নববর্ষের ‘উপহার’
২ জানুয়ারি ২০১৪বছরের প্রথম দিনে সবাই যদি নিজেকে একেবারে শুধরে নিত, পৃথিবীটা তাহলে হয়ত বেহেশতের মতো হয়ে যেত, তাইনা? গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া জাম্মেহ নতুন বছরের প্রথম দিনে যেন ইঙ্গিতে নিজেদের শুধরে নেয়ার সুযোগই দিয়েছেন স্ট্যান্ডার্ড নিউজপেপার আর তেরাঙ্গা এফএম রেডিওকে৷
২০০৯ সালে যাত্রা শুরুর পরই গাম্বিয়ার জনগণের কাছে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল তেরাঙ্গা৷ আফ্রিকার ওই দেশটির অনেক নিরক্ষর মানুষই সংবাদপত্র পড়তে পারেন না৷ তেরাঙ্গা বিশেষত সেই মানুষদের কথা ভেবেই স্থানীয় সংবাদপত্রগুলোর খবর রেডিওতে প্রচার করতো৷ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছিল৷ বাড়ছিল সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ৷ অন্যদিকে স্ট্যান্ডার্ড নিউজপেপার সবসময় সরকারের সমালোচনা করতো৷ ফলে তেরাঙ্গা এবং স্ট্যান্ডার্ড নিউজপেপারকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় সরকার৷ ২০১২ সালের আগস্ট মাসে ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (এনআইএ)-র কর্মর্তারা তেরাঙ্গা বেতার কেন্দ্রে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করার নির্দেশ দেয়৷ পরের মাসে একইভাবে বন্ধ হয়ে যায় দৈনিক স্ট্যান্ডার্ড নিউজপেপার৷
তবে মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া জাম্মেহর কার্যালয়ের এক বিবৃতি চমকে দিয়েছে সবাইকে৷ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘তেরাঙ্গা এবং স্ট্যান্ডার্ড নিউজপেপারের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলো৷ সাধারণ মানুষকে নববর্ষের উপহার হিসেবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের এই খবরটি দিতে পেরে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় খুব আনন্দিত৷''
তবে বিবৃতির শেষে সংবাদপত্র এবং বেতার কেন্দ্রটির উদ্দেশ্যে একটি সতর্কবার্তাও ছিল৷ সেখানে লেখা হয়েছে, ‘‘কেউ কেউ বলেন, দেশটা নাকি সাংবাদিকদের জন্য দোজখের মতো৷ আসলে কিন্তু সাংবাদিকদের স্বাধীনতা এবং দায়িত্ব এ দেশেও আছে৷ সাংবাদিক হলেই যে কেউ খুন করতে পারবে, এটা তো ঠিক নয়৷ কারো চরিত্র হনন করা হলে সেটা কখনোই মেনে নেয়া হবে না৷''
একদিকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা, অন্যদিকে হুমকি – তেরাঙ্গা আর স্ট্যান্ডার্ড নিউজপেপারের কর্মীরা প্রেসিডেন্টের ‘উপহার' পেয়ে যতটা খুশি, ঠিক ততটাই আতঙ্কিত৷
এসিবি/ডিজি (এএফপি, এপি)