহস্পতিবার পুটিনযখন এ বিষয়ে কথা বলছেন, তখনো দুই দেশের মধ্যে তীব্র যুদ্ধ হয়েছে। আজারবাইজান জানিয়েছে, আর্মেনিয়া তিনটি ব্যালেস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছে আজারি শহর লক্ষ্য করে। অন্যদিকে আর্মেনিয়ার অভিযোগ, মারতুনি শহর এবং সংলগ্ন গ্রামে শেলিং করেছে আজারবাইজান।
পুটিন জানিয়েছেন, এই যুদ্ধে তিনি কোনো পক্ষেই নেই। তাঁর একমাত্র লক্ষ্য দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এ দিন তুরস্কেরও মৃদু সমালোচনা করেছেন পুটিন। বলেছেন, তুরস্ক যে ভাবে আজারবাইজানকে সমর্থন করছেন, তা তিনি সমর্থন করেন না। যদিও একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, এর্দোয়ান তাঁর বন্ধু। এবং তিনি মনে করেন, এর্দোয়ান এ বিষয়ে তাঁর অভিমত বদল করতে পারেন।
চুক্তি অনুযায়ী আর্মেনিয়াকে সামরিক ক্ষেত্রে সাহায্য করার কথা রাশিয়ার। কারণ, দুই দেশের মধ্যে এই বিষয়ে নির্দিষ্ট চুক্তি রয়েছে। কিন্তু পুটিনের বক্তব্য, এই যুদ্ধে কোনো পক্ষকে সাহায্য করলে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে যাবে। ফলে দুই পক্ষকে শান্তির পথে নিয়ে আসতেই হবে। এবং তার জন্য রাশিয়া সবরকম প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী অবশ্য বুধবারই জানিয়ে দিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে শান্তি প্রস্তাব তাঁদের পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব নয়। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার আজারবাইজান জানিয়েছে, আজারি ফৌজ নাগর্নো-কারাবাখের বিস্তীর্ণ এলাকা নিজেদের কব্জায় আনতে পেরেছে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স)